পিংক ক্যাবেজে বাজিমাৎ আমিন উদ্দীনের
জাহিদ হাসান, যশোরঃ
যশোরে মানুষের কাছে গোলাপি বাঁধাকপি একেবারেই নতুন সবজি। নতুন এ সবজিটি যশোরের প্রথমবারের মতো চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন কৃষক আমিন উদ্দীন। যশোরে সবজজির রাজধানীক্ষেত সদর উপজেলার চুড়ামণকাটি পোলতাডাঙ্গা মাঠে তার এ সবজির বিপ্লব ঘটিয়েছেন। দেশীয়ও বাঁধাকপির পাতার মতো সবুজ হলেও সবজির রঙ বেগুনি খেতে সুস্বাদু সবজিটি চাষে এলাকায় জনপ্রিয়তা পেয়েছেন তিনি। প্রথমে পরীক্ষামূলক চাষ করলেও তার সফলতা দেখে নিজ গ্রামের আরো ১০ থেকে ১২ জন কৃষক এই চাষে আগ্রহী হয়েছেন।
জানা গেছে, গতমৌসুমে ভারতের কলকাতা থেকে তিন শ’ টাকা দিয়ে এক প্যাকেট পিংক ক্যাবেজ সবজির বীজ নিয়ে আসেন কৃষক আমিন। ঝুঁকি নিয়েও জেলায় প্রথমবারের মতো তিনি এই চাষে উদ্বুদ্ধ হয়। দেশীয় বাঁধাকপির সাথে কয়েকটি পিংক ক্যাবেজ সবজির বীজ রোপন করে কয়েক মাস পরেই ফলন দেখতে পান। অন্য বাঁধাকপির মতো বীজ রোপনের ৪৫ দিনে মধ্যে গাছে ফল আসা এবং ৬০ থেকে ৭০ দিনের মধ্যে সবজিটি বাজারে বিক্রির উপযোগী হয়।
আমিন উদ্দীন জানান, শুরুটা পরিক্ষামূলক হলেও তিনি এখন অন্যান্য সবজির মতো বাণিজ্যিক ভাবে চাষ করছেন। গত মৌসুমে ৪টি গাছ রোপন করলেও তিনি এই মৌসুমে প্রথমবারের মতো দুই বিঘা জমিতে পিংক ক্যাবেজ চাষ করেছেন। তার জমিতে উৎপাদন খরচ হয়েছে প্রায় ৩৫ হাজার টাকা। ইতিমধ্যে তিনি ৪৫ হাজার টাকার এই সবজি বিক্রি করেছেন। জমিতে যে সবজি আছে সেগুলো বিক্রি করতে পারলে আরো দেড় লক্ষ টাকার পিংক ক্যাবেজ সবজি বিক্রি করতে পারবেন।
তিনি আরো জানান, পিংক ক্যাবেজ বাজারে পাইকারি মূল্যে ২২ টাকা। এই সবজির এতো চাহিদা এবং গুণাগুণ কোন দিন বাজারে নিয়ে বিক্রি করা লাগেনি। যশোর জেলা সহ আশেপাশের ব্যবসায়ীরা পাইকারী মূল্যে ক্ষেত থেকে এই সবজি নিয়মিত নিয়ে যাচ্ছে। গোলাপি রঙের এই সবজি চাষ করে তার মতো অনেক চাষি আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।
যশোর চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের কৃষি কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম বলেন, নতুন জাতের পিংক ক্যাবেজ বাঁধাকপি এই এলাকায় ৪ হেক্টর জমিতে প্রথমবারের মতো চাষ হয়েছে। তবে গত মৌসুমে আমিন আলী পরীক্ষামূলক উৎপাদন করে অনেক চাষির নজর কেড়েছিলেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর তাদের কে নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছে। আগামীতে চাষের পরিমাণ আরো বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ পরিচালক সুশান্ত কুমার তরফদার জানান, যশোর জেলার আট উপজেলায় ৮০ হেক্টর জমিতে বাঁধাকপি চাষ হয়েছে। তবে জেলায় নতুন ভাবে পিংক ক্যাবেজ চাষ শুরু করেছে। সাধারণ বাঁধা কপির চেয়ে এই সবজিতে বেশি দাম পাচ্ছেন। আবার ওজনেও বেশি। তাছাড়া এই সবজিতে প্রচুর ভিটামিন, ক্যানসার প্রতিরোধ, প্রচুর পরিমান খনিজ, অ্যন্টি অক্সিডেন্ট, রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ, ত্বক সুন্দর রাখে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কৃষকদের এই নতুন অর্থকরি সবজি চাষে আরো বৃদ্ধি করতে উদ্বুদ্ধ করছে।