পুলিশ বাড়ি আসে অন্ন দেয় পেত্তম দেকলাম!
জাহিদ হাসান, যশোরঃ
তিন ধরে ঘরে কোন খাবার নেই। চরম খাবারের সংকটে সুশান্ত রায় ও তার পরিবার। প্রতিবেশীর থেকে চাল ধার করে এনে সেদিন দুপুরটা তাদের চলে। হাড়ির তলায় থাকা কয়েক মুঠো ভাত রাতে ভাগাভাগি করে খায় তার মা অনিতা রায়, একমাত্র সন্তান রুদ্র ও ছোট বোন পারুল। অন্যদিকে না খেয়ে ও সকালের কথা চিন্তা করে ঘুম নেই সুশান্ত ও তার স্ত্রী অঞ্জলীর।
পরিবারের ক্ষুদার জ্বালা মিটাতে দিশেহারা হয়ে ফোন দিলেন পুলিশকে। ফোন পেয়েই ১ ঘন্টার মধ্যে খাবার নিয়ে হাজির হলেন পুলিশ।
বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে অঞ্জলী রায় নামে এক গৃহবধুর ফোন পেয়ে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (‘খ’ সার্কেল) জামাল আল নাসের খাবারের ব্যবস্থা করেন। ১ ঘন্টার মধ্যে বাঘারপাড়ার খাজুরা পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই জুম্মান খান ও সহাকরী ইনচার্জ হযরত আলী ওই গৃহবধুর বাড়িতে গিয়ে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেন। অঞ্জলী বাঘারপাড়া উপজেলার জহুরপুর ইউনিয়নের তেলকুপ গ্রামের দোকান কর্মচারী সুশান্ত রায়ের স্ত্রী। চলমান করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সরকারি নির্দেশনা মানতে ঘরবন্ধি হয়ে অভাবগ্রস্ত হয়ে পড়ে পরিবারটি।
খাবারের প্যাকেট হাতে পেয়ে গৃহবধু অঞ্জলী বলেন, ‘যাদের খাবার দেওয়ার কথা তারাই আজ দিল না। অথচ সেখানে পুলিশ এসে খাবার দিয়ে যাচ্ছে। পুলিশের দেওয়া এ খাবার না পেলে পরদিন তাদের না খেয়ে থাকতে হতো’।
তিনি (অঞ্জলী) আবেগ আপ্লত হয়ে বলেন, ‘স্যারেদের (পুলিশ) ঋণ কোন দিনই শোধ করতে পারবো না। তবে যতদিন বাঁচবো স্যারদের জন্য ভগবানের কাছে আশির্বাদ করবো’।
অঞ্জলীর বৃদ্ধা শ্বাশুড়ি অনিতা রায় বলেন, ‘সারাজীবন দেখিছি পুলিশ ধরে মারে, বাড়ি আসে অন্ন দেয় পেত্তম দেকলাম’।