সবুজদেশ ডেক্সঃ পুলিশের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে গণফোরাম সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন বলেছেন, পুলিশ লুটপাট করতে থাকলে গণতন্ত্র চলতে পারে না। পুলিশকে জনগণের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার কথা বলেছেন তিনি।

গণফোরামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফউদ্দিন আহমেদ মানিকের ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ রোববার বিকেলে আরামবাগে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক স্মরণসভায় কামাল হোসেন এসব কথা বলেন। সাইফউদ্দিন আহমেদ মানিককে আদর্শ মানুষ উল্লেখ করে তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন কামাল হোসেন।

কামাল হোসেন বলেন, ‘পুলিশ, পুলিশ হিসেবে দায়িত্ব অবশ্যই পালন করবে জনগণের অধিকার রক্ষা করে, মর্যাদা রক্ষা করে। পুলিশ অন্যভাবে আইন প্রয়োগ করবে না। গণতান্ত্রিক দেশে পুলিশের কঠিন দায়িত্বশীল ভূমিকা অপরিহার্য। গণতন্ত্র চলতে পারে না যদি পুলিশ লুটপাট করতে থাকে। জনগণকে আক্রমণ না করে, শ্রদ্ধাশীল থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে পুলিশকে।’

সমাজে ধনী–গরিবের বৈষম্যের কথা তুলে ধরে গণফোরামের সভাপতি বলেন, দেশের কতিপয় লোক অসাধারণভাবে সম্পদের মালিক হয়ে যাচ্ছে। আর সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে। সমাজে কোনো অনৈক্য হবে না। সম্পদের সুষম বণ্টন হবে। তেমন শাসনব্যবস্থাও হতে হবে বলে জানান তিনি।

সংবিধানে উল্লেখিত মৌলিক অধিকারের তালিকা, শাসনব্যবস্থার বিভাগ, অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিধান নিয়ে গণফোরাম থেকে বুকলেট ছাপিয়ে তা বিতরণ করার কথা জানান কামাল হোসেন। তিনি বলেন, সংবিধান বঙ্গবন্ধুর স্বাক্ষরিত দলিল, যার ওপর হাত রেখে সাংসদেরা শপথ নেন যাঁরা জনগণের সেবক। সাংসদদের মনোযোগ সহকারে সংবিধান পাঠ করার এবং বঙ্গবন্ধুর দেওয়া দায়িত্ব পালন করার অনুরোধ জানান তিনি।

২০২১ সালে বাংলাদেশের বয়স ৫০ বছর হবে। দেশের এ সূবর্ণজয়ন্তী নিয়ে কামাল হোসেন বলেন, ‘দেশের অগ্রগতি হোক। আমার যেটা স্বপ্ন—এখানে অসাধারণ কোনো বৈষম্য থাকবে না, কেউ না খেয়ে মরবে না। সরকারের দায়িত্ব হবে সুষম বণ্টন নিশ্চিত করা। ২০২১ সালে আদর্শ সমাজ, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সমাজ, মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্নের সমাজ যেন আমরা গড়ে তুলি।’

স্মরণসভায় গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী সরকারের সমালোচনা করে বলেন, সরকার বাংলাদেশকে কাদার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। এ অবস্থা থেকে দেশকে মুক্ত করতে হলে দেশকে একটি চ্যালেঞ্জের জায়গায় যেতে হবে। সাইফউদ্দিন আহমেদ মানিকের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তিনি বেঁচে থাকলে তাঁদের মতোই হা-হুতাশ করতেন।

ডাকসু নির্বাচনেও দিনের ভোট রাতে হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন সুব্রত চৌধুরী। সরকারদলীয় ছাত্রসংগঠন ছাড়া ডাকসু নির্বাচনে অংশ নিতে ইচ্ছুক অন্য সংগঠনের ওপর হামলা চলছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গণফোরামের উদীয়মান সূর্য প্রতীক নিয়ে সিলেট-২ আসন থেকে জিতে আসা গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোকাব্বির খান গণফোরামকে বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানান। এ ছাড়া নির্বাচনের আগে গণফোরামে যোগ দেওয়া মেজর জেনারেল (অব.) আমসা আমিন থানা ও মহানগর পর্যায়ে দলের কার্যক্রম বাড়ানোর ওপর জোর দেন।

এই স্মরণসভায় আরও বক্তব্য দেন গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি মফিজুল ইসলাম খান কামাল, প্রেসিডিয়াম সদস্য আওম শফিকুল্লাহ, জগলুল হায়দার আফ্রিক প্রমুখ।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here