ঢাকা ১১:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রতারণান নতুন ফাঁদ প্রতিবন্ধিদের আর্থিক সহায়তা নামে টাকা আদায়

Reporter Name

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

পলি বেগম একজন প্রতিবন্ধি নারী। অসহায় ভাবে দিন যাপন করেন। তাকে এককালীন মোটা অংকের আর্থিক সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দিয়ে বাড়ির উপর আসেন দুই যুবক। পলি বেগম ৫০ হাজার টাকা এককালীন পাওয়ার আশায় তাদের হাতে তুলে দেন ১২ হাজার টাকা। যাওয়ার সময় প্রতারক চক্র যে কাগজপত্র দিয়ে গেছেন তার কোন অস্তিত্ব নেই। নিরাপায় হয়ে আসেন ঝিনাইদহ জেলা সমাজসেবা অফিসে। এখানে এসে জানতে পারেন পলি বেগম প্রতারিত হয়েছেন। পলি বেগমের মতো হরিণাকুন্ডুর বরিশখালী গ্রামের লিটন মিয়ার ছেলে প্রতিবিন্ধ মেশকাত, শিতলী গ্রামের আব্দুর রহিম মন্ডলের কন্যা পারুলা বেগম, সদর উপজেলার কুমড়াবাড়িয়া গ্রামের মাজেদ সরদারের ছেলে গোলাপ আলী সরদারসহ একাধিক প্রতিবন্ধি পরিবারের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে।

হরিণাকুন্ডুর বরিশখালী গ্রামের সালাহউদ্দীন অভিযোগ করেন, গত ২৮ নভেম্বর দুই যুবক তাদের বাড়িতে আসেন। তারা এককালীন ৪৮ হাজার টাকার অনুদান প্রদানের কথা বলে তার ভাবি রিমি খাতুনের কাছ থেকে ৬ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। রিমি খাতুনের ছেলে মেশকাত হোসেন প্রতিবন্ধি। একই ভাবে সদর উপজেলার কুমড়াবাড়িয়া গ্রামের গোলাপ আলী সরদারের কাছ থেকেও হাতিয়ে নেন ৬ হাজার টাকা। যাওয়ার সময় প্রতারক চক্রটি একটি ফরম দিয়ে যান। তাতে লেখা আছে “বিদেশী সংস্থা সৌদিআরব সিসিডিবি অনুদানের তালিকা। সার্বিক সহায়তায় জেস ফাউন্ডেশন। ওয়ার্ল্ডভিশন বাংলাদেশ। বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত রেজি নং -২০৮৬৫১”। ফরমে আরো লেখা আছে এক গ্রাম থেকে ৬ ব্যক্তি এককালীন আর্থিক সহায়তা পাবে। তাতে সাক্ষর করেন এস এম বাবুল। তথ্য নিয়ে

জানা গেছে, এই প্রতারক চক্রটি ঝিনাইদহের বিভিন্ন প্রতিবন্ধি স্কুলে থেকে তালিকা সংগ্রহ করে তাদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছে এবং এককালীন আর্থিক সময়তা প্রদানের নামে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। এ নিয়ে জেলার বিভিন্ন থানায় মামলা ও জিডি হলেও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।

বুধবার ঝিনাইদহ জেলা সমাজসেবা অফিসে একাধিক ব্যাক্তি এমন অভিযোগ নিয়ে আসেন। বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ জেলা সমাজসেবা অফিসের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল সামী জানান, একাকালীন আর্থিক সহায়তার প্রলোভন দেখিয়ে গ্রামে গ্রামে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নেয়ার খবর আমাদের কাছে আসছে। এই চক্রটি প্রথমে কালীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে প্রতিবন্ধি পরিবারের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেন। এরপর তারা শৈলকুপা, সদর উপজেলা ও হরিণাকুন্ডু উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে টাকা নিয়েছেন।

তিনি জানান, শৈলকুপা উপজেলার কামান্না গ্রামের পলি বেগম সমাজসেবা অফিসে এসে টাকা ফেরৎ চান। তিনি মনে করেছিলেন সমাজসেবার কর্মীরা হয়তো এই টাকা নিয়েছে। পরে তার কাছ থাকা ডকুমেন্ট দেখা বোঝা যায় তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন।

সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল সামী বলেন, এ নিয়ে জেলার বিভিন্ন থানায় একাধি জিডি করা হয়েছে। কিন্তু কোন প্রতিকার মিলছে না। ঝিনাইদহ জেলা সমাজসেবা অফিসের উপ-পরিচালক আব্দুল লতিফ শেখ গ্রামের মানুষকে এ বিষয়ে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন।

Tag :

About Author Information
Update Time : ০৬:০৬:০৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২২
৮৪ Time View

প্রতারণান নতুন ফাঁদ প্রতিবন্ধিদের আর্থিক সহায়তা নামে টাকা আদায়

Update Time : ০৬:০৬:০৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

পলি বেগম একজন প্রতিবন্ধি নারী। অসহায় ভাবে দিন যাপন করেন। তাকে এককালীন মোটা অংকের আর্থিক সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দিয়ে বাড়ির উপর আসেন দুই যুবক। পলি বেগম ৫০ হাজার টাকা এককালীন পাওয়ার আশায় তাদের হাতে তুলে দেন ১২ হাজার টাকা। যাওয়ার সময় প্রতারক চক্র যে কাগজপত্র দিয়ে গেছেন তার কোন অস্তিত্ব নেই। নিরাপায় হয়ে আসেন ঝিনাইদহ জেলা সমাজসেবা অফিসে। এখানে এসে জানতে পারেন পলি বেগম প্রতারিত হয়েছেন। পলি বেগমের মতো হরিণাকুন্ডুর বরিশখালী গ্রামের লিটন মিয়ার ছেলে প্রতিবিন্ধ মেশকাত, শিতলী গ্রামের আব্দুর রহিম মন্ডলের কন্যা পারুলা বেগম, সদর উপজেলার কুমড়াবাড়িয়া গ্রামের মাজেদ সরদারের ছেলে গোলাপ আলী সরদারসহ একাধিক প্রতিবন্ধি পরিবারের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে।

হরিণাকুন্ডুর বরিশখালী গ্রামের সালাহউদ্দীন অভিযোগ করেন, গত ২৮ নভেম্বর দুই যুবক তাদের বাড়িতে আসেন। তারা এককালীন ৪৮ হাজার টাকার অনুদান প্রদানের কথা বলে তার ভাবি রিমি খাতুনের কাছ থেকে ৬ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। রিমি খাতুনের ছেলে মেশকাত হোসেন প্রতিবন্ধি। একই ভাবে সদর উপজেলার কুমড়াবাড়িয়া গ্রামের গোলাপ আলী সরদারের কাছ থেকেও হাতিয়ে নেন ৬ হাজার টাকা। যাওয়ার সময় প্রতারক চক্রটি একটি ফরম দিয়ে যান। তাতে লেখা আছে “বিদেশী সংস্থা সৌদিআরব সিসিডিবি অনুদানের তালিকা। সার্বিক সহায়তায় জেস ফাউন্ডেশন। ওয়ার্ল্ডভিশন বাংলাদেশ। বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত রেজি নং -২০৮৬৫১”। ফরমে আরো লেখা আছে এক গ্রাম থেকে ৬ ব্যক্তি এককালীন আর্থিক সহায়তা পাবে। তাতে সাক্ষর করেন এস এম বাবুল। তথ্য নিয়ে

জানা গেছে, এই প্রতারক চক্রটি ঝিনাইদহের বিভিন্ন প্রতিবন্ধি স্কুলে থেকে তালিকা সংগ্রহ করে তাদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছে এবং এককালীন আর্থিক সময়তা প্রদানের নামে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। এ নিয়ে জেলার বিভিন্ন থানায় মামলা ও জিডি হলেও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।

বুধবার ঝিনাইদহ জেলা সমাজসেবা অফিসে একাধিক ব্যাক্তি এমন অভিযোগ নিয়ে আসেন। বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ জেলা সমাজসেবা অফিসের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল সামী জানান, একাকালীন আর্থিক সহায়তার প্রলোভন দেখিয়ে গ্রামে গ্রামে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নেয়ার খবর আমাদের কাছে আসছে। এই চক্রটি প্রথমে কালীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে প্রতিবন্ধি পরিবারের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেন। এরপর তারা শৈলকুপা, সদর উপজেলা ও হরিণাকুন্ডু উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে টাকা নিয়েছেন।

তিনি জানান, শৈলকুপা উপজেলার কামান্না গ্রামের পলি বেগম সমাজসেবা অফিসে এসে টাকা ফেরৎ চান। তিনি মনে করেছিলেন সমাজসেবার কর্মীরা হয়তো এই টাকা নিয়েছে। পরে তার কাছ থাকা ডকুমেন্ট দেখা বোঝা যায় তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন।

সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল সামী বলেন, এ নিয়ে জেলার বিভিন্ন থানায় একাধি জিডি করা হয়েছে। কিন্তু কোন প্রতিকার মিলছে না। ঝিনাইদহ জেলা সমাজসেবা অফিসের উপ-পরিচালক আব্দুল লতিফ শেখ গ্রামের মানুষকে এ বিষয়ে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন।