ঢাকা ১১:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রধানমন্ত্রীর ছবিযুক্ত ১০০ টাকার নোট ভুয়া: বাংলাদেশ ব্যাংক

Reporter Name

ঢাকাঃ

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিযুক্ত ১০০ টাকার একটি নোটের যে ছবি দেখা যাচ্ছে- তা ভুয়া বলে নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, শেখ হাসিনার ছবিযুক্ত কোনো নোট তারা ছাড়েনি। এ ধরনের নোট ছাড়ার কোনো সিদ্ধান্তও নেই তাদের।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) ও সহকারী মুখপাত্র আনোয়ারুল ইসলাম মঙ্গলবার বিকালে বলেন, বর্তমানে কাগুজে সব নোটে বঙ্গবন্ধুর ছবি যুক্ত আছে। নতুন করে প্রধানমন্ত্রীর ছবিযুক্ত কোনো নোট বাজারে ছাড়ার সিদ্ধান্ত হয়নি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যা দেখছেন তা ভুয়া।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রচলিত নোট ও কয়েনের পাশাপাশি স্মারক নোট ও মুদ্রা বাজারে ছাড়ে। লেনদেনের জন্য এখন পর্যন্ত বিভিন্ন মানের ৫২ ধরনের প্রচলিত নোট ও ১১ ধরনের কয়েন বাজারে ছাড়া হয়েছে। আবার দেশের বিশেষ বিশেষ ঘটনাকে স্মরণীয় রাখতে এখন পর্যন্ত ছয় ধরনের স্মারক নোট তৈরি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর স্মারক কয়েন তৈরি করেছে ১২ ধরনের।

জানা যায়, স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের প্রথম নোট ছাপা হয়। ১৯৭২ সালের ২ জুন প্রথম বাজারে ছাড়া হয় ১০ টাকার নোট। এরপর ধীরে ধীরে বাজারে আসে ১, ৫, ১০, ২০, ৫০, ১০০ ও ৫০০ টাকার নোট। এর প্রায় সবই বাজারে আসে ১৯৭২-৭৬ সালের মধ্যে।

চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৭৯ সালে ২০ টাকার নোট ও ১৯৮৮ সালে ২ টাকার নোট ছাড়া হয়। ২০০৮ সালে প্রথম বাজারে আসে ১০০০ টাকার নোট।

এদিকে স্বাধীনতার পর থেকে ধীরে ধীরে বাজারে ছাড়া হয় ১, ৫, ১০, ২৫, ৫০ পয়সা ও ১, ২, ৫ টাকার কয়েন।

এখন পর্যন্ত ১ টাকার তিন ধরনের নকশার নোট বাজারে এসেছে। ২ টাকার নোটের নকশা পরিবর্তন হয়েছে দু’বার। একইভাবে ৫ টাকার নোটের নকশা পরিবর্তন হয়েছে ৯ বার, ১০ টাকার নোটের দু’বার ও ২০ টাকার তিনবার। ৫০ টাকার নোট দু’বার, ১০০ টাকার ৯ বার, ৫০০ টাকার ৭ বার ও ১০০০ টাকার নোটের দু’বার নকশা পরিবর্তন হয়েছে।

এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন পর্যন্ত ১, ৫, ১০ ও ১০০ টাকার চার ধরনের নোট বাতিল করে বাজার থেকে তুলে নিয়েছে। টাকার নোটে বারবার নকশা পরিবর্তন হলেও কয়েনের নকশায় সেভাবে এত পরিবর্তন আসেনি। ৫০ পয়সার কয়েনে দু’বার ও ১ টাকার কয়েনের তিনবার নকশা পরিবর্তন হয়েছে। এর মধ্যে রূপালী রংয়ের ১ টাকার কয়েন বাজারে ছাড়া হয়।

১৯৯৬ সালে প্রথম ৪০ টাকার স্মারক নোট ছাড়া হয় স্বাধীনতার ২৫ বছরপূর্তি উপলক্ষে। ২০১২ সালে ভাষা আন্দোলনের ৬০ বছরপূর্তি উপলক্ষে ৬০ টাকার স্মারক নোট ছাড়া হয়।

২০১৩ সালে টাকা ছাপাখানার ২৫ বছরপূর্তি ও জাতীয় জাদুঘরের ১০০ বছরপূর্তি উপলক্ষে ১০০ টাকার স্মারক নোট প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ২০১৮ সালের মার্চ মাসে পদ্মা বহুমুখী সেতু ও বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট নিয়ে ‌’উন্নয়ন অভিযাত্রায় বাংলাদেশ’ শিরোনামে ৭০ টাকার স্মারক নোট প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে চারটি বিশেষ স্মারক মুদ্রা প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এগুলো হচ্ছে- স্বর্ণমুদ্রা একটি, স্মারক মুদ্রা একটি, ১০০ টাকা মূল্যমানের স্মারক নোট একটি এবং একটি ২০০ টাকা মূল্যমানের স্মারক নোট।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীকে স্মরণীয় করে রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ উদ্যোগ নিয়েছে।

About Author Information
আপডেট সময় : ০৬:৩৪:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯
১২৬৬ Time View

প্রধানমন্ত্রীর ছবিযুক্ত ১০০ টাকার নোট ভুয়া: বাংলাদেশ ব্যাংক

আপডেট সময় : ০৬:৩৪:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯

ঢাকাঃ

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিযুক্ত ১০০ টাকার একটি নোটের যে ছবি দেখা যাচ্ছে- তা ভুয়া বলে নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, শেখ হাসিনার ছবিযুক্ত কোনো নোট তারা ছাড়েনি। এ ধরনের নোট ছাড়ার কোনো সিদ্ধান্তও নেই তাদের।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) ও সহকারী মুখপাত্র আনোয়ারুল ইসলাম মঙ্গলবার বিকালে বলেন, বর্তমানে কাগুজে সব নোটে বঙ্গবন্ধুর ছবি যুক্ত আছে। নতুন করে প্রধানমন্ত্রীর ছবিযুক্ত কোনো নোট বাজারে ছাড়ার সিদ্ধান্ত হয়নি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যা দেখছেন তা ভুয়া।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রচলিত নোট ও কয়েনের পাশাপাশি স্মারক নোট ও মুদ্রা বাজারে ছাড়ে। লেনদেনের জন্য এখন পর্যন্ত বিভিন্ন মানের ৫২ ধরনের প্রচলিত নোট ও ১১ ধরনের কয়েন বাজারে ছাড়া হয়েছে। আবার দেশের বিশেষ বিশেষ ঘটনাকে স্মরণীয় রাখতে এখন পর্যন্ত ছয় ধরনের স্মারক নোট তৈরি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর স্মারক কয়েন তৈরি করেছে ১২ ধরনের।

জানা যায়, স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের প্রথম নোট ছাপা হয়। ১৯৭২ সালের ২ জুন প্রথম বাজারে ছাড়া হয় ১০ টাকার নোট। এরপর ধীরে ধীরে বাজারে আসে ১, ৫, ১০, ২০, ৫০, ১০০ ও ৫০০ টাকার নোট। এর প্রায় সবই বাজারে আসে ১৯৭২-৭৬ সালের মধ্যে।

চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৭৯ সালে ২০ টাকার নোট ও ১৯৮৮ সালে ২ টাকার নোট ছাড়া হয়। ২০০৮ সালে প্রথম বাজারে আসে ১০০০ টাকার নোট।

এদিকে স্বাধীনতার পর থেকে ধীরে ধীরে বাজারে ছাড়া হয় ১, ৫, ১০, ২৫, ৫০ পয়সা ও ১, ২, ৫ টাকার কয়েন।

এখন পর্যন্ত ১ টাকার তিন ধরনের নকশার নোট বাজারে এসেছে। ২ টাকার নোটের নকশা পরিবর্তন হয়েছে দু’বার। একইভাবে ৫ টাকার নোটের নকশা পরিবর্তন হয়েছে ৯ বার, ১০ টাকার নোটের দু’বার ও ২০ টাকার তিনবার। ৫০ টাকার নোট দু’বার, ১০০ টাকার ৯ বার, ৫০০ টাকার ৭ বার ও ১০০০ টাকার নোটের দু’বার নকশা পরিবর্তন হয়েছে।

এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন পর্যন্ত ১, ৫, ১০ ও ১০০ টাকার চার ধরনের নোট বাতিল করে বাজার থেকে তুলে নিয়েছে। টাকার নোটে বারবার নকশা পরিবর্তন হলেও কয়েনের নকশায় সেভাবে এত পরিবর্তন আসেনি। ৫০ পয়সার কয়েনে দু’বার ও ১ টাকার কয়েনের তিনবার নকশা পরিবর্তন হয়েছে। এর মধ্যে রূপালী রংয়ের ১ টাকার কয়েন বাজারে ছাড়া হয়।

১৯৯৬ সালে প্রথম ৪০ টাকার স্মারক নোট ছাড়া হয় স্বাধীনতার ২৫ বছরপূর্তি উপলক্ষে। ২০১২ সালে ভাষা আন্দোলনের ৬০ বছরপূর্তি উপলক্ষে ৬০ টাকার স্মারক নোট ছাড়া হয়।

২০১৩ সালে টাকা ছাপাখানার ২৫ বছরপূর্তি ও জাতীয় জাদুঘরের ১০০ বছরপূর্তি উপলক্ষে ১০০ টাকার স্মারক নোট প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ২০১৮ সালের মার্চ মাসে পদ্মা বহুমুখী সেতু ও বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট নিয়ে ‌’উন্নয়ন অভিযাত্রায় বাংলাদেশ’ শিরোনামে ৭০ টাকার স্মারক নোট প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে চারটি বিশেষ স্মারক মুদ্রা প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এগুলো হচ্ছে- স্বর্ণমুদ্রা একটি, স্মারক মুদ্রা একটি, ১০০ টাকা মূল্যমানের স্মারক নোট একটি এবং একটি ২০০ টাকা মূল্যমানের স্মারক নোট।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীকে স্মরণীয় করে রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ উদ্যোগ নিয়েছে।