প্রধান সড়কই বেহাল
মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ার প্রধান সড়কটি চার বছর ধরে বেহাল। উপজেলার ভবেরচর বাসস্ট্যান্ড থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় পর্যন্ত সড়কটির বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্ত।
শুক্রবার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মেঘনা সেতু পার হয়ে ভবেরচর বাসস্ট্যান্ডের একটি চায়ের দোকানে গিয়ে সেখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে কথা হয়। তাঁরা জানান, এলাকায় বিভিন্ন নাগরিক সমস্যা আছে। এর মধ্যে এলাকার মূল সড়কটির সংস্কার না হওয়ায় তাঁরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
ভবেরচর গ্রামের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম ও আতাউর রহমান বলেন, চার বছর ধরে রাস্তার পিচ উঠে যাচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ১২ ফুট চওড়া এই সড়ক ব্যবহার করে স্থানীয় ব্যক্তিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, থানা-পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ, উপনিবন্ধকের কার্যালয়, ভবেরচর ওয়াজের আলী উচ্চবিদ্যালয়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়, ২৪টি সরকারি দপ্তর ও মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যাতায়াত করে থাকেন। তাঁরা জানান, সড়কটির সংস্কারের দাবিতে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ এলাকার বাসিন্দারা বিভিন্ন সময় মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করেছেন। বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপি দিয়েছেন। কিন্তু কোনো ফল পাওয়া যায়নি।
মাথাভাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা নুরু মিয়া ও আসাদুজ্জামান বলেন, ভবেরচর ইউনিয়ন পরিষদের মোড়, চরপাথালিয়া মোড় ও জেলা পরিষদের ডাকবাংলোর মোড় এলাকায় সড়কটির অবস্থা খুবই খারাপ। বড় বড় গর্তের কারণে যান চলাচলে খুব সমস্যা হচ্ছে। শিশু ও বৃদ্ধরা চলাচল করতে গিয়ে প্রায়ই অসুস্থ হয়ে পড়েন।
সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক দেলোয়ার হোসেন জানান, সামান্য বৃষ্টি হলে এ সড়ক দিয়ে যানবাহন চালানো সম্ভব হয় না। বড় বড় গর্তে পানি জমে। অনেক সময় গর্ত বোঝা যায় না। প্রায়ই গাড়ি বিকল হয়ে যায়। গাড়ির যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যায়।
ভবেরচর ওয়াজের আলী উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র সজীব হায়দার বলে, ‘বৃষ্টির সময় এ সড়কে দুর্ঘটনা ঘটে। এ কারণে আমাদের পরিবার থেকে স্কুলে যেতে বাধা দেওয়া হয়। বৃষ্টির দিনে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা অর্ধেকে নেমে আসে।’
গজারিয়া থানার হিসাব অনুযায়ী, গত এক বছরে এই সড়কে ৩৬টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছে ৮৫ জন। হাত-পা ভেঙে পঙ্গু হয়েছে অনেকে। দুর্ঘটনার শিকার মাথাভাঙ্গা গ্রামের আলী হোসেন ও আমেনা বেগম বলেন, ‘এ সড়কে অটোরিকশা উল্টে আমাদের দুজনেরই হাত ও পা ভেঙে যায়। এখন পঙ্গু হয়ে বেঁচে আছি।’
নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আলীউল হোসেন বলেন, ‘সড়কটি আরও প্রশস্ত করতে আমরা প্রাক্কলন তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। ইতিমধ্যে সেটা অনুমোদন করা হয়েছে। শিগগিরই সড়কের দরপত্র আহ্বান করা হবে।’