যশোরে এক তরুণীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে আপত্তিকর ছবি তুলে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে এক যুবককে আটক করেছে যশোর ডিবির সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল।
আটক আরেফিন মাহাফুজ ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বালিদাপাড়া গ্রামের রেজাউল ইসলামের ছেলে। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন যশোর সদর উপজেলার বাসিন্দা ওই তরুণীর মা।
মামলায় তরুনীর মা উল্লেখ করেন, তার স্বামী বিদেশে থাকেন। মেয়েকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করার জন্য তার ভাইয়ের ঢাকার বাসায় পাঠান। অন্যদিকে, মাহাফুজ তার ভাইয়ের অফিসের কর্মচারী। এই সুবাদে বিভিন্ন সময় তার ভাইয়ের বাড়িতে যাওয়া-আসা ছিল মাহাফুজের। মাহাফুজ তার মেয়েকে প্রেমের প্রস্তাব দেন। তা প্রত্যাখ্যান করলে আত্মহত্যার হুমকি দেন মাহাফুজ। বাধ্য হয়ে তার মেয়ে প্রেমে জড়িয়ে যায়। এ সুযোগে বিভিন্ন সময় মাহাফুজ আপত্তিকর ছবি তুলে রাখেন।
শুধু তাই নয়, সে সময় বাদীর মেয়ের নামে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলেন এবং তার চেক রেখে দেন নিজের কাছে। এরপর তার কাছে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন মাহাফুজ। অন্যথায় আপত্তিকর ভিডিও ও ছবি ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেন। ওই টাকা না দেওয়ায় মাহাফুজ সেসব ছবি ও ভিডিও ফেসবুক মেসেঞ্জারের মাধ্যমে ওই নারীর প্রবাসী বাবাসহ বিভিন্ন আত্মীয়স্বজনের কাছে পাঠিয়ে দেন।
গত ২০ জুলাই ওই নারী যশোরে নিজ বাড়িতে অবস্থানকালে তার এক বান্ধবীর মাধ্যমে জানতে পারেন যে, ওইসব ছবি তার বান্ধবীসহ পরিচিতদের মেসেঞ্জারে পাঠানো হয়েছে। মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, ৩০ লাখ টাকা না দিলে মাহাফুজ আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে ছেড়ে দেবে; এছাড়া তরুণীর নামে চেক তৈরি করে তা দিয়ে চেক ডিজঅনারের মামলা করবে।
এ বিষয়ে সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম যশোরের এসআই দেবব্রত ঘোষ জানান, নিজ গ্রাম থেকে মাহাফুজকে আটক করা হয়েছে। একই সঙ্গে উদ্ধার করা হয়েছে ওই তরুণীর নামে কালীগঞ্জ শাখার সোনালী ব্যাংকের একটি চেক বই। মাহাফুজ কয়েকটি চেক ঢাকার বিভিন্ন শাখা থেকে ডিজঅনার করিয়েছেন।
এছাড়া মাহাফুজের ঢাকার বাসায় থাকা ল্যাপটপ ও মোবাইলে সেসব ভিডিও সংরক্ষিত রয়েছে বলে স্বীকার করেছেন। সেসব উদ্ধারে পুলিশ কাজ করছে। এছাড়া মাহাফুজ জানিয়েছেন, ওই তরুণীর সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছিল। পরবর্তীতে তাকে ডিভোর্স দেওয়ায় আপত্তিকর ছবি আত্মীয়স্বজনের কাছে পাঠিয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন।
সবুজদেশ/এসএএস