বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের ফিরিয়ে আনতে আইনজীবী নিয়োগ
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকারী সাজাপ্রাপ্ত পলাতক ছয় আসামিকে বিভিন্ন দেশ থেকে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছে সরকার। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এ তথ্য জানিয়েছেন। তবে ওই আইনজীবীর নাম প্রকাশ করেননি তিনি। খবর- বাসস।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সাজাপ্রাপ্ত হত্যাকারীদের দেশে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি কার্যকর কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালানোর জন্যও সম্প্রতি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী ছয় পলাতক আসামির সর্বশেষ সকল তথ্য সরকারের কাছে রয়েছে। বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত পলাতক সকল হত্যাকারীকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য আইনি ও কূটনৈতিক তৎপরতা এখন চলমান।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী সাজাপ্রাপ্ত পলাতক এক আসামি নূর চৌধুরীকে নীতিগতভাবে দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য কানাডা সরকার রাজি রয়েছে। কিন্তু কানাডায় মৃত্যুদণ্ড নিষিদ্ধ থাকায় তারা নূর চৌধুরীর ফাঁসি কার্যকর না করার নিশ্চয়তা চায়।
তিনি বলেন, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত লে. কর্নেল (বরখাস্ত) এ এম রাশেদ চৌধুরীকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে ইতিবাচক উন্নতি হয়েছে। আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা (ইন্টারপোল) বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে ২০০৯ সালে সংস্থার সকল দেশে পৃথকভাবে পলাতক হত্যাকারীদের খুঁজে বের করার জন্য ‘রেড নোটিস’ জারি করেছে।
২০১০ সালের ২৮ মার্চ আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের নেতৃত্বে গঠিত একটি টাস্কফোর্স এ ইস্যুতে কাজ করেছে। পলাতক সাজাপ্রাপ্ত আসামি কর্নেল (চাকরিচ্যুত) খন্দকার আবদুর রশিদ ও মেজর (অব.) নূর চৌধুরীকে যথাক্রমে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা থেকে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে সরকার ইতোমধ্যে দুটি আইনি প্রতিষ্ঠানকে নিযুক্ত করেছে। অন্যতম আত্মস্বীকৃত খুনি রিসালদার মুসলেম উদ্দিনকেও ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। অন্য তিন পলাতক সাজাপ্রাপ্ত আসামির মধ্যে লে. কর্নেল (অব্যাহতিপ্রাপ্ত) শরিফুল হক ডালিম ও ক্যাপ্টেন আবদুল মাজেদের অবস্থান সম্পর্কে কর্তৃপক্ষ এখনো নিশ্চিত নয়।
২০০৯ সালের ১৯ নভেম্বর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে হত্যার দায়ে হাইকোর্টের দেয়া রায় বহাল রাখেন সুপ্রিম কোর্ট। পলাতক ছয় আসামিসহ ১২ জনের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলায় মুত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচ আসামির ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। তারা হলেন- বজলুল হুদা, আর্টিলারি মুহিউদ্দিন, সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহারিয়ার রশিদ খান ও ল্যান্সার মহিউদ্দিন আহমেদ।
মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আরও সাত আসামি পলাতক আছেন। তারা হলেন- খন্দকার আবদুর রশিদ, রিসালদার মোসলেম উদ্দিন, শরিফুল হক ডালিম, এ এম রাশেদ চৌধুরী, নূর চৌধুরী, আবদুল আজিজ পাশা ও ক্যাপ্টেন আবদুল মাজেদ। তাদের মধ্যে আজিজ পাশা ২০০২ সালে জিম্বাবুয়েতে মারা গেছেন।