ঢাকা ০২:৪০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বছরের প্রথম দিনেও ভালো কোন খবর নেই পাটকল শ্রমিকদের

Reporter Name

খুলনাঃ

নতুন বছরও ভালো কোন খবর দিতে পারেনি খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকলের শ্রমিকদের। ১১ দফা দাবিতে দ্বিতীয় দফায় চতুর্থ দিনের অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন শ্রমিকরা। তীব্র শীত উপেক্ষা করে পাটকল শ্রমিকদের এই আমরণ অনশনে ইতিমধ্যে শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

আজ বুধবার (১ জানুয়ারি) চতুর্থ দিনের মতো অনশনে রয়েছেন খুলনা ৭টি পাটকল শ্রমিকরা। মৃত্যু আসলেও দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাবার ঘোষনা দিচ্ছেন তারা বার বার। আর সে কারণে হাঁড় কাঁপানো শীতও তাদেরকে মাঠ ছাড়া করতে পারছে না।

শ্রমিকদের টানা কর্মসূচিতে খুলনার ৭টি পাটকলের উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। ফলে দৈনিক প্রায় কোটি টাকার পাটপণ্য উৎপাদন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে পাটকলগুলো। সেই সাথে খালিশপুর শিল্পাঞ্চলের বিআইডিসি সড়ক যেখানে শ্রমিকরা অনশন করছেন সেখানের দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও বন্ধ রয়েছে।

এরই মধ্যে প্রচন্ড শীত ও ক্ষুধায় শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে বুধবার সকালে দাবি করেছেন পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক মুরাদ হোসেন।
তিনি বলেন, বেশি অসুস্থদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। বাকিদের অনশন স্থানে স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে।

তিনি বলেন, নতুন বছরেও আমাদের জন্য কোন সুসংবাদ আসেনি। মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) খুলনা জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে শ্রমিক নেতাদের আলোচনা জন্য ডাকা হয়েছিলো। কিন্তু কোন শ্রমিকনেতা যাননি। কেননা এর আগেও অনেক বৈঠক হয়েছে কিন্তু শ্রমিকদের কোন দাবি পূরণ হয়নি।

অনশনরত শ্রমিকরা জানান, মাসের পর মাস মজুরি-ভাতাসহ অন্যান্য দাবি পূরণ না হওয়ায় শ্রমিকদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। তাদের সংসার চলছে না। ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাই তারা বাধ্য হয়েই মিল ছেড়ে রাস্তায় নেমেছেন। সভা-সমাবেশ-বিক্ষোভ মিছিলে কাজ না হওয়ায় তারা শুরু করেছেন আমরণ অনশন।

দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাদের পক্ষে ঘরে ফেরা সম্ভব নয় বলেও জানান তারা।

বিজেএমসি সূত্রে জানা যায়, খুলনাঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ব ৯ পাটকলের মধ্যে যশোরের জেজেআই ও কার্পেটিং জুট মিল বাদে বাকী ৭টি পাটকলের উৎপাদন সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। এ পাটকলগুলোতে প্রতিদিন উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ২৭২ দশমিক ১৭ মেট্রিক টন। সেখানে চালু থাকা ওই দু’টি পাটকলে উৎপাদন হচ্ছে মাত্র ৮৬ দশমিক ৩৯ মেট্রিক টন। পাটকলগুলোতে প্রতিদিনের উৎপাদিত পণ্যের বাজার মূল্য প্রায় ১ কোটি টাকা।

শ্রমিকদের দাবি নিয়ে গত ১৫, ২২ ও ২৬ ডিসেম্বর তিন দফা বৈঠক হলেও তাতে কোনো সুফল আসেনি। সর্বশেষ ২৬ ডিসেম্বরের বৈঠকে মজুরি কমিশন বাস্তবায়নের বিষয়ে কোন সুরাহা না হওয়ায় ওই দিন ২৯ ডিসেম্বর দুপুর থেকে আবারও অনশন করার ঘোষণা দেন শ্রমিক নেতারা। সেই অনুযায়ী শ্রমিকরা অনশন কর্মসূচি পালন করছেন।

About Author Information
আপডেট সময় : ০১:০৭:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ জানুয়ারী ২০২০
৪১৩ Time View

বছরের প্রথম দিনেও ভালো কোন খবর নেই পাটকল শ্রমিকদের

আপডেট সময় : ০১:০৭:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ জানুয়ারী ২০২০

খুলনাঃ

নতুন বছরও ভালো কোন খবর দিতে পারেনি খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকলের শ্রমিকদের। ১১ দফা দাবিতে দ্বিতীয় দফায় চতুর্থ দিনের অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন শ্রমিকরা। তীব্র শীত উপেক্ষা করে পাটকল শ্রমিকদের এই আমরণ অনশনে ইতিমধ্যে শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

আজ বুধবার (১ জানুয়ারি) চতুর্থ দিনের মতো অনশনে রয়েছেন খুলনা ৭টি পাটকল শ্রমিকরা। মৃত্যু আসলেও দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাবার ঘোষনা দিচ্ছেন তারা বার বার। আর সে কারণে হাঁড় কাঁপানো শীতও তাদেরকে মাঠ ছাড়া করতে পারছে না।

শ্রমিকদের টানা কর্মসূচিতে খুলনার ৭টি পাটকলের উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। ফলে দৈনিক প্রায় কোটি টাকার পাটপণ্য উৎপাদন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে পাটকলগুলো। সেই সাথে খালিশপুর শিল্পাঞ্চলের বিআইডিসি সড়ক যেখানে শ্রমিকরা অনশন করছেন সেখানের দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও বন্ধ রয়েছে।

এরই মধ্যে প্রচন্ড শীত ও ক্ষুধায় শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে বুধবার সকালে দাবি করেছেন পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক মুরাদ হোসেন।
তিনি বলেন, বেশি অসুস্থদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। বাকিদের অনশন স্থানে স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে।

তিনি বলেন, নতুন বছরেও আমাদের জন্য কোন সুসংবাদ আসেনি। মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) খুলনা জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে শ্রমিক নেতাদের আলোচনা জন্য ডাকা হয়েছিলো। কিন্তু কোন শ্রমিকনেতা যাননি। কেননা এর আগেও অনেক বৈঠক হয়েছে কিন্তু শ্রমিকদের কোন দাবি পূরণ হয়নি।

অনশনরত শ্রমিকরা জানান, মাসের পর মাস মজুরি-ভাতাসহ অন্যান্য দাবি পূরণ না হওয়ায় শ্রমিকদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। তাদের সংসার চলছে না। ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাই তারা বাধ্য হয়েই মিল ছেড়ে রাস্তায় নেমেছেন। সভা-সমাবেশ-বিক্ষোভ মিছিলে কাজ না হওয়ায় তারা শুরু করেছেন আমরণ অনশন।

দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাদের পক্ষে ঘরে ফেরা সম্ভব নয় বলেও জানান তারা।

বিজেএমসি সূত্রে জানা যায়, খুলনাঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ব ৯ পাটকলের মধ্যে যশোরের জেজেআই ও কার্পেটিং জুট মিল বাদে বাকী ৭টি পাটকলের উৎপাদন সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। এ পাটকলগুলোতে প্রতিদিন উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ২৭২ দশমিক ১৭ মেট্রিক টন। সেখানে চালু থাকা ওই দু’টি পাটকলে উৎপাদন হচ্ছে মাত্র ৮৬ দশমিক ৩৯ মেট্রিক টন। পাটকলগুলোতে প্রতিদিনের উৎপাদিত পণ্যের বাজার মূল্য প্রায় ১ কোটি টাকা।

শ্রমিকদের দাবি নিয়ে গত ১৫, ২২ ও ২৬ ডিসেম্বর তিন দফা বৈঠক হলেও তাতে কোনো সুফল আসেনি। সর্বশেষ ২৬ ডিসেম্বরের বৈঠকে মজুরি কমিশন বাস্তবায়নের বিষয়ে কোন সুরাহা না হওয়ায় ওই দিন ২৯ ডিসেম্বর দুপুর থেকে আবারও অনশন করার ঘোষণা দেন শ্রমিক নেতারা। সেই অনুযায়ী শ্রমিকরা অনশন কর্মসূচি পালন করছেন।