ঢাকা ০৬:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বন্ধ হচ্ছে ৪২ বছরের ঐতিহ্যবাহী মণিহার সিনেমা হল

  • সবুজদেশ ডেস্ক:
  • Update Time : ০৫:২৮:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৩৭ বার পড়া হয়েছে।

 

যশোরে অবস্থিত মণিহার সিনেমা হলকে বলা হয় দেশের বৃহত্তম সিনেমা হল। যে হলে সিনেমা দেখার জন্য জাপান, কোরিয়া, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া, ইংল্যান্ড থেকে চলচ্চিত্রপ্রেমীরা সিনেমা দেখতে আসতেন।

৪২ বছর আগে তৈরি হওয়া এই ঐতিহ্যবাহী সিনেমা হলটি এবার ভেঙে ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। হলটি ভেঙে সেখানে মার্কেটের বর্ধিতাংশ হিসেবে আবাসিক হোটেল তৈরি করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন সিনেমা হলটির মালিক জিয়াউল ইসলাম মিঠু।

গেল ঈদের পর বেশ মন্দা সময় পার করছেন বলে জানা গেছে। সিনেমা না থাকায় এখন হলটিতে কলকাতার সিনেমা চালাচ্ছেন তারা। তাতেও দর্শক মিলছে না। এ ছাড়া সিঙ্গেল হলটি ছাড়াও একটি মাল্টিপ্লেক্স হল ‘মণিহার সিনেপ্লেক্স’ থাকায় সেটি চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।

হলটির মালিক জিয়াউল ইসলাম মিঠু বলেন, “এখন তো ছবি নেই, ছবি না থাকলে হল কিভাবে চালাব। এখন কলকাতার ‘অভিমান’ সিনেমাটি চালাচ্ছি, যেটা এর আগে চারবার চালিয়েছি আর সিনেপ্লেক্সে চালাচ্ছি সালমান শাহের ‘বিক্ষোভ’ সিনেমাটি। এভাবে তো চালানো যায় না। তাই আমরা পরিকল্পনা করছি হলটি বন্ধ করে দেওয়ার।

লোকসানের পাল্লা ভারী হতে হতে এখন হলের খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। হলটি ভেঙে মার্কেট করা প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের হলের সিট সংখ্যা ১৪৩০টি। আমাদের স্টাফ আছে ২৫ জন। এভাবে তো চালানো যায় না। দেখা যায় পুরো মার্কেটে প্রতি মাসে বিদ্যুৎ বিল আসে এক লাখ কিংবা দেড় লাখ।

সিঙ্গেল হলটি ভেঙে হয়তো সামনে মার্কেটের জন্য জায়গা করব, আবাসিক হোটেলগুলোকে স্যাংকশন করব। তা ছাড়া আরেকটা সিনেপ্লেক্সও হতে পারে। ইতিমধ্যে আর্কিটেকচারকে ডিজাইন করতে দেওয়া হয়েছে, এরপর সেটা পাস করে পরিকল্পনা মোতাবেক কাজ হবে। এটাও সময় লাগবে সব কিছু হতে। তার আগ পর্যন্ত হয়তো আমরা এভাবেই চলাব।’

কবে নাগাদ এই সিঙ্গেল হলটি ভেঙে ফেলা হবে, সেটি এখন নিশ্চিত করতে না পারলেও জানালেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ চলছে, সেগুলো পাস হলে তারপর হয়তো ভাঙনের কাজ শুরু হবে। এ সময় দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার বিষয়টিও উল্লেখ করেন। সিঙ্গেল হলটি ভাঙা হলেও সিনেপ্লেক্সটি সচল থাকবে বলে জানালেন এই হল মালিক।

উল্লেখ্য, যশোর জেলায় অবস্থিত বাংলাদেশের বৃহত্তম মণিহার সিনেমা হলটি ১৯৮৩ সালের ৮ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয়। হলটির নকশা করেছিলেন কাজী মোহাম্মদ হানিফ। এই সিনেমা হলটি একসময় ঢালিউডের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত হতো। আধুনিক স্থাপত্যশৈলীর জন্য প্রতিষ্ঠার অল্প সময়ের মধ্যেই সিনেমা হলটি খ্যাতি অর্জন করে।

সবুজদেশ/এসএএস

Tag :
জনপ্রিয়

বন্ধ হচ্ছে ৪২ বছরের ঐতিহ্যবাহী মণিহার সিনেমা হল

Update Time : ০৫:২৮:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

 

যশোরে অবস্থিত মণিহার সিনেমা হলকে বলা হয় দেশের বৃহত্তম সিনেমা হল। যে হলে সিনেমা দেখার জন্য জাপান, কোরিয়া, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া, ইংল্যান্ড থেকে চলচ্চিত্রপ্রেমীরা সিনেমা দেখতে আসতেন।

৪২ বছর আগে তৈরি হওয়া এই ঐতিহ্যবাহী সিনেমা হলটি এবার ভেঙে ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। হলটি ভেঙে সেখানে মার্কেটের বর্ধিতাংশ হিসেবে আবাসিক হোটেল তৈরি করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন সিনেমা হলটির মালিক জিয়াউল ইসলাম মিঠু।

গেল ঈদের পর বেশ মন্দা সময় পার করছেন বলে জানা গেছে। সিনেমা না থাকায় এখন হলটিতে কলকাতার সিনেমা চালাচ্ছেন তারা। তাতেও দর্শক মিলছে না। এ ছাড়া সিঙ্গেল হলটি ছাড়াও একটি মাল্টিপ্লেক্স হল ‘মণিহার সিনেপ্লেক্স’ থাকায় সেটি চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।

হলটির মালিক জিয়াউল ইসলাম মিঠু বলেন, “এখন তো ছবি নেই, ছবি না থাকলে হল কিভাবে চালাব। এখন কলকাতার ‘অভিমান’ সিনেমাটি চালাচ্ছি, যেটা এর আগে চারবার চালিয়েছি আর সিনেপ্লেক্সে চালাচ্ছি সালমান শাহের ‘বিক্ষোভ’ সিনেমাটি। এভাবে তো চালানো যায় না। তাই আমরা পরিকল্পনা করছি হলটি বন্ধ করে দেওয়ার।

লোকসানের পাল্লা ভারী হতে হতে এখন হলের খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। হলটি ভেঙে মার্কেট করা প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের হলের সিট সংখ্যা ১৪৩০টি। আমাদের স্টাফ আছে ২৫ জন। এভাবে তো চালানো যায় না। দেখা যায় পুরো মার্কেটে প্রতি মাসে বিদ্যুৎ বিল আসে এক লাখ কিংবা দেড় লাখ।

সিঙ্গেল হলটি ভেঙে হয়তো সামনে মার্কেটের জন্য জায়গা করব, আবাসিক হোটেলগুলোকে স্যাংকশন করব। তা ছাড়া আরেকটা সিনেপ্লেক্সও হতে পারে। ইতিমধ্যে আর্কিটেকচারকে ডিজাইন করতে দেওয়া হয়েছে, এরপর সেটা পাস করে পরিকল্পনা মোতাবেক কাজ হবে। এটাও সময় লাগবে সব কিছু হতে। তার আগ পর্যন্ত হয়তো আমরা এভাবেই চলাব।’

কবে নাগাদ এই সিঙ্গেল হলটি ভেঙে ফেলা হবে, সেটি এখন নিশ্চিত করতে না পারলেও জানালেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ চলছে, সেগুলো পাস হলে তারপর হয়তো ভাঙনের কাজ শুরু হবে। এ সময় দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার বিষয়টিও উল্লেখ করেন। সিঙ্গেল হলটি ভাঙা হলেও সিনেপ্লেক্সটি সচল থাকবে বলে জানালেন এই হল মালিক।

উল্লেখ্য, যশোর জেলায় অবস্থিত বাংলাদেশের বৃহত্তম মণিহার সিনেমা হলটি ১৯৮৩ সালের ৮ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয়। হলটির নকশা করেছিলেন কাজী মোহাম্মদ হানিফ। এই সিনেমা হলটি একসময় ঢালিউডের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত হতো। আধুনিক স্থাপত্যশৈলীর জন্য প্রতিষ্ঠার অল্প সময়ের মধ্যেই সিনেমা হলটি খ্যাতি অর্জন করে।

সবুজদেশ/এসএএস