জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার গুলশান বাসভবনে প্রবেশ করার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রোববার গুলশান থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন এনডিএমের দপ্তর সম্পাদক জাবেদুর রহমান জনি।
গুলশান থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মোক্তার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আজ (রোববার) মামলার এজাহার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমানের আদালতে উপস্থাপন করা হয়। আদালত মামলার এজাহার গ্রহণ করে ৯ অক্টোবর প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য করেন।
মামলার অপর আসামিরা হলেন- সাবেক সড়ক পরিবহণ এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল আলম চৌধুরী, সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মাদ এ আরাফাত, এস আলম গ্রুপের কর্ণধার মোহাম্মাদ সাইফুল আলম মাসুদ, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ঢাকা মহানগর উত্তরের সহ-সভাপতি মোস্তফা আল নাফিজ, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কর্মী মো. নূর, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি রিয়াজ মাহমুদ, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক সাগর আহমেদ ও আওয়ামী লীগ কর্মী শামীম।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পতিত স্বৈরাচারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্র-জনতা এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক শক্তির আন্দোলনে পালিয়ে যাবার পর থেকেই এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজসহ ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের সম্মুখসারির যোদ্ধাদের প্রতিবাদী কণ্ঠকে স্তব্দ করতে পরিকল্পনা করে আসছে।
উল্লেখ্য, ববি হাজ্জাজ গত বছর সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের বিচার চেয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চিফ প্রসিকিউটরের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। এছাড়া তিনি গত বছর শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিকসহ শেখ পরিবারের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র সংক্রান্ত দুর্নীতি তদন্ত করতে দুদকের প্রতি নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন।
ববি হাজ্জাজ ধারবাহিকভাবে রাজপথে এবং টেলিভিশন টকশোতে শেখ হাসিনার বিচার চেয়ে বক্তব্য দিয়ে আসছেন। এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা ও মহিবুল আলম চৌধুরী ফেসবুকে ববি হাজ্জাজের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেন। এছাড়া সিদ্দিকী নাজমুল আলম ভিডিও বার্তার মাধ্যমে ববি হাজ্জাজকে শায়েস্তা করার হুমকি দেন।
মামলার অভিযোগে বাদী আরও উল্লেখ করেন, গত ৬ সেপ্টেম্বর আসামি মোস্তফা আল নাফিজ ও মো. নূর ববি হাজ্জাজকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার গুলশান বাসভবনে প্রবেশ করে। সন্দেহভাজন হিসেবে উপস্থিত নিরাপত্তারক্ষী কর্তৃক আটক হওয়ার পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি নূর জানান- শেখ হাসিনার সরাসরি মোস্তফা আল নাফিজ ববি হাজ্জাজকে ছুরিকাঘাতে বা সুবিধাজনক সময়ে তার গাড়িতে বোমা মেরে হত্যার আদেশ দিয়েছেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, নূর জানান- এই আদেশ বাস্তবায়নে অর্থায়ন করেছেন আসামি এস আলম ও সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন ওবায়দুল কাদের, মহিবুল আলম চৌধুরী, আসাদুজ্জামান খান কামাল, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মোহাম্মদ এ আরাফাত, রিয়াজ মাহমুদ, সাগর আহমেদ এবং শামীম।
সবুজদেশ/এসএএস