ঢাকা ০৫:২৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশকে ২০ লাখ হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ট্যাবলেট দিবে ভারত

Reporter Name

সবুজদেশ ডেস্কঃ

এখন পর্যন্ত প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। তবে এনিয়ে রাতদিন গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। সাফল্যের দেখা এখনও মেলেনি। কতদিন নাগাদ এই ওষুধ পাওয়া যাবে, তা-ও বলতে পারছেন না গবেষকরা।

তবে বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, ‘হাইড্রোকুইনন’ নামে ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় বিশেষ কার্যকর হচ্ছে। আর হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ওষুধের সবচেয়ে বড় উৎপাদনকারী দেশ বর্তমানে ভারত।

ইতোমধ্যেই এই ওষুধের জন্য ৩০টির বেশি দেশ ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। এরপরেই বাংলাদেশসহ ১৩টি দেশের তালিকা তৈরি করেছে ভারত। প্রথম দফায় এসব দেশকে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

করোনার চিকিৎসায় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের কার্যকারিতা জানার পর গত ২৫ মার্চ ওই ওষুধের রফতানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। এরপরই আন্তর্জাতিক চাপের মুখে বিধিনিষেধ তুলে নিতে বাধ্য হয় দেশটি।

যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন, জার্মানি, বাহরাইন, ব্রাজিল, নেপাল, ভুটান, আফগানিস্তান, মালদ্বীপ, বাংলাদেশসহ ১৩টি দেশে এই ওষুধ পাঠানো হবে। এদিকে, গুজরাটের তিনটি কারখানা থেকে হাইড্রোক্সিক্লােরোকুইনের অন্তত ২ কোটি ৯০ লাখ ডোজ যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম ধাপে রফতানির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

এ বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, আমি প্রচুর পরিমাণ ওষুধ আনাচ্ছি। ২৯ মিলিয়নের থেকেও বেশি। বেশির ভাগটাই ইতোমধ্যে ভারত থেকে রওনা হয়েছে। আমি নরেন্দ্র মোদিকে অনুরোধ করেছিলাম, যদি তিনি ওষুধ পাঠান। মোদি ভীষণ ভালো মানুষ।

বুধবার রাতে টুইটারে ভারতকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প লেখেন, ‘কঠিন সময়ে বন্ধুদের সহযোগিতা বেশি করে দরকার হয়। হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য ভারত এবং ভারতবাসীকে ধন্যবাদ। কখনও ভুলব না। ধন্যবাদ নরেন্দ্র মোদি। আপনার নেতৃত্ব শুধুই ভারতের নয়, গোটা মানবজাতির।’

করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে ম্যালেরিয়ানিরোধী হাইড্রোক্সিক্লােরোকুইন ওষুধ ব্যবহারে ইতিবাচক ফল পাওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে করোনা রোগীদের ওপর ম্যালেরিয়ানিরোধী এই ওষুধের পরীক্ষা চালানো হচ্ছে।

বিশ্বে হাইড্রোক্সিক্লােরোকুইনের মোট উৎপাদনের ৭০ শতাংশই ভারতে হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কোভিড-১৯ এর সম্ভাব্য প্রতিষেধক হিসাবে হাইড্রোক্সিক্লােরোকুইন শনাক্ত করেছে।

এদিকে, বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪২৪ এবং মারা গেছে ২৭ জন। এখন পর্যন্ত ৩৩ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন তবে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। করোনার এই দুঃসময়ে বাংলাদেশকে ২০ লাখ হাইড্রোক্সিক্লােরোকুইন ট্যাবলেট দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে ভারত।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জয়েন্ট সেক্রেটারি দামু রবি বলেন, হাইড্রোক্সিক্লােরোকুইনের জন্য এ পর্যন্ত অনেক দেশ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছে। সে কারণেই বেশ কিছু দেশকে এই ওষুধ দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ব্রাজিল, কানাডা এবং জার্মানিকে ৫০ লাখ হাইড্রোক্সিক্লােরোকুইন ট্যাবলেট দেওয়া হবে। অপরদিকে নেপাল পাবে ১০ লাখ, ভুটান ২ লাখ, শ্রীলঙ্কা ১০ লাখ, আফগানিস্তান ৫ লাখ এবং মালদ্বীপ ২ লাখ।

About Author Information
আপডেট সময় : ১০:১৩:১২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ এপ্রিল ২০২০
৪০৭ Time View

বাংলাদেশকে ২০ লাখ হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ট্যাবলেট দিবে ভারত

আপডেট সময় : ১০:১৩:১২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ এপ্রিল ২০২০

সবুজদেশ ডেস্কঃ

এখন পর্যন্ত প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। তবে এনিয়ে রাতদিন গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। সাফল্যের দেখা এখনও মেলেনি। কতদিন নাগাদ এই ওষুধ পাওয়া যাবে, তা-ও বলতে পারছেন না গবেষকরা।

তবে বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, ‘হাইড্রোকুইনন’ নামে ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় বিশেষ কার্যকর হচ্ছে। আর হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ওষুধের সবচেয়ে বড় উৎপাদনকারী দেশ বর্তমানে ভারত।

ইতোমধ্যেই এই ওষুধের জন্য ৩০টির বেশি দেশ ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। এরপরেই বাংলাদেশসহ ১৩টি দেশের তালিকা তৈরি করেছে ভারত। প্রথম দফায় এসব দেশকে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

করোনার চিকিৎসায় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের কার্যকারিতা জানার পর গত ২৫ মার্চ ওই ওষুধের রফতানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। এরপরই আন্তর্জাতিক চাপের মুখে বিধিনিষেধ তুলে নিতে বাধ্য হয় দেশটি।

যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন, জার্মানি, বাহরাইন, ব্রাজিল, নেপাল, ভুটান, আফগানিস্তান, মালদ্বীপ, বাংলাদেশসহ ১৩টি দেশে এই ওষুধ পাঠানো হবে। এদিকে, গুজরাটের তিনটি কারখানা থেকে হাইড্রোক্সিক্লােরোকুইনের অন্তত ২ কোটি ৯০ লাখ ডোজ যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম ধাপে রফতানির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

এ বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, আমি প্রচুর পরিমাণ ওষুধ আনাচ্ছি। ২৯ মিলিয়নের থেকেও বেশি। বেশির ভাগটাই ইতোমধ্যে ভারত থেকে রওনা হয়েছে। আমি নরেন্দ্র মোদিকে অনুরোধ করেছিলাম, যদি তিনি ওষুধ পাঠান। মোদি ভীষণ ভালো মানুষ।

বুধবার রাতে টুইটারে ভারতকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প লেখেন, ‘কঠিন সময়ে বন্ধুদের সহযোগিতা বেশি করে দরকার হয়। হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য ভারত এবং ভারতবাসীকে ধন্যবাদ। কখনও ভুলব না। ধন্যবাদ নরেন্দ্র মোদি। আপনার নেতৃত্ব শুধুই ভারতের নয়, গোটা মানবজাতির।’

করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে ম্যালেরিয়ানিরোধী হাইড্রোক্সিক্লােরোকুইন ওষুধ ব্যবহারে ইতিবাচক ফল পাওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে করোনা রোগীদের ওপর ম্যালেরিয়ানিরোধী এই ওষুধের পরীক্ষা চালানো হচ্ছে।

বিশ্বে হাইড্রোক্সিক্লােরোকুইনের মোট উৎপাদনের ৭০ শতাংশই ভারতে হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কোভিড-১৯ এর সম্ভাব্য প্রতিষেধক হিসাবে হাইড্রোক্সিক্লােরোকুইন শনাক্ত করেছে।

এদিকে, বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪২৪ এবং মারা গেছে ২৭ জন। এখন পর্যন্ত ৩৩ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন তবে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। করোনার এই দুঃসময়ে বাংলাদেশকে ২০ লাখ হাইড্রোক্সিক্লােরোকুইন ট্যাবলেট দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে ভারত।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জয়েন্ট সেক্রেটারি দামু রবি বলেন, হাইড্রোক্সিক্লােরোকুইনের জন্য এ পর্যন্ত অনেক দেশ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছে। সে কারণেই বেশ কিছু দেশকে এই ওষুধ দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ব্রাজিল, কানাডা এবং জার্মানিকে ৫০ লাখ হাইড্রোক্সিক্লােরোকুইন ট্যাবলেট দেওয়া হবে। অপরদিকে নেপাল পাবে ১০ লাখ, ভুটান ২ লাখ, শ্রীলঙ্কা ১০ লাখ, আফগানিস্তান ৫ লাখ এবং মালদ্বীপ ২ লাখ।