ঢাকা ০৭:১১ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৯ মার্চ ২০২৫, ২৫ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চায় ভারত

 

বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত সবসময় সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চায় বলে জানিয়েছেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। তিনি বলেন, ভারত সবসময় প্রতিবেশীদের সঙ্গে শক্তিশালী সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চায় এবং বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়।

শনিবার দেশটির বার্তা সংস্থা ইন্দো-এশীয় নিউজ সার্ভিসকে (আইএএনএস) দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

রাজনাথ সিং বলেন, ‘ভারত সবসময় তার প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চায় এবং বাংলাদেশও আমাদের প্রতিবেশী দেশ। আমরা সবসময় আমাদের প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করি। কারণ (সাবেক প্রধানমন্ত্রী) অটল বিহারী বাজপেয়ী বলতেন, আমরা আমাদের বন্ধুদের পরিবর্তন করতে পারি; প্রতিবেশীদের নয়। সুতরাং আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চাই।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। এরপর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসে। বর্তমান সরকারের শাসনামলে বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে একাধিকবার উদ্বেগ জানিয়েছে নয়াদিল্লি।

গত শুক্রবারও নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

নয়াদিল্লিতে সাপ্তাহিক প্রেস ব্রিফিংয়ে জয়সওয়াল বলেন, আমরা স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং প্রগতিশীল বাংলাদেশ সমর্থন করি; যেখানে সব সমস্যার সমাধান গণতান্ত্রিক উপায়ে এবং অন্তর্ভুক্তি ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে সমাধান করা হবে।

এর আগে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি এক প্রেস ব্রিফিংয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, ভারতকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা বাংলাদেশের সঙ্গে কেমন সম্পর্ক চায়। আশপাশ থেকে দু’চারজন কী বলল, না বলল সেটাতে মনোযোগ না দিয়ে আমরা বরং আমাদের সম্পর্ক ভালো করার চেষ্টা করি।

এর একদিন আগে দেওয়া ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্করের এ সংক্রান্ত বক্তব্য নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

তৌহিদ হোসেন সেদিন বলেন, তিনি (জয়শঙ্কর) বলেছেন, কেমন সম্পর্ক চায় বাংলাদেশ; সেটা বাংলাদেশকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। অবশ্যই বাংলাদেশ সিদ্ধান্ত নেবে, ভারতের সঙ্গে কেমন সম্পর্ক চায়। একইভাবে ভারতকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তারা বাংলাদেশের সঙ্গে কেমন সম্পর্ক চায়। এটা দুই পক্ষেরই বিষয়, এটা বলাতে দোষের কিছু নেই।

ভারতের সঙ্গে সরকারের সম্পর্কের বিষয়ে এই উপদেষ্টা বলেন, আমার মনে হয়, আমাদের স্পষ্ট সিদ্ধান্ত আছে এ ব্যাপারে। আমরা ভারতের সঙ্গে গুড ওয়ার্কিং রিলেশন চাই। একটি পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ এবং যার যার স্বার্থের ভিত্তিতে সেটা চাই। এ ব্যাপারে আমাদের কোনো অস্পষ্টতা নেই।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ প্রসংগে উপদেষ্টা বলেন, সংখ্যালঘু সম্পর্কে তিনি আবার বলেছেন। এই অভিযোগ প্রধানত ভারতীয় মিডিয়ার যে বিকৃত তথ্যপ্রবাহ সৃষ্টি করেছে, তার ভিত্তিতে এগুলো বিভিন্নজন বিভিন্ন জায়গায় বলে বেড়াচ্ছে। বাংলাদেশের সংখ্যালঘু ভারতের বিষয় হতে পারে না। বাংলাদেশের সংখ্যালঘু বাংলাদেশের বিষয়। ভারতের সংখ্যালঘুর বিষয়টি আবার তাদের বিষয়। কাজেই এ ব্যাপারে অন্যের বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতিতে যেতে হবে।

ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং মূলত পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের এই বক্তব্যের পরই বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার বিষয়টি উল্লেখ করলেন।

সবুজদেশ/এসইউ

জনপ্রিয়

কালীগঞ্জে কৃষকের মাঝে বিনামূল্যের সার ও বীজ বিতরণ

বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চায় ভারত

Update Time : ০৯:৩১:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ মার্চ ২০২৫

 

বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত সবসময় সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চায় বলে জানিয়েছেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। তিনি বলেন, ভারত সবসময় প্রতিবেশীদের সঙ্গে শক্তিশালী সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চায় এবং বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়।

শনিবার দেশটির বার্তা সংস্থা ইন্দো-এশীয় নিউজ সার্ভিসকে (আইএএনএস) দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

রাজনাথ সিং বলেন, ‘ভারত সবসময় তার প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চায় এবং বাংলাদেশও আমাদের প্রতিবেশী দেশ। আমরা সবসময় আমাদের প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করি। কারণ (সাবেক প্রধানমন্ত্রী) অটল বিহারী বাজপেয়ী বলতেন, আমরা আমাদের বন্ধুদের পরিবর্তন করতে পারি; প্রতিবেশীদের নয়। সুতরাং আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চাই।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। এরপর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসে। বর্তমান সরকারের শাসনামলে বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে একাধিকবার উদ্বেগ জানিয়েছে নয়াদিল্লি।

গত শুক্রবারও নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

নয়াদিল্লিতে সাপ্তাহিক প্রেস ব্রিফিংয়ে জয়সওয়াল বলেন, আমরা স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং প্রগতিশীল বাংলাদেশ সমর্থন করি; যেখানে সব সমস্যার সমাধান গণতান্ত্রিক উপায়ে এবং অন্তর্ভুক্তি ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে সমাধান করা হবে।

এর আগে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি এক প্রেস ব্রিফিংয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, ভারতকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা বাংলাদেশের সঙ্গে কেমন সম্পর্ক চায়। আশপাশ থেকে দু’চারজন কী বলল, না বলল সেটাতে মনোযোগ না দিয়ে আমরা বরং আমাদের সম্পর্ক ভালো করার চেষ্টা করি।

এর একদিন আগে দেওয়া ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্করের এ সংক্রান্ত বক্তব্য নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

তৌহিদ হোসেন সেদিন বলেন, তিনি (জয়শঙ্কর) বলেছেন, কেমন সম্পর্ক চায় বাংলাদেশ; সেটা বাংলাদেশকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। অবশ্যই বাংলাদেশ সিদ্ধান্ত নেবে, ভারতের সঙ্গে কেমন সম্পর্ক চায়। একইভাবে ভারতকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তারা বাংলাদেশের সঙ্গে কেমন সম্পর্ক চায়। এটা দুই পক্ষেরই বিষয়, এটা বলাতে দোষের কিছু নেই।

ভারতের সঙ্গে সরকারের সম্পর্কের বিষয়ে এই উপদেষ্টা বলেন, আমার মনে হয়, আমাদের স্পষ্ট সিদ্ধান্ত আছে এ ব্যাপারে। আমরা ভারতের সঙ্গে গুড ওয়ার্কিং রিলেশন চাই। একটি পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ এবং যার যার স্বার্থের ভিত্তিতে সেটা চাই। এ ব্যাপারে আমাদের কোনো অস্পষ্টতা নেই।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ প্রসংগে উপদেষ্টা বলেন, সংখ্যালঘু সম্পর্কে তিনি আবার বলেছেন। এই অভিযোগ প্রধানত ভারতীয় মিডিয়ার যে বিকৃত তথ্যপ্রবাহ সৃষ্টি করেছে, তার ভিত্তিতে এগুলো বিভিন্নজন বিভিন্ন জায়গায় বলে বেড়াচ্ছে। বাংলাদেশের সংখ্যালঘু ভারতের বিষয় হতে পারে না। বাংলাদেশের সংখ্যালঘু বাংলাদেশের বিষয়। ভারতের সংখ্যালঘুর বিষয়টি আবার তাদের বিষয়। কাজেই এ ব্যাপারে অন্যের বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতিতে যেতে হবে।

ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং মূলত পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের এই বক্তব্যের পরই বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার বিষয়টি উল্লেখ করলেন।

সবুজদেশ/এসইউ