বাগেরহাট-৪ আসনের উপ-নির্বাচন শনিবার
বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ
করোনা আতংকের মধ্যেই বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) সংসদীয় আসনের উপনির্বাচন শনিবার (২১ মার্চ) অনুষ্ঠিত হবে। সুষ্ঠু ভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করতে ইতিমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন।
শুক্রবার সারা দিন কেন্দ্রগুলোতে ব্যালট, ভোট গ্রহনের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম বিতরণ করা হয়েছে। শনিবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোট গ্রহণ চলবে।
বাগেরহাট-৪ আসনের এই উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট আমিরুল আলম মিলনের সাথে জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাজন কুমার মিস্ত্রী প্রতিদ্বন্দিতা করছেন।
মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা উপজেলার ১৪৩টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহন করা হবে। এই দুই উপজেলার ৩ লাখ ১৬ হাজার ৫শ ১০ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
বাগেরহাট-৪ আসনের উপ-নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ও খুলনা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ইউনুচ আলী জানান, নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। সঠিক ভাবে ভোট গ্রহণের জন্য প্রতিটি কেন্দ্রে কর্মকর্তাদের পাশাপাশি ৫ জন পুলিশ ও ১২ জন আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন।
তিনি বলেন, এই দুই উপজেলায় ২৩ জন নির্বাহী ও দুইজন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, ২১টি পুলিশের ভ্রাম্যমাণ দল, দশটি স্ট্রাইকিং ফোর্স, ১০ প্লাটুন বিজিবি, দুই প্লাটুন কোস্টগার্ড ও র্যাবের ১০টি টিম সার্বক্ষণিক মাঠে থাকবে।
এদিকে করোন প্রতিরোধে রিটানিং কর্মকর্তার পক্ষ থেকে প্রতিটি ব্যানার লাগানো হয়েছে। ৭টি ম্যাসেজ সম্বলিত এই ব্যানারে নিরাপদে ভোট দিয়ে এবং দ্রæত বাড়ি ফিরে যেতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
প্রসংগত, ২০০৮ সাল থেকে এই আসনের নির্বাচিত এমপি ছিলেন, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মোজাম্মেল হোসেন। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাগেরহাট জেলার অন্য তিনটি আসনে আওয়ামীলীগ দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্তরা বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত হলেও এই আসনে বিজয়ী হতে ডা. মোজাম্মেল হোসেনকে নিজ দলের দু’জন বিদ্রোহী প্রার্থীকে মোকাবেলা করতে হয়েছিলো। আর একাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনি ১৯ দলীয় জোট প্রার্থী অধ্যক্ষ আব্দুল আলীমকে (জামায়াত) পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
১০ জানুয়ারি বাগেরহাট-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ডা. মোজাম্মেল হোসেনের মৃত্যু হলে আসনটি শূন্য হয়। গত ৬ ফেরুয়ারি নির্বাচন কমিশন এ আসনে উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে।
১০ জন প্রার্থীকে পিছনে ফেলে এই আসনের উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এ্যাড. আমিরুল আলম মিলন। শনিবার (১৫ ফেরুয়ারি) গণভবনে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ড এবং স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের যৌথসভায় তাকে মনোনয়নের সিদ্ধান্ত হয়।
১৯ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগ বিএনপি ও জাপার তিন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করে। বিএনপি দলীয় প্রার্থী কাজী খায়রুজ্জামান শিপন ঋণ ও কর খেলাপি এবং ঋণ খেলাপির অভিযোগে জাতীয় পার্টির সাজন কুমার মিস্ত্রীর মনোনয়নপত্র বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। পরে আপিলে জাতীয় পার্টির সাজন কুমার মিস্ত্রীর বৈধ হলেও বাতিল হয় কাজী খায়রুজ্জামান শিপনের মনোনয়নপত্র। এরফলে এই আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এ্যাড. আমিরুল আলম মিলন এবং জাতীয় পার্টির সাজন কুমার মিস্ত্রী প্রতিদ্বন্ধিতা করবেন।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যা অ্যাড. আমিরুল আলম মিলন বলেন, সারা জীবন মানুষের ভালোবাসা নিয়ে রাজনীতি করেছি। মানুষের ভালবাসাই আমার সম্বল। বিপুল ভোটের ব্যবধানে এই আসনের জনগন নৌকাকে বিজয়ী করবে বলে তিনি আশা করেন।