ঢাকা ১১:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাবার দান করা রাস্তা কাঁটা ও বাঁশ দিয়ে বন্ধ করলেন ছেলে

 

ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার তালসার গ্রামে বাবার দান করা দীর্ঘদিনের চলাচলের রাস্তা কাঁটা ও বাঁশ দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন তারই ছেলে রবুল ইসলাম। এতে করে তিনটি পাড়ার প্রায় আড়াই হাজার মানুষ পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তালসার গ্রামের পশ্চিম পাড়া, হাজিপাড়া এবং বিশ্বাস পাড়া এলাকার মানুষের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ সড়ক। প্রায় ৬০ বছর আগে জীবিত অবস্থায় গ্রামের মানুষদের চলাচলের জন্য এই রাস্তাটি দান করেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা সুরুজ আলী। তবে বর্তমানে তার ছেলে রবুল ইসলাম ব্যক্তিগত কারণে সেই রাস্তাটি বন্ধ করে দিয়েছেন।

গত ১৮ এপ্রিল রাতে হঠাৎ করেই রবুল ইসলাম রাস্তার ওপর কাঁটা ও বাঁশ দিয়ে যাতায়াত সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেন। সেই থেকে তিনটি পাড়ার হাজারো মানুষ স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, বাজার ও মসজিদে যেতে পারছেন না। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এলাকাবাসী।

বিশ্বাস পাড়ার বাসিন্দা আতিয়ার রহমান পাতা বলেন, “আমার বয়স এখন ৫০ বছরের মতো। আমি ছোটবেলা থেকেই দেখছি, এই রাস্তাটি দিয়ে গ্রামের মানুষ চলাচল করে। এখন হঠাৎ করে সেই রাস্তাটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমরা বিপাকে পড়েছি।”

পাশাপাশি এলাকার আরেকজন বাসিন্দা আব্দুর রশিদ বলেন, “এই রাস্তা দিয়ে গ্রামের ছেলেমেয়েরা প্রতিদিন স্কুল-কলেজে যায়। এটি বন্ধ হওয়ায় অনেক ঘুরপথে যেতে হচ্ছে, সময় এবং কষ্ট দুই-ই বেড়েছে।”

সুরুজ আলীর আরেক ছেলে আবু হানিফ বলেন, “আমার বাবা এই রাস্তাটি জনগণের জন্য দিয়েছিলেন। আমরা ছয় ভাই, তার মধ্যে পাঁচজন এই রাস্তাটি খোলা রাখার পক্ষে। একমাত্র সৎ ভাই রবুল ইসলাম বারবার এটি বন্ধ করে দিচ্ছে। আমরা চাই, প্রশাসন দ্রুত হস্তক্ষেপ করে রাস্তা খুলে দিক এবং স্থায়ী সমাধানের ব্যবস্থা করুক।”

রবুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও, তিনি কল রিসিভ না করায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোটচাঁদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আনিসুল ইসলাম বলেন, “এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

তবে উপজেলা প্রশাসনের উপপ্রশাসনিক কর্মকর্তা ইন্দ্রজিৎ সাহা জানিয়েছেন, এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে একটি আবেদন দাখিল করা হয়েছে। ইউএনও স্যার বর্তমানে ঝিনাইদহে থাকায় আবেদনটি এখনও জমা দেওয়া সম্ভব হয়নি। আগামীকাল তারা পুনরায় এসে আবেদন জমা দেবেন বলে জানিয়েছেন।

সবুজদেশ/এসইউ

বাবার দান করা রাস্তা কাঁটা ও বাঁশ দিয়ে বন্ধ করলেন ছেলে

Update Time : ০৮:৪৯:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫

 

ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার তালসার গ্রামে বাবার দান করা দীর্ঘদিনের চলাচলের রাস্তা কাঁটা ও বাঁশ দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন তারই ছেলে রবুল ইসলাম। এতে করে তিনটি পাড়ার প্রায় আড়াই হাজার মানুষ পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তালসার গ্রামের পশ্চিম পাড়া, হাজিপাড়া এবং বিশ্বাস পাড়া এলাকার মানুষের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ সড়ক। প্রায় ৬০ বছর আগে জীবিত অবস্থায় গ্রামের মানুষদের চলাচলের জন্য এই রাস্তাটি দান করেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা সুরুজ আলী। তবে বর্তমানে তার ছেলে রবুল ইসলাম ব্যক্তিগত কারণে সেই রাস্তাটি বন্ধ করে দিয়েছেন।

গত ১৮ এপ্রিল রাতে হঠাৎ করেই রবুল ইসলাম রাস্তার ওপর কাঁটা ও বাঁশ দিয়ে যাতায়াত সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেন। সেই থেকে তিনটি পাড়ার হাজারো মানুষ স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, বাজার ও মসজিদে যেতে পারছেন না। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এলাকাবাসী।

বিশ্বাস পাড়ার বাসিন্দা আতিয়ার রহমান পাতা বলেন, “আমার বয়স এখন ৫০ বছরের মতো। আমি ছোটবেলা থেকেই দেখছি, এই রাস্তাটি দিয়ে গ্রামের মানুষ চলাচল করে। এখন হঠাৎ করে সেই রাস্তাটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমরা বিপাকে পড়েছি।”

পাশাপাশি এলাকার আরেকজন বাসিন্দা আব্দুর রশিদ বলেন, “এই রাস্তা দিয়ে গ্রামের ছেলেমেয়েরা প্রতিদিন স্কুল-কলেজে যায়। এটি বন্ধ হওয়ায় অনেক ঘুরপথে যেতে হচ্ছে, সময় এবং কষ্ট দুই-ই বেড়েছে।”

সুরুজ আলীর আরেক ছেলে আবু হানিফ বলেন, “আমার বাবা এই রাস্তাটি জনগণের জন্য দিয়েছিলেন। আমরা ছয় ভাই, তার মধ্যে পাঁচজন এই রাস্তাটি খোলা রাখার পক্ষে। একমাত্র সৎ ভাই রবুল ইসলাম বারবার এটি বন্ধ করে দিচ্ছে। আমরা চাই, প্রশাসন দ্রুত হস্তক্ষেপ করে রাস্তা খুলে দিক এবং স্থায়ী সমাধানের ব্যবস্থা করুক।”

রবুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও, তিনি কল রিসিভ না করায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোটচাঁদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আনিসুল ইসলাম বলেন, “এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

তবে উপজেলা প্রশাসনের উপপ্রশাসনিক কর্মকর্তা ইন্দ্রজিৎ সাহা জানিয়েছেন, এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে একটি আবেদন দাখিল করা হয়েছে। ইউএনও স্যার বর্তমানে ঝিনাইদহে থাকায় আবেদনটি এখনও জমা দেওয়া সম্ভব হয়নি। আগামীকাল তারা পুনরায় এসে আবেদন জমা দেবেন বলে জানিয়েছেন।

সবুজদেশ/এসইউ