সবুজদেশ ডেস্কঃ

ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় সম্প্রতি খোঁজ মিলেছে বাস্তবের এক ‘মোগলি’র। তার নাম জাঞ্জিমান এলি। সারাদিন এলি জঙ্গলে ঘুরে ঘাস-পাতা কিংবা কলা খেয়ে থাকেন। আসলে ছোট থেকেই এলি বিরল রোগের শিকার। বছর ২১-এর এলি তাই সভ্য সমাজ থেকে দূরে, জঙ্গলেই বানিয়েছে তার নিজের জীবন। কিন্তু সম্প্রতি তার ও তার মায়ের দুর্দশার কথা প্রকাশ্যে এসেছে একটি টেলিভিশন চ্যানেলের দৌলতে। আর সেই চ্যানেল কর্তৃপক্ষই এবার দাঁড়াতে চলেছে এলির পাশে।

তথাকথিত সভ্য এবং আধুনিক সমাজের আদব-কায়দা এলি বোঝে না। বোঝে না সামাজিক কোনও নিয়মকানুন। কথাও বলতে পারে না। সাধারণ মানুষের থেকে একদম আলাদা। রাতদিন জঙ্গলের মধ্যেই কাটে তার ও তার মায়ের সময়। জংলি পশু-পাখিরাই তার বন্ধু। ‘আফ্রিম্যাক্স’ নামের এক টেলিভিশন চ্যানেল কর্তৃপক্ষ ‘গো ফান্ড মি’ নামের একটি পেজ খুলেছেন। সেখানে চ্যানেল কর্তৃপক্ষের তরফে আবেদন করে লেখা হয়েছে, ‘এই একলা মা ও তার সন্তানকে সাহায্য করুন। ওদের কোনও উপার্জন নেই। তাই খাদ্যের অভাবে ভুগছে পরিবারটি। ছেলেটিকে জঙ্গলে গিয়ে ঘাস খেতে হয়। আসুন এই ছেলেটি ও তার মায়ের জীবন বাঁচাই।’ সেই আবেদনের পরেই বিপুল সাড়া মিলেছে। এরই মধ্যে উঠে গিয়েছে প্রায় ৪ হাজার ডলার। সকলকেই আবেদন করা হয়েছে সাহায্যের।

জানা গিয়েছে যে, এলি তার বাবা-মায়ের ষষ্ঠ সন্তান। এলির আগে তার বাবা-মায়ের পাঁচটি সন্তানই জন্মানোর পরই মারা যায়। তাই এলিই তাদের কাছে সবেধন নীলমণি। কিন্তু সেই এলি ছোট থেকেই বিরল রোগে আক্রান্ত। কথা বলতে পারে না। তার মাথা বাকি শরীরের তুলনায় অনেকটাই ছোট। সেই কারণেই তাকে পাড়া-প্রতিবেশীরাও খেপাত।

এরপরই এলিকে নিয়ে জঙ্গলের জীবন বেছে নেয় তার মা। কোনও সভ্য সমাজের মানুষকেই এলি নিজের ধারেকাছে আসতে দেন না। কেউ কাছে আসার চেষ্টা করলেই, এলি দৌড়ে পালিয়ে যায় জঙ্গলের গভীরে। এলি’র মা জানিয়েছেন, মাঝেমধ্যে সপ্তাহে ২৩০ কিলোমিটারও দৌড়ে ফেলে সে। এলি যখন গ্রামে থাকত, তখন ছোটদের সঙ্গে বড়রাও এলিকে মাঝেমধ্যে খেপিয়ে তুলত, মারধর করত। স্থানীয়দের অনেকেই এলিকে মানুষ নয়, বিশেষ কোনও প্রাণী হিসেবে দেখত। এই কারণেই এলি মানুষকে খুব একটা পছন্দ করেন না। তবে, এবার আবার এলি ফিরে আসতে পারে সভ্য সমাজে। সেই উদ্যোগই নেয়া হয়েছে।

সূত্র: টাইমস নাউ

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here