বাড়িতে মায়ের মরদেহ, পরীক্ষা দিয়ে এসে চিতায় আগুন দিল লিখন
যশোরঃ
মায়ের মৃত্যুতে বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। মায়ের মরদেহ বাড়িতে রেখেই এসএসসি পরীক্ষা দিল লিখন চক্রবর্তী। পরীক্ষা দিয়ে ফিরে বিকালে মায়ের চিতায় আগুন দেয় সে।
লিখন চক্রবর্তী মনিরামপুর পৌর এলাকার তাহেরপুর গ্রামের সন্তোষ চক্রবর্তীর ছেলে। সে এবার যশোরের মনিরামপুর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। লিখন ওই বিদ্যালয়ের সবচেয়ে ভালো ছাত্র।
জানা যায়, সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে লিখনের মা মল্লিকা চক্রবর্তী (৫২) পরলোক গমন করেন। পর দিন মঙ্গলবার ছিল লিখনের গণিত পরীক্ষা। পরীক্ষা দিয়ে বিকালে পৌরসভার তাহেরপুর মহাশ্মশানে লিখন মায়ের শেষকৃত্যানুষ্ঠান সম্পন্ন করে।
এখনও বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। শোকাবহ পরিবেশের মধ্যে আজ বুধবার সকালে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) পরীক্ষা দেয় লিখন।
লিখনের বাবা সন্তোষ চক্রবর্তী জানান, সোমবার রাত অনুমান সাড়ে ৮টার দিকে তার স্ত্রী মল্লিকা চক্রবর্তী পরলোক গমন করেন। দীর্ঘদিন তিনি স্নায়ুজনিত রোগে ভুগছিলেন। তার তিন মেয়ে, যাদের বিয়ে দেয়া হয়েছে। লিখন তাদের একমাত্র ছেলে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় উন্নত চিকিৎসা করানোর পরও তিনি স্ত্রীকে বাঁচাতে পারেননি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল লতিফ জানান, লিখন ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত সব পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেছে। এবারের এসএসসি পরীক্ষায়ও সে ঈর্ষণীয় ফল অর্জন করবে বলে তিনি আশাবাদী।
বোন মাধবী চক্রবর্তী জানায়, পরিবারের সবার প্রিয় এবং ছোট ভাই লিখনের এখনও ৮টি পরীক্ষা বাকি রয়েছে। একদিকে মায়ের শোক কোনোভাবেই সইতে পারছে না। অন্যদিকে ভাইয়ের পড়ালেখা এবং পরীক্ষা নিয়ে আমরা শোকে পাথর হয়ে পড়েছি।