ঢাকা ১০:২৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিএনপির কাছে ক্ষমতার ভারসাম্যের ফয়সালা চান বৃহত্তর ঐক্যের নেতারা

Reporter Name

সবুজদেশ ডেক্সঃ  বিএনপির কাছে ‘ক্ষমতার ভারসাম্যের’ ফয়সালা চান জাতীয় ঐক্যের নেতারা। বিশেষ করে আগামীতে ক্ষমতায় গেলে রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য ও সরকার পরিচালনার একটি সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা বা রূপরেখা এখনই তৈরি করার পক্ষে তারা। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে শিগগিরই এ নিয়ে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের নেতারা একটি আইনি ও রাজনৈতিক চুক্তি করবেন বলে জানা গেছে। বিষয়টি সুরাহা করতে গতকাল রাতে বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করেন ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতারা। ধীর গতিতে এগিয়ে চলা জাতীয় ঐক্যের নেতারা বলছেন, এখন তারা বিএনপির সঙ্গে আর কোনো দফায় আটকে নেই। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারসহ পাঁচ দফা দাবিতে সবাই একমত হয়েছেন। এখন ক্ষমতার ‘ভারসাম্য’ রক্ষায় বিএনপি প্রতিশ্রুতি দিলে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য অনেক দূর এগিয়ে যাবে। এরপর শুধু ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচি গ্রহণে লিয়াজোঁ কমিটি গঠন এবং আন্দোলনের রূপরেখা তৈরি করে তা বাস্তবায়ন করা হবে। জানা যায়, বৃহত্তর ঐক্যের সরকার ক্ষমতায় গেলে রাষ্ট্রের ভারসাম্য কীভাবে হবে এ নিয়ে যুক্তফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা সম্প্রতি নিজেদের মধ্যে বৈঠক করেন। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চান গণফোরাম ও ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতারাও। এরপরই গতকাল বিষয়টি বিএনপির কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে ধরা হলো। তবে বিএনপির সঙ্গে জাতীয় ঐক্যের শর্ত হিসেবে ‘দেড়শ আসন’ জুড়ে দিয়ে বিকল্প ধারার এক নেতার বক্তব্যতে এখন আর থেমে নেই যুক্তফ্রন্টের নেতারা। এ নিয়ে বিএনপিতে ব্যাপক ‘অস্বস্তি’ তৈরি হয়। থমকে যায় জাতীয় ঐক্যের গতি। তবে যুক্তফ্রন্টের নেতারা এখন বলছেন, বৃহত্তর ঐক্যের জন্য তারা এখন আসন সংখ্যায় ছাড় দিতেও রাজি। তবে ‘ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষায়’ কোনো ছাড় দিতে চান না যুক্তফ্রন্ট নেতারা। তারা আশা করছেন, বিএনপিও এ বিষয়ে সুস্পষ্ট ঘোষণা দেবে। এরপর একটি ‘গাইডলাইন’ তৈরি করা হবে। আন্দোলন কর্মসূচিও একসঙ্গে করার পক্ষে তারা। এ প্রসঙ্গে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘বিএনপির সঙ্গে আমাদের দফা নিয়ে আর কোনো ঝামেলা নেই। তাদের দাবির সঙ্গে আমাদের দাবিরও মিল রয়েছে। তবে আমরা বিএনপির কাছে ক্ষমতার ভারসাম্য নিয়ে একটি সুস্পষ্ট বক্তব্য চাই। আমরা আসন বণ্টন নিয়ে এখনই কোনো সুরাহা চাচ্ছি না। এটা সময়মতো হবে। আশা করছি, বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য খুব শিগগিরই ঐক্যবদ্ধভাবে কর্মসূচি দিয়ে মাঠে নামবে।’ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডি সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন বলেন, ‘বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ায় ছোট বড় দল থাকতে পারে। সবাই সমান হবে না এটাও ঠিক। তবে বৃহত্তর ঐক্যের পক্ষের শক্তি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় গেলে দেশ পরিচালনায় একটি সুনির্দিষ্ট ‘গাইডলাইন’ থাকবে হবে। প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব কর্তব্য কী হবে, রাষ্ট্রপতির হাতে পর্যাপ্ত ক্ষমতা থাকবে কি না এ বিষয়ে আইনি ও রাজনৈতিক ‘গাইডলাইন’ তৈরি করা হবে।’ এ দিকে মহানগর নাট্যমঞ্চে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য ঘোষণার পরও প্রতিটি দলই বিচ্ছিন্নভাবে কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে উদ্যোক্তারা। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপি এককভাবে জনসভা করে। সেখানে বৃহত্তর ঐক্যের নেতাদের এমনটি ২০-দলীয় জোটকেও ডাকা হয়নি। এ ছাড়া সম্প্রতি অধ্যাপক ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী, আ স ম আবদুর রব ও মাহমুদুর রহমান মান্না নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্ট পৃথকভাবে বৈঠক করে। সেখানে ড. কামাল হোসেনের কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না। অন্যদিকে গতকাল ড. কামাল হোসেন নেতৃত্বাধীন ঐক্য প্রক্রিয়ার ব্যানারে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে একটি মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ড. কামাল, মোস্তফা মহসিন মন্টু, মোস্তফা আমিন ও ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর ছাড়া জাতীয় ঐক্যের কোনো নেতাকে দেখা যায়নি। তবে একই সময়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিতে বিএনপির এক অনুষ্ঠানে জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না ও বিগত তত্ত্বাবধায়ক সকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে দেখা গেছে।

গঠনের পর আন্দোলনের রূপরেখা : জাতীয় ঐক্যের নেতারা বলছেন, শিগগিরই বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের দলগুলোতে একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করা হবে। এরপরই আন্দোলনের রূপরেখা তৈরি করা হবে। একসঙ্গে কর্মসূচির পাশাপাশি রাজপথের আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার উদ্যোক্তারা। এক নেতা জানান, এক সপ্তাহের মধ্যেই লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করা হবে। বিএনপি, বিকল্পধারা, গণফোরাম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল ও নাগরিক ঐক্যের সেক্রেটারি পর্যায়ে এ লিয়োজোঁ কমিটি হতে পারে। বিএনপির ক্ষেত্রে একজন ভাইস চেয়ারম্যান পর্যায়ের নেতা এবং অন্য দলগুলোর সেক্রেটারি পর্যায়ের নেতা ‘লিয়াজোঁ’ কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন। এরপরই পাঁচ দফা দাবি নিয়ে রাজপথে একসঙ্গে নামবে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের নেতারা। এ প্রসঙ্গে গণফোরাম সভাপতি মোস্তফা মহসিন মন্টু বলেন, ‘রাষ্ট্রের ব্যালেন্স না থাকার কারণে বারবার দুর্ঘটনা ঘটে। সবার মঙ্গলের জন্যই আমরা যারা জাতীয় ঐক্য করতে যাচ্ছি, তাদের মধ্যে যেমন রাজনৈতিক সমঝোতা হবে ঠিক তেমনি ক্ষমতায় গেলে রাষ্ট্র পরিচালনায় ভারসাম্য রক্ষা হবে। বিএনপি বা যুক্তফ্রন্টের সঙ্গে আমাদের কোথাও অনৈক্য নেই। দাবিগুলোও এক। দু-একটি বিষয়ে সুরাহা হলেই শিগগিরই লিয়াজোঁ কমিটি হবে। এরপর একসঙ্গে আন্দোলন-কর্মসূচির রূপরেখা তৈরি হবে।’

বিএনপির সঙ্গে জাতীয় ঐক্যের নেতাদের বৈঠক : গতকাল রাতে বিএনপি নেতাদের সঙ্গে জাতীয় ঐক্যের নেতারা বৈঠক করেছেন। গুলশানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বাসায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিএনপির পক্ষে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ অংশ নেন। বিকল্পধারার প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না ও গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠক সূত্রে জানা যায়, আলোচনার বড় অংশজুড়েই ছিল বিএনপির সঙ্গে জোটে গেলে কীভাবে ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠিত হবে, নির্বাচনী আসন বণ্টন কীভাবে হবে, কার নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা হবে—এসব ইস্যুতে। এ নিয়ে নেতারা খোলামেলা কথা বলেন। ক্ষমতায় গেলে বড় দল যেন স্বেচ্ছাচারী না হয়ে ওঠে এ ব্যাপারেও তারা কথা বলেন।

About Author Information
আপডেট সময় : ০২:১৬:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ অক্টোবর ২০১৮
৯১৭ Time View

বিএনপির কাছে ক্ষমতার ভারসাম্যের ফয়সালা চান বৃহত্তর ঐক্যের নেতারা

আপডেট সময় : ০২:১৬:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ অক্টোবর ২০১৮

সবুজদেশ ডেক্সঃ  বিএনপির কাছে ‘ক্ষমতার ভারসাম্যের’ ফয়সালা চান জাতীয় ঐক্যের নেতারা। বিশেষ করে আগামীতে ক্ষমতায় গেলে রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য ও সরকার পরিচালনার একটি সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা বা রূপরেখা এখনই তৈরি করার পক্ষে তারা। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে শিগগিরই এ নিয়ে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের নেতারা একটি আইনি ও রাজনৈতিক চুক্তি করবেন বলে জানা গেছে। বিষয়টি সুরাহা করতে গতকাল রাতে বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করেন ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতারা। ধীর গতিতে এগিয়ে চলা জাতীয় ঐক্যের নেতারা বলছেন, এখন তারা বিএনপির সঙ্গে আর কোনো দফায় আটকে নেই। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারসহ পাঁচ দফা দাবিতে সবাই একমত হয়েছেন। এখন ক্ষমতার ‘ভারসাম্য’ রক্ষায় বিএনপি প্রতিশ্রুতি দিলে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য অনেক দূর এগিয়ে যাবে। এরপর শুধু ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচি গ্রহণে লিয়াজোঁ কমিটি গঠন এবং আন্দোলনের রূপরেখা তৈরি করে তা বাস্তবায়ন করা হবে। জানা যায়, বৃহত্তর ঐক্যের সরকার ক্ষমতায় গেলে রাষ্ট্রের ভারসাম্য কীভাবে হবে এ নিয়ে যুক্তফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা সম্প্রতি নিজেদের মধ্যে বৈঠক করেন। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চান গণফোরাম ও ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতারাও। এরপরই গতকাল বিষয়টি বিএনপির কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে ধরা হলো। তবে বিএনপির সঙ্গে জাতীয় ঐক্যের শর্ত হিসেবে ‘দেড়শ আসন’ জুড়ে দিয়ে বিকল্প ধারার এক নেতার বক্তব্যতে এখন আর থেমে নেই যুক্তফ্রন্টের নেতারা। এ নিয়ে বিএনপিতে ব্যাপক ‘অস্বস্তি’ তৈরি হয়। থমকে যায় জাতীয় ঐক্যের গতি। তবে যুক্তফ্রন্টের নেতারা এখন বলছেন, বৃহত্তর ঐক্যের জন্য তারা এখন আসন সংখ্যায় ছাড় দিতেও রাজি। তবে ‘ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষায়’ কোনো ছাড় দিতে চান না যুক্তফ্রন্ট নেতারা। তারা আশা করছেন, বিএনপিও এ বিষয়ে সুস্পষ্ট ঘোষণা দেবে। এরপর একটি ‘গাইডলাইন’ তৈরি করা হবে। আন্দোলন কর্মসূচিও একসঙ্গে করার পক্ষে তারা। এ প্রসঙ্গে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘বিএনপির সঙ্গে আমাদের দফা নিয়ে আর কোনো ঝামেলা নেই। তাদের দাবির সঙ্গে আমাদের দাবিরও মিল রয়েছে। তবে আমরা বিএনপির কাছে ক্ষমতার ভারসাম্য নিয়ে একটি সুস্পষ্ট বক্তব্য চাই। আমরা আসন বণ্টন নিয়ে এখনই কোনো সুরাহা চাচ্ছি না। এটা সময়মতো হবে। আশা করছি, বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য খুব শিগগিরই ঐক্যবদ্ধভাবে কর্মসূচি দিয়ে মাঠে নামবে।’ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডি সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন বলেন, ‘বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ায় ছোট বড় দল থাকতে পারে। সবাই সমান হবে না এটাও ঠিক। তবে বৃহত্তর ঐক্যের পক্ষের শক্তি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় গেলে দেশ পরিচালনায় একটি সুনির্দিষ্ট ‘গাইডলাইন’ থাকবে হবে। প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব কর্তব্য কী হবে, রাষ্ট্রপতির হাতে পর্যাপ্ত ক্ষমতা থাকবে কি না এ বিষয়ে আইনি ও রাজনৈতিক ‘গাইডলাইন’ তৈরি করা হবে।’ এ দিকে মহানগর নাট্যমঞ্চে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য ঘোষণার পরও প্রতিটি দলই বিচ্ছিন্নভাবে কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে উদ্যোক্তারা। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপি এককভাবে জনসভা করে। সেখানে বৃহত্তর ঐক্যের নেতাদের এমনটি ২০-দলীয় জোটকেও ডাকা হয়নি। এ ছাড়া সম্প্রতি অধ্যাপক ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী, আ স ম আবদুর রব ও মাহমুদুর রহমান মান্না নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্ট পৃথকভাবে বৈঠক করে। সেখানে ড. কামাল হোসেনের কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না। অন্যদিকে গতকাল ড. কামাল হোসেন নেতৃত্বাধীন ঐক্য প্রক্রিয়ার ব্যানারে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে একটি মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ড. কামাল, মোস্তফা মহসিন মন্টু, মোস্তফা আমিন ও ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর ছাড়া জাতীয় ঐক্যের কোনো নেতাকে দেখা যায়নি। তবে একই সময়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিতে বিএনপির এক অনুষ্ঠানে জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না ও বিগত তত্ত্বাবধায়ক সকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে দেখা গেছে।

গঠনের পর আন্দোলনের রূপরেখা : জাতীয় ঐক্যের নেতারা বলছেন, শিগগিরই বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের দলগুলোতে একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করা হবে। এরপরই আন্দোলনের রূপরেখা তৈরি করা হবে। একসঙ্গে কর্মসূচির পাশাপাশি রাজপথের আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার উদ্যোক্তারা। এক নেতা জানান, এক সপ্তাহের মধ্যেই লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করা হবে। বিএনপি, বিকল্পধারা, গণফোরাম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল ও নাগরিক ঐক্যের সেক্রেটারি পর্যায়ে এ লিয়োজোঁ কমিটি হতে পারে। বিএনপির ক্ষেত্রে একজন ভাইস চেয়ারম্যান পর্যায়ের নেতা এবং অন্য দলগুলোর সেক্রেটারি পর্যায়ের নেতা ‘লিয়াজোঁ’ কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন। এরপরই পাঁচ দফা দাবি নিয়ে রাজপথে একসঙ্গে নামবে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের নেতারা। এ প্রসঙ্গে গণফোরাম সভাপতি মোস্তফা মহসিন মন্টু বলেন, ‘রাষ্ট্রের ব্যালেন্স না থাকার কারণে বারবার দুর্ঘটনা ঘটে। সবার মঙ্গলের জন্যই আমরা যারা জাতীয় ঐক্য করতে যাচ্ছি, তাদের মধ্যে যেমন রাজনৈতিক সমঝোতা হবে ঠিক তেমনি ক্ষমতায় গেলে রাষ্ট্র পরিচালনায় ভারসাম্য রক্ষা হবে। বিএনপি বা যুক্তফ্রন্টের সঙ্গে আমাদের কোথাও অনৈক্য নেই। দাবিগুলোও এক। দু-একটি বিষয়ে সুরাহা হলেই শিগগিরই লিয়াজোঁ কমিটি হবে। এরপর একসঙ্গে আন্দোলন-কর্মসূচির রূপরেখা তৈরি হবে।’

বিএনপির সঙ্গে জাতীয় ঐক্যের নেতাদের বৈঠক : গতকাল রাতে বিএনপি নেতাদের সঙ্গে জাতীয় ঐক্যের নেতারা বৈঠক করেছেন। গুলশানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বাসায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিএনপির পক্ষে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ অংশ নেন। বিকল্পধারার প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না ও গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠক সূত্রে জানা যায়, আলোচনার বড় অংশজুড়েই ছিল বিএনপির সঙ্গে জোটে গেলে কীভাবে ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠিত হবে, নির্বাচনী আসন বণ্টন কীভাবে হবে, কার নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা হবে—এসব ইস্যুতে। এ নিয়ে নেতারা খোলামেলা কথা বলেন। ক্ষমতায় গেলে বড় দল যেন স্বেচ্ছাচারী না হয়ে ওঠে এ ব্যাপারেও তারা কথা বলেন।