বিনামূল্যের বই কাণ্ডে তদন্ত কমিটি গঠন, সেই প্রধান শিক্ষককে শোকজ
বিশেষ প্রতিনিধিঃ
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বছরের প্রথম দিনের বই উৎসবে সেশন ফি ও উন্নয়ন ফি নেওয়ার অযুহাতে টাকা নেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে শোকজ করা হয়েছে।
জানা গেছে, সরকার কর্তৃক প্রদত্ত বিনামুল্যেও বই নিতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে। এই টাকা গুলো সেশন ফি ও উন্নয়ন ফি’র অযুহাতে নেওয়া হয়েছে। টাকা দিতে না পারায় বই না নিয়েই খালি হাতে ফিরতে হয়েছে তাদের। এ নিয়ে স্থানীয় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এ নিয়ে গত ৪ জানুয়ারি “কালীগঞ্জে টাকা ছাড়া বই দিলেন না প্রধান শিক্ষক, কাঁদতে কাঁদতে ফিরল শিক্ষার্থীরা” শিরোনামে সবুজ দেশ নিউজ ডটকমে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর টনক নড়ে স্থানীয় প্রশাসনের। এর পরের দিন ৬ জানুয়ারি কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুবর্ণা রাণী সাহা ওই বিদ্যালয়ে যান এবং সব শিক্ষার্থীর বই প্রদান নিশ্চিত করেন।
মঙ্গলবার এ ঘটনার অনুসন্ধানে বিদ্যালয়ে যান এই প্রতিবেদকসহ কয়েকজন গণমাধ্যম কর্মী। এ সময় হঠাৎ অফিস কক্ষ থেকে বেরিয়ে এসে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে অসৌজন্যমুলক আচরণ শুরু করেন প্রধান শিক্ষক চিত্তরঞ্জন পাল। প্রথম দিকে বক্তব্য দিতে নারাজ থাকলেও পরে তিনি বক্তব্য দিতে রাজি হন।
শাহজাহান আলী নামের এক অবিভাবক বলেন, আমার মেয়েকে প্রথমে বই দেওয়া হয়নি। সে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি এসে বলে ২৫০ টাকা না দিলে বই দিবে না। এরপর আমি নিজে স্কুলে গিয়ে টাকা দেওয়ার পর আমার মেয়েকে বই দেওয়া হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক অবিভাবক বলেন, সরকার যেখানে বিনামূল্যে বই প্রদান করছে, সেখানে টাকা নিয়ে বই দেওয়ার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নিতে হবে। এটা সরকার বিরোধী কাজ।
একাধিক শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, তাদের অনেকে টাকা না দেওয়ায় বই না পেয়ে বাড়ি চলে যান। এরপর বাড়ি থেকে টাকা এনে বই নেয়। ২০০ থেকে ২৫০ টাকা করে বই বাবদ টাকা নেওয়া হয়।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক চিত্তরঞ্জন পাল এর আগে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, বাৎসরিক সেশন ফি বাবদ টাকা নেয়া হচ্ছে । আর কাউকে টাকা ছাড়া বই দেয়া হয়নি সেটা আমার জানানেই। মঙ্গলবার তিনি টাকা নিয়ে বই দেওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেন।
এ ব্যাপারে স্কুলটির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সূবর্ণা রানী সাহা জানান, এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে কমিটির সংখ্যা ও নাম প্রকাশ করতে তিনি রাজি হননি। প্রধান শিক্ষকে শোকজ করা হয়েছে। ২/১ দিনের মধ্যে তিনি হাতে পাবেন।
(শিক্ষার্থী ও অবিভাবকদের এসব অভিযোগের ভিডিও রেকর্ড সবুজদেশ ডটকমের কাছে সংরক্ষিত আছে)
আরো পড়ুনঃ- কালীগঞ্জে টাকা ছাড়া বই দিলেন না প্রধান শিক্ষক, কাঁদতে কাঁদতে ফিরল শিক্ষার্থীরা