শহীদ আবরারের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে বুয়েট ভিসি।

কুষ্টিয়াঃ

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হাতে নিহত তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের রায়ডাঙ্গা গ্রামের বাড়িতে পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে এসেছিলেন। কিন্তু গ্রামবাসীর তোপের মুখে পালিয়েছেন বুয়েট উপাচার্য সাইফুল ইসলাম।

বুধবার বিকেল ৫টার দিকে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ মিছিল ও স্থানীয় লোকজনের প্রতিরোধের মুখে ভিসি সাইফুল ইসলাম পালিয়ে ওই এলাকা ত্যাগ করেন।

এদিকে বুয়েট ভিসি আসা নিয়ে গ্রামবাসী বলছেন, বুয়েট ভিসি তার ছাত্রের মরদেহ দেখে না কবর দেখে। আবরারের মৃত্যুর আগে অনেকেবার তার সহপাঠিরা ভিসিকে ফোন করে আবরারের উপর নির্যাতন হচ্ছে বলে জানিয়েছেন। কিন্তু ভিসি ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা তার উপর নির্যাতন করছে বলে কান মুখ নড়াননি। তারপর আবরারের মৃত্যু খবর জানালেও তার মরদেহ দেখতে আসেননি। আজ নাটক করতে এসেছেন বুয়েটের খুনি উপাচার্য। খুনি উপাচার্যর বিচার চান তারা।

এর আগে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে রায়ডাঙ্গা গ্রামে যান উপাচার্য সাইফুল ইসলাম, পরে তিনি আবরারের কবর জিয়ারত করেন। এসময় আবরার ফাহাদের পিতা বরকত উল্লাহ, ছোট ভাই আবরার ফাইজ ও পরিবারের অন্যন্য সদস্যরাসহ জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন, পুলিশ সুপার তানভীর আরাফাত, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আজগর আলী,জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী রবিউল ইসলাম, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা, কুষ্টিয়া প্রেসক্লাব-কেপিসির সভাপতি রাশেদুল ইসলাম বিপ্লবসহ গ্রামবাসীরা উপস্থিত ছিলেন।

তারপর আবরার ফাহাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে হেঁটে রওনা হন তিনি। কিছু দুর গিয়েই গ্রামবাসীর তোপের মুখে পড়েন। আবরার ফাহাদের পিতার সাথে দেখা হলেও তবে তার বাড়িতে ঢুকতে পারেননি উপাচার্য।

এ অবস্থায় বাড়িতে ঢোকার সময় উপাচার্যকে বাধা দেয় গ্রামবাসী। আবরারের বাড়ি ঢোকার মুখে ভিসির গাড়ির সামনে শুয়ে পড়েন এক নারী ওই নারী উপর মারধর করে পুলিশ। পুলিশ লাঠিচার্জ করে ধাওয়া দিলে তারা এলাকাসী পালিয়ে যান। এসময় আবরারের ছোট ভাই আবরার ফায়াজকে মারধর করা হয়।

উপাচার্যের যাওয়ার কথা শুনে স্থানীয় শত শত নারী-পুরুষ আবরারদের গ্রামের বাড়ির সামনের সড়কে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপাচার্যকে ঘিরে ধরেন। এই পরিস্থিতিতে আবরারের মায়ের সঙ্গে দেখা না করে উপাচার্য পুলিশ প্রহরায় রায়ডাঙ্গা গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যান।

আবরার ফাহাদের পিতা বরকত উল্লাহ বলেন,আবরারের মৃত্যুর পর বুয়েট উপাচার্যর কাছে গিয়েছিলাম খুব দুর ব্যবহার করেছেন ওইদিন। উপাচার্য কেন আবরারের হত্যাকান্ডের পরপর তার মরদেহ দেখতে গেলেন না। কেন সেখানে উপস্থিত হননি। এখন কেন এসেছেন? সারাদেশবাসী এই নাটক গ্রহন করবে না। আমার বাড়িতে উপাচার্য আসেননি আমাকে ফোন করে আবরারের কবর স্থানে ডেকে নিয়ে আসা হয়েছে। এলাকাবাসী নিষেধ করেছিল। আমি নিজে থেকেই এখানে এসেছিলাম। আর কিছুই চাওয়ার নেই শুধু সন্তান হত্যার বিচার চাই।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here