ঢাকা ০৮:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বেনাপোল ইমিগ্রেশনে উপচেপড়া ভিড়, কাল থেকে যাতায়াত বন্ধ

Reporter Name

বেনাপোলঃ

করোনা ভাইরাস বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের প্রবেশ ঠেকাতে ভারত সরকার সব দেশের ভিসা স্থগিত করেছে। ভিসা স্থগিতের পর পাসপোর্টযাত্রী চলাচল সাময়িক বন্ধের ঘোষণা দিল ভারতীয় ইমিগ্রেশন। চীনসহ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।

ভারতের ভিসা স্থগিতের খবরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে পাসপোর্টযাত্রীসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চিকিৎসা, ব্যবসাসহ প্রয়োজনীয় সব কাজের জন্য ভারতে যেতে উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে বেনাপোল ইমিগ্রেশনে। ভারতের অংশে করোনা ভাইরাস পরীক্ষার যন্ত্রাংশ অচল থাকায় ভোগান্তি বেড়েছে দ্বিগুণ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শুত্রবার (১৩ মার্চ) থেকে আগামী ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত নতুন ভিসা দেয়া হবে না কাউকে। বুধবার রাতে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ সিদ্ধান্তের কথা জানান। নতুন করে ভারত সরকার ভিসা স্থগিত করায় বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে প্রবেশ করতে পারবেন না কোনো পাসপোর্টযাত্রী। তবে কূটনৈতিক, অফিসিয়াল, জাতিসংঘ/আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বিভিন্ন প্রকল্পের ভিসা এ বিধি নিষেধের আওতায় পড়বে না বলে তারা জানিয়েছে। এছাড়া যেসব যাত্রী ভিসা নিয়ে ভারতে অবস্থান বা চিকিৎসা করতে গেছেন তারা নিজ নিজ দেশে ফিরে আসতে পারবেন।

চিকিৎসার জন্য ভারতগামী যাত্রী তৌফিক বলেন, তিনি বেশ কদিন আগে থেকে শুনছিলেন করোনার কারণে ভারতে যাতায়াত বন্ধ হবে। এ কারণে তিনি বন্ধ হওয়ার আগেই যাচ্ছেন। কিন্তু ভারত অংশে স্বাস্থ্য পরীক্ষার নামে হয়রানির কারণে ৩ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও ইমিগ্রেশনে ঢুকতে পারেনি।

চেকপোস্ট কাস্টমসের রাজম্ব কর্মকর্তা কামরুজ্জামান জানান, ভারতের অংশে পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে স্বাস্থ্য পরীক্ষার যন্ত্র অচল থাকায় মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। তবে যাত্রীরা যাতে দ্রুত যেতে পারেন তার জন্য তিনি তাদের অনুরোধ জানিয়েছেন। ১৩ মার্চ থেকে ভারত ভ্রমণে বিদেশি পাসপোর্ট যাত্রীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হলেও বেনাপোল বন্দরে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য আপাতত স্বাভাবিক আছে বলে জানান তিনি।

বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ওসি (তদন্ত) মহাসিন হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার (১২ মার্চ) সকালে ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনে একটি চিঠি পাঠায়। তাতে লেখা আছে শুক্রবার (১৩ মার্চ) রাত ১২টা থেকে নতুন করে কোনো পাসপোর্টধারী যাত্রী গ্রহণ করা হবে না। যে সমস্ত বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী যাত্রী ভারতে ঢুকে আছে তারা ইচ্ছা করলে বেরিয়ে যেতে পারবে। আর ভারতীয় পাসপোর্টধারী যাত্রী যারা বাংলাদেশ আছে তারা ফিরে আসলে তাদের গ্রহণ করা হবে। নতুন করে কোনো পাসপোর্টধারী যাত্রী প্রবেশের অনুমতি দেয়া হবে না। যা ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।

বেনাপোল কাস্টমসের সহকারী কমিশনার উত্তম চাকমা জানান, নতুন করে কোনো পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত করতে পারবে না এমন একটি চিঠির খবর শুনেছি। আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধের কোনো চিঠি বেনাপোল কাস্টমসকে দেয়া হয়নি। যদি এরকম কোনো নির্দেশনা আসে পরে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক (প্রশাসন) আব্দুল জলিল বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে যাত্রী যাতায়াত চলাচল বন্ধ থাকলে ও আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধের কোনো আদেশ আমরা পায়নি। নির্দেশনা পেলে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

About Author Information
আপডেট সময় : ০৭:০৮:৫৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ মার্চ ২০২০
৫২৭ Time View

বেনাপোল ইমিগ্রেশনে উপচেপড়া ভিড়, কাল থেকে যাতায়াত বন্ধ

আপডেট সময় : ০৭:০৮:৫৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ মার্চ ২০২০

বেনাপোলঃ

করোনা ভাইরাস বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের প্রবেশ ঠেকাতে ভারত সরকার সব দেশের ভিসা স্থগিত করেছে। ভিসা স্থগিতের পর পাসপোর্টযাত্রী চলাচল সাময়িক বন্ধের ঘোষণা দিল ভারতীয় ইমিগ্রেশন। চীনসহ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।

ভারতের ভিসা স্থগিতের খবরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে পাসপোর্টযাত্রীসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চিকিৎসা, ব্যবসাসহ প্রয়োজনীয় সব কাজের জন্য ভারতে যেতে উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে বেনাপোল ইমিগ্রেশনে। ভারতের অংশে করোনা ভাইরাস পরীক্ষার যন্ত্রাংশ অচল থাকায় ভোগান্তি বেড়েছে দ্বিগুণ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শুত্রবার (১৩ মার্চ) থেকে আগামী ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত নতুন ভিসা দেয়া হবে না কাউকে। বুধবার রাতে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ সিদ্ধান্তের কথা জানান। নতুন করে ভারত সরকার ভিসা স্থগিত করায় বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে প্রবেশ করতে পারবেন না কোনো পাসপোর্টযাত্রী। তবে কূটনৈতিক, অফিসিয়াল, জাতিসংঘ/আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বিভিন্ন প্রকল্পের ভিসা এ বিধি নিষেধের আওতায় পড়বে না বলে তারা জানিয়েছে। এছাড়া যেসব যাত্রী ভিসা নিয়ে ভারতে অবস্থান বা চিকিৎসা করতে গেছেন তারা নিজ নিজ দেশে ফিরে আসতে পারবেন।

চিকিৎসার জন্য ভারতগামী যাত্রী তৌফিক বলেন, তিনি বেশ কদিন আগে থেকে শুনছিলেন করোনার কারণে ভারতে যাতায়াত বন্ধ হবে। এ কারণে তিনি বন্ধ হওয়ার আগেই যাচ্ছেন। কিন্তু ভারত অংশে স্বাস্থ্য পরীক্ষার নামে হয়রানির কারণে ৩ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও ইমিগ্রেশনে ঢুকতে পারেনি।

চেকপোস্ট কাস্টমসের রাজম্ব কর্মকর্তা কামরুজ্জামান জানান, ভারতের অংশে পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে স্বাস্থ্য পরীক্ষার যন্ত্র অচল থাকায় মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। তবে যাত্রীরা যাতে দ্রুত যেতে পারেন তার জন্য তিনি তাদের অনুরোধ জানিয়েছেন। ১৩ মার্চ থেকে ভারত ভ্রমণে বিদেশি পাসপোর্ট যাত্রীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হলেও বেনাপোল বন্দরে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য আপাতত স্বাভাবিক আছে বলে জানান তিনি।

বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ওসি (তদন্ত) মহাসিন হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার (১২ মার্চ) সকালে ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনে একটি চিঠি পাঠায়। তাতে লেখা আছে শুক্রবার (১৩ মার্চ) রাত ১২টা থেকে নতুন করে কোনো পাসপোর্টধারী যাত্রী গ্রহণ করা হবে না। যে সমস্ত বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী যাত্রী ভারতে ঢুকে আছে তারা ইচ্ছা করলে বেরিয়ে যেতে পারবে। আর ভারতীয় পাসপোর্টধারী যাত্রী যারা বাংলাদেশ আছে তারা ফিরে আসলে তাদের গ্রহণ করা হবে। নতুন করে কোনো পাসপোর্টধারী যাত্রী প্রবেশের অনুমতি দেয়া হবে না। যা ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।

বেনাপোল কাস্টমসের সহকারী কমিশনার উত্তম চাকমা জানান, নতুন করে কোনো পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত করতে পারবে না এমন একটি চিঠির খবর শুনেছি। আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধের কোনো চিঠি বেনাপোল কাস্টমসকে দেয়া হয়নি। যদি এরকম কোনো নির্দেশনা আসে পরে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক (প্রশাসন) আব্দুল জলিল বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে যাত্রী যাতায়াত চলাচল বন্ধ থাকলে ও আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধের কোনো আদেশ আমরা পায়নি। নির্দেশনা পেলে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।