ঢাকা ০৪:২১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বড় হচ্ছে লিফটের বাজার

Reporter Name

কবি আবুল হাসান লিখেছিলেন, ‘দালান উঠছে তাও রাজনীতি, দালান ভাঙছে তাও রাজনীতি। …সমস্যার ছদ্মবেশে আবার আগুন/ উর্বর হচ্ছে, রাজনীতি…।’ আমাদের আলোচ্য বিষয় অবশ্য দালান ওঠার রাজনীতি নয়, বরং অর্থনীতি।

অর্থনীতির মধ্যে আবার দালান ওঠার বাণিজ্য ও ব্যবসায়ের অংশ শুধু। তা-ও আবার পুরো দালান নয়। দালানের সামান্য একটি অংশ, যেখানে একটি যন্ত্র বসানো হয়, ইংরেজিতে যাকে বলে এলিভেটর। এ দেশের মানুষের কাছে এলিভেটরই পরিচিত ‘লিফট’ নামে। আর ওঠানামার জন্য সুউচ্চ অট্টালিকা বা দালানগুলোয় বাধ্যতামূলকভাবে থাকে এই লিফট।রাজধানী ঢাকা, বন্দরনগরী চট্টগ্রামসহ দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে যে বড় বড় অট্টালিকা উঠছে, তা দৃশ্যমান। আর এসব অট্টালিকায় যে লিফট বসছে, তা-ও চোখে পড়ছে সবার। অট্টালিকার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে স্বাভাবিক কারণেই বড় হচ্ছে লিফটের বাজার।

দেশে লিফট তৈরির কোনো কারখানা নেই, অর্থাৎ পণ্যটির বাজার পুরোটাই আমদানিনির্ভর। আমদানি হয় সুইজারল্যান্ড, ফিনল্যান্ড, জাপান, চীন ও দক্ষিণ কোরিয়া থেকে। কেউ কেউ শুধু মোটর ও গতিনিয়ন্ত্রক (স্পিড কন্ট্রোলার) নিয়ে এসে অন্য যন্ত্রাংশ সংযোজন করেও লিফট তৈরি করে থাকে।

লিফট আমদানিকারকদের কোনো অ্যাসোসিয়েশন বা সমিতি নেই। ফলে এ বিষয়ে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্য-উপাত্তও নেই। তবে লিফট আমদানিকারকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মাসে ২০০ লিফট বসছে ঢাকা শহরেই।

ঢাকাসহ সারা দেশে মাসে ২৫০টি লিফট বসলে এবং প্রতিটির দাম গড়ে ২০ লাখ টাকা করে হিসাব করলেও এ বাজারের আকার দাঁড়ায় বছরে ৬০০ কোটি টাকা। ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট, খুলনা ও রাজশাহী হচ্ছে লিফটের বড় বাজার। প্যাসেঞ্জার, হাসপাতাল, ক্যাপসুল, কার্গো, অ্যাকসিলারেটর—এই পাঁচ ধরনের লিফট রয়েছে দেশে। ব্যবহৃত হচ্ছে বাসাবাড়ি, শপিং কমপ্লেক্স, হাসপাতাল ও শিল্পকারখানায়।

লিফট কোম্পানিগুলো সূত্রে জানা গেছে, মানভেদে এগুলোর দাম পড়ে ৫০ থেকে ৬০ লাখ, ২০ থেকে ২৫ লাখ এবং ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা। রাজধানীর গুলশানে ‘বে ওয়াটার এজ’ নামক ভবনে সুইজারল্যান্ডের তৈরি প্রায় কোটি টাকা দামের শিল্ডার ব্র্যান্ডের লিফট বসানো হয়েছে।

আমদানিকারকেরা বলছেন, প্রতিবছরই লিফটের বাজার বাড়ছে। অবকাঠামো উন্নয়ন বিশেষ করে বড় বড় স্থাপনা তৈরির কাজ যত বাড়বে, ততই বাড়বে লিফটের ব্যবহার। এর বড় প্রমাণ হচ্ছে ১০ বছর আগে লিফটের যে বাজার ছিল ২০০ কোটি টাকার, বর্তমানে তা ৬০০ থেকে ৮০০ কোটি টাকায় এসে দাঁড়িয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ৩৮১ মিটার উঁচু অট্টালিকা এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিংয়ে লিফট রয়েছে ৭৩টি। এ ছাড়া বিশ্বের উচ্চতম অট্টালিকা বুর্জ খলিফার (৮১৮ মিটার) কোনো কোনো লিফটের গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটারের বেশি। তবে বিশ্বের সবচেয়ে দামি লিফট হিসেবে এখন পর্যন্ত বিবেচিত চীনের ‘বেলং এলিভেটর’। এর দাম ২ কোটি ডলার। প্রতি ডলার ৮৩ টাকা করে হিসাব করলে দাঁড়ায় ১৬৬ কোটি টাকা। ১ হাজার ৭০ ফুট উচ্চতার এ লিফট বসাতে পাঁচ বছর সময় লেগেছে।

ব্র্যান্ডের লিফট

আমদানিকারকদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশের সবচেয়ে পুরোনো ও বড় লিফট আমদানিকারক কোম্পানি হচ্ছে মান বাংলাদেশ লিমিটেড। আর ব্র্যান্ডের লিফট আমদানিকারক সর্বশেষ কোম্পানি হচ্ছে খান ব্রাদার্স ইক্যুই-বিল্ড লিমিটেড।

খ্যাতিমান উপস্থাপক হানিফ সংকেতের ভাই প্রয়াত হাবিবুর রহমান আশির দশকের মাঝামাঝি চীন থেকে লিফট আমদানি শুরু করেন। এলজিএস ও স্নাইডার ব্র্যান্ডের লিফট হচ্ছে মান বাংলাদেশের প্রধান পণ্য। মোট বাজারের ৩০ শতাংশ কোম্পানিটির দখলে।

জাপানের ব্র্যান্ড মিতসুবিশি আমদানিকারক ইলেকট্রোমেক টেকনিক্যাল অ্যাসোসিয়েটস লিমিটেড। এ কোম্পানির দখলে রয়েছে ১৫ শতাংশ। আর সুইজারল্যান্ডের শিল্ডার ব্র্যান্ডের লিফটের আমদানিকারক ক্রিয়েটিভ ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড, যার দখলে রয়েছে বাজারের ১০ শতাংশ।

এ ছাড়া খান ব্রাদার্স ইক্যুই-বিল্ড লিমিটেড আমদানি করে দক্ষিণ কোরিয়ার সিগমা ব্র্যান্ডের লিফট। এর দখলে রয়েছে ৯ শতাংশ। অর্থাৎ দেশের মোট লিফট চাহিদার অর্ধেকের বেশি মেটাচ্ছে এই চারটি কোম্পানি।

এর বাইরে চীনের এসআরএইচ ও এমপি ব্র্যান্ডের লিফট আমদানিকারক কোম্পানির নাম প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের প্রপার্টি লিফট, জাপানের তোশিবা ব্র্যান্ডের লিফটের আমদানিকারক সিবাটেক করপোরেশন এবং ফিনল্যান্ডের কোন ব্র্যান্ডের লিফটের আমদানিকারক নগর এলিভেটরস। এই আমদানিকারকদের দখলে রয়েছে মোট বাজারের ২ থেকে ৩ শতাংশ। বাজারের বাকি চাহিদা মেটে স্থানীয় সংযোজনকারী বা নন-ব্র্যান্ড লিফটের মাধ্যমে। খরচ কমানোর বিবেচনায় অনেকেই এই নন-ব্র্যান্ড লিফট কিনে থাকে।

খান ব্রাদার্স ইক্যুই-বিল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তোফায়েল কবির খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘দেশের উন্নয়ন হচ্ছে, বড় বড় অট্টালিকা উঠছে, আরও উঠবে। নিরাপত্তার দিক বিবেচনায় এগুলোয় ব্র্যান্ডের লিফট বসানো দরকার এবং পরে এগুলো নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ দরকার।’

জীবন-মৃত্যু বা দুর্ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত হওয়ায় ব্র্যান্ডের লিফট ব্যবহারের পরামর্শ দেন প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল। তিনি বলেন, ‘আগে নিরাপত্তা, তারপর অর্থ। কিন্তু লিফট স্থাপনের ক্ষেত্রে এটা অনেকেই ভুলে যান।’

About Author Information
আপডেট সময় : ০৬:৩৬:৫০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ অগাস্ট ২০১৮
১৪৭৫ Time View

বড় হচ্ছে লিফটের বাজার

আপডেট সময় : ০৬:৩৬:৫০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ অগাস্ট ২০১৮

কবি আবুল হাসান লিখেছিলেন, ‘দালান উঠছে তাও রাজনীতি, দালান ভাঙছে তাও রাজনীতি। …সমস্যার ছদ্মবেশে আবার আগুন/ উর্বর হচ্ছে, রাজনীতি…।’ আমাদের আলোচ্য বিষয় অবশ্য দালান ওঠার রাজনীতি নয়, বরং অর্থনীতি।

অর্থনীতির মধ্যে আবার দালান ওঠার বাণিজ্য ও ব্যবসায়ের অংশ শুধু। তা-ও আবার পুরো দালান নয়। দালানের সামান্য একটি অংশ, যেখানে একটি যন্ত্র বসানো হয়, ইংরেজিতে যাকে বলে এলিভেটর। এ দেশের মানুষের কাছে এলিভেটরই পরিচিত ‘লিফট’ নামে। আর ওঠানামার জন্য সুউচ্চ অট্টালিকা বা দালানগুলোয় বাধ্যতামূলকভাবে থাকে এই লিফট।রাজধানী ঢাকা, বন্দরনগরী চট্টগ্রামসহ দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে যে বড় বড় অট্টালিকা উঠছে, তা দৃশ্যমান। আর এসব অট্টালিকায় যে লিফট বসছে, তা-ও চোখে পড়ছে সবার। অট্টালিকার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে স্বাভাবিক কারণেই বড় হচ্ছে লিফটের বাজার।

দেশে লিফট তৈরির কোনো কারখানা নেই, অর্থাৎ পণ্যটির বাজার পুরোটাই আমদানিনির্ভর। আমদানি হয় সুইজারল্যান্ড, ফিনল্যান্ড, জাপান, চীন ও দক্ষিণ কোরিয়া থেকে। কেউ কেউ শুধু মোটর ও গতিনিয়ন্ত্রক (স্পিড কন্ট্রোলার) নিয়ে এসে অন্য যন্ত্রাংশ সংযোজন করেও লিফট তৈরি করে থাকে।

লিফট আমদানিকারকদের কোনো অ্যাসোসিয়েশন বা সমিতি নেই। ফলে এ বিষয়ে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্য-উপাত্তও নেই। তবে লিফট আমদানিকারকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মাসে ২০০ লিফট বসছে ঢাকা শহরেই।

ঢাকাসহ সারা দেশে মাসে ২৫০টি লিফট বসলে এবং প্রতিটির দাম গড়ে ২০ লাখ টাকা করে হিসাব করলেও এ বাজারের আকার দাঁড়ায় বছরে ৬০০ কোটি টাকা। ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট, খুলনা ও রাজশাহী হচ্ছে লিফটের বড় বাজার। প্যাসেঞ্জার, হাসপাতাল, ক্যাপসুল, কার্গো, অ্যাকসিলারেটর—এই পাঁচ ধরনের লিফট রয়েছে দেশে। ব্যবহৃত হচ্ছে বাসাবাড়ি, শপিং কমপ্লেক্স, হাসপাতাল ও শিল্পকারখানায়।

লিফট কোম্পানিগুলো সূত্রে জানা গেছে, মানভেদে এগুলোর দাম পড়ে ৫০ থেকে ৬০ লাখ, ২০ থেকে ২৫ লাখ এবং ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা। রাজধানীর গুলশানে ‘বে ওয়াটার এজ’ নামক ভবনে সুইজারল্যান্ডের তৈরি প্রায় কোটি টাকা দামের শিল্ডার ব্র্যান্ডের লিফট বসানো হয়েছে।

আমদানিকারকেরা বলছেন, প্রতিবছরই লিফটের বাজার বাড়ছে। অবকাঠামো উন্নয়ন বিশেষ করে বড় বড় স্থাপনা তৈরির কাজ যত বাড়বে, ততই বাড়বে লিফটের ব্যবহার। এর বড় প্রমাণ হচ্ছে ১০ বছর আগে লিফটের যে বাজার ছিল ২০০ কোটি টাকার, বর্তমানে তা ৬০০ থেকে ৮০০ কোটি টাকায় এসে দাঁড়িয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ৩৮১ মিটার উঁচু অট্টালিকা এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিংয়ে লিফট রয়েছে ৭৩টি। এ ছাড়া বিশ্বের উচ্চতম অট্টালিকা বুর্জ খলিফার (৮১৮ মিটার) কোনো কোনো লিফটের গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটারের বেশি। তবে বিশ্বের সবচেয়ে দামি লিফট হিসেবে এখন পর্যন্ত বিবেচিত চীনের ‘বেলং এলিভেটর’। এর দাম ২ কোটি ডলার। প্রতি ডলার ৮৩ টাকা করে হিসাব করলে দাঁড়ায় ১৬৬ কোটি টাকা। ১ হাজার ৭০ ফুট উচ্চতার এ লিফট বসাতে পাঁচ বছর সময় লেগেছে।

ব্র্যান্ডের লিফট

আমদানিকারকদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশের সবচেয়ে পুরোনো ও বড় লিফট আমদানিকারক কোম্পানি হচ্ছে মান বাংলাদেশ লিমিটেড। আর ব্র্যান্ডের লিফট আমদানিকারক সর্বশেষ কোম্পানি হচ্ছে খান ব্রাদার্স ইক্যুই-বিল্ড লিমিটেড।

খ্যাতিমান উপস্থাপক হানিফ সংকেতের ভাই প্রয়াত হাবিবুর রহমান আশির দশকের মাঝামাঝি চীন থেকে লিফট আমদানি শুরু করেন। এলজিএস ও স্নাইডার ব্র্যান্ডের লিফট হচ্ছে মান বাংলাদেশের প্রধান পণ্য। মোট বাজারের ৩০ শতাংশ কোম্পানিটির দখলে।

জাপানের ব্র্যান্ড মিতসুবিশি আমদানিকারক ইলেকট্রোমেক টেকনিক্যাল অ্যাসোসিয়েটস লিমিটেড। এ কোম্পানির দখলে রয়েছে ১৫ শতাংশ। আর সুইজারল্যান্ডের শিল্ডার ব্র্যান্ডের লিফটের আমদানিকারক ক্রিয়েটিভ ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড, যার দখলে রয়েছে বাজারের ১০ শতাংশ।

এ ছাড়া খান ব্রাদার্স ইক্যুই-বিল্ড লিমিটেড আমদানি করে দক্ষিণ কোরিয়ার সিগমা ব্র্যান্ডের লিফট। এর দখলে রয়েছে ৯ শতাংশ। অর্থাৎ দেশের মোট লিফট চাহিদার অর্ধেকের বেশি মেটাচ্ছে এই চারটি কোম্পানি।

এর বাইরে চীনের এসআরএইচ ও এমপি ব্র্যান্ডের লিফট আমদানিকারক কোম্পানির নাম প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের প্রপার্টি লিফট, জাপানের তোশিবা ব্র্যান্ডের লিফটের আমদানিকারক সিবাটেক করপোরেশন এবং ফিনল্যান্ডের কোন ব্র্যান্ডের লিফটের আমদানিকারক নগর এলিভেটরস। এই আমদানিকারকদের দখলে রয়েছে মোট বাজারের ২ থেকে ৩ শতাংশ। বাজারের বাকি চাহিদা মেটে স্থানীয় সংযোজনকারী বা নন-ব্র্যান্ড লিফটের মাধ্যমে। খরচ কমানোর বিবেচনায় অনেকেই এই নন-ব্র্যান্ড লিফট কিনে থাকে।

খান ব্রাদার্স ইক্যুই-বিল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তোফায়েল কবির খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘দেশের উন্নয়ন হচ্ছে, বড় বড় অট্টালিকা উঠছে, আরও উঠবে। নিরাপত্তার দিক বিবেচনায় এগুলোয় ব্র্যান্ডের লিফট বসানো দরকার এবং পরে এগুলো নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ দরকার।’

জীবন-মৃত্যু বা দুর্ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত হওয়ায় ব্র্যান্ডের লিফট ব্যবহারের পরামর্শ দেন প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল। তিনি বলেন, ‘আগে নিরাপত্তা, তারপর অর্থ। কিন্তু লিফট স্থাপনের ক্ষেত্রে এটা অনেকেই ভুলে যান।’