ঢাকা ০১:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভারতকে অপপ্রচার বন্ধ করতে বলল হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্ট

সবুজদেশ ডেস্ক:

ছবি সংগৃহীত-

 

ভারতের গণমাধ্যম ও ধর্মান্ধ রাজনৈতিক গোষ্ঠী কর্তৃক বাংলাদেশ সম্পর্কে মিথ্যা অপপ্রচার বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্ট।

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) প্রেসক্লাবে জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।

সংগঠনটির চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকার বলেন, বাংলাদেশে যখনই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে তখনই হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান নাগরিকরা বিপদে পতিত হয় ও সর্বক্ষণ আতঙ্কিত থাকে, নানা আকারে প্রকারে নির্যাতিত-লাঞ্ছিত হয়। অন্যান্য সরকারের সময়েই হিন্দু জনগণ শান্তিতে জীবন নির্বাহ করেছে, বিশেষ করে বর্তমান সরকারের আমলে স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ ও সমঅধিকার নিয়ে বসবাস করছে।

তিনি বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী ১৯৭২-৭৪ এবং গত ১৬ বছরে আওয়ামী শাসনামলে বাংলাদেশে হিন্দুসহ সংখ্যালঘুরা এমনকি ক্ষেত্র বিশেষে ভিন্নমতাবলম্বী মুসলিমরা পর্যন্ত নানাভাবে নির্যাতিত ও নিগৃহীত হয়েছে। শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন সরকার নিজ দলের কর্মী-সন্ত্রাসী ছাড়া আর কাউকেই রেহাই দেয়নি। আওয়ামী সরকার ক্ষমতার জন্য দিল্লি তোষণ করে আর অপর দিকে দেশে হিন্দু নির্যাতন চালায়। হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভিন্নমতের মুসলিম জনগোষ্ঠীর সম্পত্তি, দেবোত্তর সম্পত্তির অধিকাংশ আওয়ামী কর্মীদের অবৈধ দখলে। মন্দির ভাঙচুর, নারী নির্যাতনে নেতৃত্বদানকারী ছিল ৯৮ শতাংশ আওয়ামী নেতাকর্মী।

বিজন কান্তি সরকার আরও বলেন, বাংলাদেশে যত মন্দির পুড়ানো হয়েছে তার ১০০ ভাগ পুড়িয়েছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। এমনকি আওয়ামী এমপিদের নেতৃত্বে ও ইন্ধনে হিন্দু বাড়ি-ঘর পুড়ানো হয়েছে। কিন্তু ক্ষমতার প্রভাবে সংবাদমাধ্যমে জামায়াত-বিএনপি কর্মীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালায়। ভারতীয় মিডিয়াও আওয়ামী অনৈতিক অপপ্রচারে আর্থিকভাবে লাভবান হয়ে সম্পৃক্ত হয়। আওয়ামী লীগ কখনও কোনো নির্যাতন দখলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি, বিচার করেনি। আওয়ামী সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্য দিবালোকে দর্জি দোকানের কর্মচারী বিশ্বজিৎকে কুপিয়ে হত্যা করে, কিন্তু শেখ হাসিনা এ হত্যার কোনো বিচার করেননি।

তিনি বলেন, ভারত ও ভারতীয় জনগণের একাংশ আওয়ামী প্রোপাগান্ডায় বিভ্রান্ত হয়ে প্রকৃত বন্ধু বাংলাদেশের জনগণকে শত্রু বানিয়ে আসল শত্রু আওয়ামী লীগ ও শেখ পরিবারের প্রতি অন্ধ অনুসারী হয়েছে। ভারতীয় জনগণ, গণমাধ্যম ও দিল্লি সরকারের প্রতি আমাদের আহ্বান থাকবে, প্রকৃত বন্ধুকে চিনে নিন।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের পক্ষ থেকে ৫ দাবি জানানো হয়। সেগুলো হলো—
১। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সকল প্রকার মিথ্যা প্রোপাগান্ডা প্রচার হতে ভারতের মিডিয়া এবং ধর্মান্ধ রাজনৈতিক গোষ্ঠীকে বিরত রাখতে হবে।

২। কোনো ধর্ম-বর্ণ-জাতিগোষ্ঠীর ভিত্তিতে নয়, প্রতিবেশী দেশের মানুষের সাথে সম্পর্কের ভিত্তি হবে মানবতা।

৩। বাংলাদেশ-ভারত উভয়ই স্বাধীন-সার্বভৌম দেশ। উভয় দেশের পারস্পরিক স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতি সুরক্ষা ও সম্মান নিশ্চিত করতে হবে।

৪। বাংলাদেশের কোনো নির্দিষ্ট দলের বা মতের প্রতি অযৌক্তিক আনুকূল্য প্রদর্শন হতে ভারত সরকারকে বিরত থাকতে হবে।

৫। বাংলাদেশের জনগণের সম্প্রীতি বিনষ্টের লক্ষ্যে ভারতীয় সাম্প্রদায়িক উগ্রবাদীদের সকল অপকৌশল বন্ধ করতে হবে।

সবুজদেশ/এসইউ

About Author Information
আপডেট সময় : ০৫:২৯:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪
১৭ Time View

ভারতকে অপপ্রচার বন্ধ করতে বলল হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্ট

আপডেট সময় : ০৫:২৯:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪

 

ভারতের গণমাধ্যম ও ধর্মান্ধ রাজনৈতিক গোষ্ঠী কর্তৃক বাংলাদেশ সম্পর্কে মিথ্যা অপপ্রচার বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্ট।

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) প্রেসক্লাবে জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।

সংগঠনটির চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকার বলেন, বাংলাদেশে যখনই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে তখনই হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান নাগরিকরা বিপদে পতিত হয় ও সর্বক্ষণ আতঙ্কিত থাকে, নানা আকারে প্রকারে নির্যাতিত-লাঞ্ছিত হয়। অন্যান্য সরকারের সময়েই হিন্দু জনগণ শান্তিতে জীবন নির্বাহ করেছে, বিশেষ করে বর্তমান সরকারের আমলে স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ ও সমঅধিকার নিয়ে বসবাস করছে।

তিনি বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী ১৯৭২-৭৪ এবং গত ১৬ বছরে আওয়ামী শাসনামলে বাংলাদেশে হিন্দুসহ সংখ্যালঘুরা এমনকি ক্ষেত্র বিশেষে ভিন্নমতাবলম্বী মুসলিমরা পর্যন্ত নানাভাবে নির্যাতিত ও নিগৃহীত হয়েছে। শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন সরকার নিজ দলের কর্মী-সন্ত্রাসী ছাড়া আর কাউকেই রেহাই দেয়নি। আওয়ামী সরকার ক্ষমতার জন্য দিল্লি তোষণ করে আর অপর দিকে দেশে হিন্দু নির্যাতন চালায়। হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভিন্নমতের মুসলিম জনগোষ্ঠীর সম্পত্তি, দেবোত্তর সম্পত্তির অধিকাংশ আওয়ামী কর্মীদের অবৈধ দখলে। মন্দির ভাঙচুর, নারী নির্যাতনে নেতৃত্বদানকারী ছিল ৯৮ শতাংশ আওয়ামী নেতাকর্মী।

বিজন কান্তি সরকার আরও বলেন, বাংলাদেশে যত মন্দির পুড়ানো হয়েছে তার ১০০ ভাগ পুড়িয়েছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। এমনকি আওয়ামী এমপিদের নেতৃত্বে ও ইন্ধনে হিন্দু বাড়ি-ঘর পুড়ানো হয়েছে। কিন্তু ক্ষমতার প্রভাবে সংবাদমাধ্যমে জামায়াত-বিএনপি কর্মীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালায়। ভারতীয় মিডিয়াও আওয়ামী অনৈতিক অপপ্রচারে আর্থিকভাবে লাভবান হয়ে সম্পৃক্ত হয়। আওয়ামী লীগ কখনও কোনো নির্যাতন দখলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি, বিচার করেনি। আওয়ামী সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্য দিবালোকে দর্জি দোকানের কর্মচারী বিশ্বজিৎকে কুপিয়ে হত্যা করে, কিন্তু শেখ হাসিনা এ হত্যার কোনো বিচার করেননি।

তিনি বলেন, ভারত ও ভারতীয় জনগণের একাংশ আওয়ামী প্রোপাগান্ডায় বিভ্রান্ত হয়ে প্রকৃত বন্ধু বাংলাদেশের জনগণকে শত্রু বানিয়ে আসল শত্রু আওয়ামী লীগ ও শেখ পরিবারের প্রতি অন্ধ অনুসারী হয়েছে। ভারতীয় জনগণ, গণমাধ্যম ও দিল্লি সরকারের প্রতি আমাদের আহ্বান থাকবে, প্রকৃত বন্ধুকে চিনে নিন।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের পক্ষ থেকে ৫ দাবি জানানো হয়। সেগুলো হলো—
১। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সকল প্রকার মিথ্যা প্রোপাগান্ডা প্রচার হতে ভারতের মিডিয়া এবং ধর্মান্ধ রাজনৈতিক গোষ্ঠীকে বিরত রাখতে হবে।

২। কোনো ধর্ম-বর্ণ-জাতিগোষ্ঠীর ভিত্তিতে নয়, প্রতিবেশী দেশের মানুষের সাথে সম্পর্কের ভিত্তি হবে মানবতা।

৩। বাংলাদেশ-ভারত উভয়ই স্বাধীন-সার্বভৌম দেশ। উভয় দেশের পারস্পরিক স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতি সুরক্ষা ও সম্মান নিশ্চিত করতে হবে।

৪। বাংলাদেশের কোনো নির্দিষ্ট দলের বা মতের প্রতি অযৌক্তিক আনুকূল্য প্রদর্শন হতে ভারত সরকারকে বিরত থাকতে হবে।

৫। বাংলাদেশের জনগণের সম্প্রীতি বিনষ্টের লক্ষ্যে ভারতীয় সাম্প্রদায়িক উগ্রবাদীদের সকল অপকৌশল বন্ধ করতে হবে।

সবুজদেশ/এসইউ