যশোরঃ
বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে রেলপথে দশম চালানে আরো ১৯৮ টন তরল অক্সিজেন আমদানি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় ভারতের পেট্রাপোল বন্দর হয়ে ১৯৮ টন অক্সিজেন নিয়ে একটি বিশেষ অক্সিজেন এক্সপ্রেস বেনাপোল বন্দরের রেল স্টেশনে পৌঁছায়।
ভারতের দক্ষিণ পূর্ব রেলওয়ের একটি ট্রেন চক্রধরপুর বিভাগের রাউরকেলা থেকে বাংলাদেশের বেনাপোলে দশম অক্সিজেন এক্সপ্রেস রওয়ানা দিয়ে বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছায়। ট্রেনটিতে ১০টি কনটেইনারে ১৯৮ টন তরল মেডিক্যাল অক্সিজেন (এলএমও) রয়েছে।
এ নিয়ে গত ২৭ দিনে রেলে ভারত থেকে আমদানি হয়েছে প্রায় দুই হাজার টন অক্সিজেন। বন্দর ও কাস্টমসের আনুষ্ঠানিকতা শেষে অক্সিজেন এক্সপ্রেসটি বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম প্রান্তে পৌঁছাবে। সেখানে অক্সিজেন নামিয়ে খালি ট্রেনটি আবার এ পথ দিয়ে ভারতে ফিরে যাবে। পরে সেখান থেকে বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে এসব অক্সিজেন সরবরাহ করা হবে।
রেলপথে অক্সিজেন আমদানিকারক লিনডে বাংলাদেশ রফতানিকারক ভারতের লিনডে ভারত। রেলের পাশাপাশি সড়ক পথেও আমদানি হচ্ছে অক্সিজেন। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের গত ২১ জুন থেকে ১৯ আগস্ট পর্যন্ত সড়ক পথে আমদানি হয়েছে ৫ হাজার ৭০০ টন অক্সিজেন।
এদিকে, দেশে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় অক্সিজেনের চাহিদা বাড়ায় আমদানি বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ভারত যে অক্সিজেন উৎপাদন করে তার বড় একটি অংশ বাংলাদেশে রফতানি করে থাকে। বাংলাদেশ ও তার চাহিদার প্রায় সবটুকু আমদানি করে ভারত থেকে।
বেনাপোল বন্দর দিয়ে অক্সিজেন আমদানিকারকেরা হচ্ছে লিনডে বাংলাদেশ, এক্সপেট্রা অক্সিজেন, পিউর অক্সিজেন, বেঙ্গল অক্সিজেন ও ইসলাম অক্সিজেন। এর মধ্যে লিনডে বাংলাদেশ ও এক্সপেট্রা অক্সিজেন নামে দুই আমদানিকারক ৮০ শতাংশ অক্সিজেন আমদানি করে। রেলপথে শুধু লিনডে বাংলাদেশ অক্সিজেন আমদানি করেন।
বেনাপোল বন্দরের ৩১ নম্বর ট্রান্সশিপমেন্ট ইয়ার্ডের ট্রাফিক পরিদর্শক পলাশ জানান, মাঝে ভারতে করোনা পরিস্থিতি মহামারী আকার ধারণ করায় চিকিৎসা খাতে বাড়ে অক্সিজেন সঙ্কট। এতে গত ২১ এপ্রিল ভারত সরকার বাংলাদেশে অক্সিজেন রফতানি বন্ধ করে দেয়। পরবর্তীতে তাদের দেশে সংক্রমণ ও মৃত্যু কমে আসায় গত ২১ জুন থেকে তারা আবারো অক্সিজেন রফতানি শুরু করে বাংলাদেশে। গত দুই মাসে সড়ক পথে ৫ হাজার ৭০০ টন অক্সিজেন আমদানি হয়েছে।
বেনাপোল রেলস্টেশন মাস্টার সাইদুর রহমান জানান, গত ২৪ জুলাই থেকে রেলে অক্সিজেন আমদানি শুরু হয়। সর্বশেষ ১৯ আগস্ট ১৯৮ টন অক্সিজেন আমদানি হয়েছে। এ পর্যন্ত ২৭ দিনে ১০টি চালানে লিনডে বাংলাদেশ নামে আমদানিকারক ১ হাজার ৯৯৮ টন অক্সিজেন আমদানি করেছে। অক্সিজেন দ্রুত ছাড় করনে সবসময় বন্দর, কাস্টমস ও রেল বিভাগের স্পেশাল টিম কাজ করে আসছে।
বেনাপোল কাস্টম হাউজের সহকারী কমিশনার আহসনুল কবির বলেন, অক্সিজেনবাহী ভারতীয় ট্রেনটি বেনাপোল বন্দরের রেলওয়ে স্টেশনে প্রবেশের পর দ্রুত আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে সিরাজগজ্ঞে খালাসের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবে।