বৃহস্পতিবার নগরীর মালোপাড়া এলাকার দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “রাজশাহী নগরীর পরিবেশ সঠিক পর্যায়ে রাখার জন্য, ভোট পরিচালনা করার জন্য এবং জনগণকে তার অধিকার প্রয়োগ করার জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে।”
সেই সঙ্গে ভোটের পরদিনও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসাবে সেনাবাহিনী রাখার দাবি জানিয়েছেন ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী।
“জনগণের অধিকার প্রয়োগ, নিশ্চিন্ত মনে বাড়ি ফেরা এবং আমার পোলিং এজেন্টগণ কীভাবে বাড়িতে ফিরতে পারে, রাজশাহীর পরিস্থিতি আরো যেন উদ্বেগজনক না হয়, একটি স্বাভাবিক পরিবেশের জন্য আমরা সেনাবাহিনী মোতায়েন জরুরি বলে মনে করছি।”
বরিশাল ও সিলেটের সঙ্গে রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট গ্রহণ হবে ৩০ জুলাই। এ নির্বাচন ঘিরে ভোটের প্রচারে পুরো নগরী এখন সরগরম।
কিন্তু ভোটের প্রচারে বিএনপি নেতাকর্মীদের পুলিশি হয়রানি করা হচ্ছে অভিযোগ করে বুলবুল বলেন, “চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধ করতে হবে। কালো তিন-চারটি মাইক্রোবাসে এবং ৫০টি মোটর সাইকেলে করে যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ইয়াবা ব্যবসায়ী এবং গডফাদাররা রাজশাহী শহরে মাস্তানির মহড়া দিয়ে বেড়াচ্ছে।
রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি বুলবুল বলেন, পোলিং এজেন্টসহ বিএনপির নেতাকর্মী ও ধানের শীষের সমর্থনকারীদের গণগ্রেফতার বন্ধ করতে হবে। গ্রেপ্তার নেতাকর্মীদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।
“ভোটের দিন ভোট কেন্দ্রে জনগণের জান ও মালের নিরাপত্তা প্রদান করতে হবে। পক্ষপাতদুষ্ট পুলিশ প্রশাসনের আক্রমণ থেকে নেতাকর্মী ও পোলিং এজেন্টদের রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।”
বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি ভঙ্গের ২৯টি অভিযোগ নির্বাচন কমিশনে জমা দিলেও কমিশন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ করেন বুলবুল।
“তারা পক্ষান্তরে আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করেছে। যেমন- নির্বাচনী হলফনামায় উল্লেখিত ব্যয়ের চাইতে প্রায় ১০/১২ কোটি টাকা বেশি ব্যয়ে রাজশাহীতে নৌকা প্রতীকে লক্ষাধিক পোস্টার সন্ত্রাস, ব্যানার ফেস্টুন সন্ত্রাস… এ বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকাগুলো প্রকাশ করেছে। আমরা অভিযোগ জানানোর পরেও নির্বাচন কমিশন কিছু জানে না বলে মিথ্যাচার করছে।”
বুলবুল বলেন, গত ২২ জুলাই নির্বাচন কমিশন অনুমোদিত আকারের চেয়ে বড় সব ব্যানার ও ফেস্টুন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণের নির্দেশ দিলে তিনি এবং বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীরা তা অপসারণ করে নেন।
“কিন্তু আওয়ামী লীগ প্রার্থী তা অপসারণ করে নাই। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন, ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ কেউ কিছুই করে নাই।”
ওয়ারেন্ট ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার না করার নির্দেশনাও ভঙ্গ করা হচ্ছে অভিযোগ করে বুলবুল বলেন, “নির্বাচন কমিশনের সেই আদেশ লঙ্ঘন করে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও তার নেতাকর্মীদের যোগসাজসে পুলিশ প্রশাসন গণগ্রেপ্তার অব্যাহত রেখেছে।”
এ পর্যন্ত বিএনপির প্রায় ১৫০ জন নেতাকর্মী এবং পোলিং এজেন্টকে ‘অন্যায় ও অমানবিকভাবে’ গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন বিএনপির প্রার্থী।
অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু, বিএনপি চেয়ারপাসনের উপদেষ্টা শাহজাহান মিয়াসহ দলের নেতাকর্মীরা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।