মইনুলকে গ্রেপ্তার করা জরুরি ছিল: কাদের
সবুজদেশ ডেক্সঃ সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, যে ঘটনা ঘটেছে, তার পুনরাবৃত্তি রোধেই এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। মইনুলকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে মামলার কারণে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে তাঁর সংশ্লিষ্টতা এখানে কোনো বিষয় নয়। তিনি বলেন, মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, সেখানে গ্রেপ্তার করাটাই জরুরি ছিল এবং পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে।’
আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের এ মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘অপরাধ করে পার পেয়ে গেলে এ ধরনের আরও অপরাধ করতে পারে। যাকে তাকে অশোভন অমার্জিত একটি ভালগার অবসিনিটি পর্যায়ে এমন গালি দিতে পারে, সেটার পুনরাবৃত্তি রোধে এটি করা হয়েছে। ঐক্য ফ্রন্টের তিনি নব্য নেতা, এসব ভেবে এটা করা হয়নি। ব্যক্তি হিসেবে যে অপরাধ, এ ধরনের বক্তব্যর কারণে তার জন্যই তাকে (মইনুল হোসেন) গ্রেপ্তার করতে হবে।’
মইনুল হোসনেকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এখানে কোনো জোটের বিষয় নয়, ব্যক্তির অপরাধের বিষয়। এটি একটি অপরাধ, তিনি (মইনুল হোসেন) নারী সাংবাদিককে যেভাবে অ্যাবিউজ করেছেন, কোনো মার্জিত সুশীল ব্যক্তির পক্ষে কি সম্ভব এ ধরনের আচরণ করা? সাংবাদিকরাই তো কনডেম করেছেন।’ তিনি বলেন, মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, সেখানে গ্রেপ্তার করাটাই জরুরি ছিল এবং পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে।’
সম্প্রতি এক টেলিভিশনে আলোচনা অনুষ্ঠানে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে ‘আমি আপনাকে চরিত্রহীন বলতে চাই’ বলে মন্তব্য করেন মইনুল হোসেন। পরে তিনি লিখিতভাবে এবং টেলিফোন করে মাসুদা ভাট্টির কাছে ক্ষমা চান। মাসুদা ভাট্টি মইনুল হোসেনকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান।
ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে আওয়ামী লীগের কোনো উদ্বেগ আছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে কোনো উদ্বেগ বা শঙ্কা নেই। প্রধানমন্ত্রী তো স্বাগত জানিয়েছেন, মইনুল হোসেনকে ব্যক্তিগত অপরাধের কারণে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কোনো পরিবর্তন আনা হচ্ছে কি না—এ বিষয়ে মন্ত্রী কাদের বলেন, নির্বাচনের আগে সংশোধনের সুযোগ নেই, আইনের অপপ্রয়োগ যেন না হয়, সে বিষয়টি লক্ষ্য রাখা হবে। সাংবাদিকদের জন্য এ আইন করা হয়নি। যদি আপনি কোনো অপরাধ না করেন, তাহলে ভয় কীসের?
নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আগামী ২৬ অক্টোবর আওয়ামী লীগের যৌথসভার পর নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘আগামী ২৬ অক্টোবর সব সিদ্ধান্ত হবে। সেদিন আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটি, উপদেষ্টা কমিটি ও পার্লামেন্টারি কমিটির সভা হবে। মন্ত্রিসভার আকার ছোট হলে নতুন করে দুই-একজন যুক্ত হবেন, আর আকার বর্তমানের মতো থাকলেও দুই-একজন যুক্ত হতে পারেন।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদের বলেন, নির্বাচনকালীন সরকারের আকার গত নির্বাচনকালীন সরকারের মতোই হবে। দুই-একজন নতুন মুখ আসতে পারেন। তবে কতজন হবেন, সে সিদ্ধান্ত হবে ২৬ অক্টোবরের যৌথসভায়। তখন যে সরকারটি হবে, সেটি হবে নিয়মিত সরকার। তবে আকার ছোটবড় হতে পারে। তিনি বলেন, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণায় কাউকেই বাধা দেওয়া হবে না। সবাই সমান সুযোগ পাবেন। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের কোনো চাপ নেই।
মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রীরা তাঁদের নিজস্ব নির্বাচনী এলাকায় গাড়িতে পতাকা ব্যবহার করতে পারবেন না, তবে নির্বাচনী এলাকার বাইরে তাঁরা তা পারবেন। নির্বাচনকালীন সময়ে মন্ত্রীদের নিরাপত্তা আগের মতোই বহাল থাকবে।