মওদুদকে কেন বিশ্বাস করেন : কাদের
বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপিকে বলি এ লোকটাকে (স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদকে) কেন বিশ্বাস করেন? সে আলতু-ফালতু কথা বলে। কেন বিশ্বাস করেন। কীভাবে বেগম জিয়াকে হাসপাতালে রেখে এরশাদ সাহেবের দলে যোগ দিয়েছিলেন। এটা ইতিহাস।
শনিবার রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এদেশের রাজনীতির বহুরূপী ব্যারিস্টার। কথায় কথায় যিনি দল ও রঙ বদলাতেন। কখনো সাহেব কখনো বিবি, কখনো বিবি কখনো সাহেব। তার নাম হলো মওদুদ আহমেদ।
তিনি বলেন, মৃত ব্যক্তির নামে ভুয়া কাগজ করে যে লোক বাড়ি দখল করে তার রাজনীতি কি স্বচ্ছ? তিনি কি দেশ প্রেমিক? তিনি কি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন?
অতিদ্রুত দেশের রাজনীতির চিত্র বদল হবে মওদুদ আহমেদের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, কিভাবে বদল হবে? কেন বদল হবে? কি কারণে বদল হবে? মওদুদ সাহেবের কি ম্যাজিক আছে, যে ম্যাজিক দিয়ে রাজনীতি বদল করবেন। নির্বাচনে দেশের জনগণের রায়ের মাধ্যমে সরকার বদল হতে পারে। এছাড়া অন্য কোনো উপায়ে বদল করার যে খোয়াব দেখছেন, তা অচিরেই হাওয়ায় মিঠাইয়ের মতো মিলে যাবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় শেষ। কি করছেন আবার? রাতের অন্ধকারে কি গোপন বৈঠক করলেন? কাদের সঙ্গে পরামর্শ করলেন? সরকার কে বদলাবে? জনগণ। জনগণ কি আপনাদের চায়? নয় বছরে জনগণ আপনাদের ডাকে সাড়া দেয়নি, তারপরও বোঝেননি। আজকে বিএনপির নেতিবাচক রাজনীতির দিন শেষ। আর সুযোগ নেই। দেশের জনগণকে ধোকা দিয়ে বোকা বানানোর সুযোগ নাই আর।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সব আন্দোলনে ব্যর্থ হয়েছে। এখন দেখছি নালিশ আর নালিশ। আবার গোপন বৈঠক। আমরা জানি কোথায় কারা কারা বৈঠক করছেন। টেমস নদীর পাড়ে কখন কার সঙ্গে বৈঠক হচ্ছে। ব্যাংকক, দুবাইতে বসে কারা কোন গডফাদারের সঙ্গে বৈঠক করছেন। দেশেও রাতের অন্ধকারে বসে কোন বৈঠক হচ্ছে সব আমাদের নলেজে আছে। ধৈর্য ধরে আছি। মনিটর করছি আরও খোঁজ-খবর নিচ্ছি। সময়মতো ব্যবস্থা নেব।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ছবির পাশে নিজের ছবি দিয়ে আত্মপ্রচার বন্ধ করতে হবে। এই ছবি প্রদর্শনের প্রতিযোগিতা বন্ধ করুন। বঙ্গবন্ধুকে ব্যবহার করে আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনাকে ব্যবহার করে আত্মপ্রচারে যারা মগ্ন তাদের রাজনীতির কমিটমেন্ট নিয়ে প্রশ্ন আছে। প্লিজ এটা দেখবেন। একজন এমপি তার বাড়ি ঢাকা থেকে অনেক দূরে একটি দ্বীপে, তিনিও ঢাকায় বঙ্গবন্ধুর পাশে ছবি দিয়ে পোস্টার বিলবোর্ড করেছেন। কেন? যারা বাইরে তারা এখানে ছবি দিচ্ছেন, এটা কি তাদের নির্বাচনী এলাকা। প্লিজ এসব প্রাকটিস বন্ধ করুন। ইলেকশন সামনে তো নেতাদের এই পথে আসা যাওয়া দেখবেন। এসব বন্ধ করুন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এসব ছবি প্রদর্শন করে নমিনেশন পাওয়া যাবে না, নমিনেশন পাওয়া যাবে জনগণের সেবা করে, জনগণের মন জয় করে নিজের নম্বর যত প্লাস হবে সেই নমিনেশন পাবেন। এসব করে শেখ হাসিনার কাছে নমিনেশন পাওয়া যাবে না। এটা আমি পরিষ্কারভাবে বলে দিতে চাই।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু একবার আক্ষেপ করে বলেছিলেন, মন্ত্রীরা বিদেশ যেতে চায়। নেতারা কথা বেশি বলে কাজ তেমন করে না। বর্তমানে নেতাদের বঙ্গবন্ধুর সেই উক্তি স্মরণ করার অনুরোধ করছি। আমি আশা করি আমরা সরকারি পদে যারা মন্ত্রী আছি আমাদের সবার মনে রাখা উচিত। যারা নেতারা আছেন ভাসন না দিয়ে কাজের দিকে মনোযোগ দেবেন। বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে আমাদের শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে।
দলীয় নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সময়টা ভালো নয় আমি আমাদের নেতাদের কাছে আমার সহকর্মীদের কাছে বিনীত অনুরোধ করবো যার যার সীমানা পেরিয়ে দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য দেবেন না। সরকারকে বিব্রত করে এমন বক্তব্য কেউ দেবেন না। দল সরকার বিব্রত হয় এমন কোনো কথা দয়া করে কেউ বলবেন না। হোমওয়ার্ক করে কথা বলবেন, পলিসির ব্যাপারে নেত্রীর সঙ্গে কথা বলে কথা বলবেন, ফ্রি স্টাইল কথা বলা যাবে না।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাওছারের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ নাথ।