ঢাকা ০৪:৩০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মমতাকে প্রধানমন্ত্রী করার জোরালো দাবি তৃণমূলের

Reporter Name

ভারতের স্বাধীনতার পর ৭১ বছরের ইতিহাসে কোনো বাঙালি প্রধানমন্ত্রী হননি। ১৯৯৬ সালে যুক্তফ্রন্টের আমলে একবার পশ্চিমবঙ্গের কমিউনিস্ট নেতা ও তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুকে প্রধানমন্ত্রী করার সুযোগ আসে। ১৩ দলের বিরোধী জোট যুক্তফ্রন্ট জ্যোতি বসুকে প্রধানমন্ত্রী করার প্রস্তাব করে। তা বাস্তবে রূপ পায়নি। এবার দাবি উঠেছে পশ্চিমবঙ্গের প্রভাবশালী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে। তৃণমূল চাইছে, তিনিই হবেন দেশের পরবর্তী সরকারপ্রধান।

জ্যোতি বসুর দল সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটি বৈঠকের পর ভোটাভুটিতে বাতিল করে দেয় ওই সরকারে যাওয়ার প্রস্তাব। এ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট পড়ে ২২টি। বিপক্ষে ২৭টি। তৎকালীন সিপিএমের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক হরকিষেণ সিং সুরজিৎ, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যরা ছিলেন প্রস্তাবের পক্ষে। আশ্চর্যের ব্যাপার, কেন্দ্রীয় কমিটি ও পলিটব্যুরোর সাত বাঙালি সদস্য প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছিলেন। ফলে, জ্যোতি বসু আর প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ পাননি। প্রধানমন্ত্রী করা হয় যুক্তফ্রন্টের নেতা ও কর্ণাটকের সংযুক্ত জনতা দলের নেতা এইচ ডি দেবগৌড়াকে।

১৯৯৭ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আগেই একইভাবে ভারতের রাষ্ট্রপতি করারও একবার প্রস্তাব আসে জ্যোতি বসুকে। ওই প্রস্তাব দেন তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়া। এতেও সায় দেয়নি সিপিএম। ফলে বাঙালি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হওয়ার সুযোগ হাতছাড়া হয়।

২০১২ সালে ভারতের রাষ্ট্রপতি হওয়ার সুযোগ আসে কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা প্রণব মুখোপাধ্যায়ের। কংগ্রেসের সমর্থনে তিনি হয়েও যান ভারতের প্রথম বাঙালি রাষ্ট্রপতি। অবশ্য সেদিন প্রথম দিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রণবের সমর্থনে আপত্তি জানালেও শেষে তিনি তাঁর পক্ষেই চলে আসেন। একজন বাঙালি ভারতের রাষ্ট্রপতি হওয়ার সুযোগ পান। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ এখন পর্যন্ত কোনো বাঙালি পাননি।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভারতের প্রধানমন্ত্রী করার জন্য দাবি তুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা। তৃণমূলের যুক্তি, ভারতের বর্তমান শাসক দলের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জনপ্রিয়তা দিনে দিনে কমে যাচ্ছে। বিভিন্ন জনমত সমীক্ষায় সেই চিত্র ফুটে উঠেছে। তাই মমতা এবার বিজেপিবিরোধী দলকে নিয়ে মমতা ফেডারেল ফ্রন্ট গড়ার প্রস্তাব দিয়ে মাঠে নেমে পড়েছেন। মমতা মনে করছেন, বিজেপিবিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল একজোট হলে ভারতে মোদিকে পরাজিত করা কঠিন হবে না। ইতিমধ্যে ২১ জুলাই কলকাতার ধর্মতলায় শহীদ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক বিশাল সমাবেশে বলেন, ‘মোদি আর ক্ষমতায় ফিরছেন না। ৫৪৩ আসনের লোকসভায় ১৫০-এর বেশি আসন পাবেন না। ফলে, বিরোধী শক্তির জোট ২০১৯ সালে সরকার গড়বে। গড়বে মানুষের সরকার।’ যদিও ২০১৪ সালের সর্বশেষ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি একাই ২৮২টি আসন পেয়েছিল।

আগামী ১৯ জানুয়ারি কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে গোটা ভারতের বিজেপিবিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছেন মমতা। এখন থেকেই আন্দোলন শুরু হবে ‘মোদি ঠেকাও, দেশ বাঁচাও’ আন্দোলন। মমতার কথা, ‘২০১৯ বিজেপি ফিনিস’।

বিজেপির সাম্প্রদায়িক নীতির বিরুদ্ধে এখন সোচ্চার হয়েছে বহু রাজনৈতিক দল। এমনকি বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ থেকে সমর্থন তুলেও নিয়েছে বেশ কটি শরিক দল। এর মধ্যে রয়েছে শিবসেনা, তেলেগু দেশম। এসব দলের নেতারা এসে দাঁড়িয়েছেন মমতার প্রস্তাবিত ফেডারেল ফ্রন্টে যোগ দেওয়ার জন্য। পাশে দাঁড়িয়েছে জম্মু ও কাশ্মীরের সাবেক মুখমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহর ন্যাশনাল কনফারেন্সও।

ভারতের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি রাহুল গান্ধীও সম্প্রতি বলেছেন, মোদিকে হঠাতে যদি অন্য কাউকে প্রধানমন্ত্রী করতে হয়, তবে সেই দাবি থেকে সরে আসবে কংগ্রেস। প্রয়োজনে মমতা বা মায়াবতীকে প্রধানমন্ত্রী করা হলে আপত্তি থাকবে না কংগ্রেসের।

এ ঘোষণার পর প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন মমতা। মমতাও জানেন, তাঁর দলের অবস্থান জাতীয় কংগ্রেসের পর। আগামী নির্বাচনে তৃতীয় স্থানেও চলে যেতে পারে। যদিও মায়াবতীর মতো অন্য রাজ্যে তেমন সংগঠন নেই মমতার। মমতার শক্তি পশ্চিমবঙ্গকে নিয়ে। পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি লোকসভা আসনের মধ্যে ৪২টি আসনই তাঁর দল পাবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন মমতা। মূলত, এই শক্তি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন মমতা। মমতার তৃণমূল কংগ্রেসও মনে করছে, আগামী বছরের লোকসভা নির্বাচনে দল দেশের অন্য রাজ্য থেকে দু-একটি আসন পেতে পারে। তাই মমতা ভাবছেন, আঞ্চলিক দল যদি ক্ষমতায় যাওয়ার মতো আসন পায়, তবে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ আসতে পারে তাঁর। কারণ, অনেক দলই চাইছে, এবার ভারতের একজন নারী প্রধানমন্ত্রী হোক। সে ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছেন মমতা, মায়াবতীরা।

কিন্তু রাজনৈতিক মহলে এখনই প্রশ্ন উঠেছে, বিজেপিবিরোধী দল যদি ক্ষমতায় আসার জন্য ২৭২টি আসন বাগিয়ে নিতে পারে, তখন কি কংগ্রেস, তেলেগু দেশম, সমাজবাদী পার্টি, বিজু জনতা দল, রাষ্ট্রীয় জনতা দল, জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টির নেতারা মমতাকে ছেড়ে দেবেন প্রধানমন্ত্রীর পদ?

এসব যুক্তি না মেনে মমতার দলের নেতা-কর্মীরা আগামী বছর ভারতের একজন বাঙালি প্রধানমন্ত্রী পাওয়ার জন্য শুরু করেছেন রাজনৈতিক তৎপরতা। দাবিও তুলেছেন, মমতাকে তাঁরা দেখতে চান ভারতের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে। আর সে লক্ষ্য ও দাবি নিয়ে মাঠে নেমেছেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা।

গত শনিবার মেদিনীপুরের এক জনসভায় পশ্চিমবঙ্গের পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘মমতার বিকল্প নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর আজ বাংলার নেত্রী নন। তিনি বিশ্ববন্দিত নেত্রী। আমরা বাঙালি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁকে দেখতে চাই। তাঁকে প্রধানমন্ত্রী চাই।’ এই সভায় তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীও শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে সুর মিলিয়ে বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে রেখেই দেশে মোদিবিরোধী জোট হচ্ছে। মমতাই হবেন দেশের পরবর্তী নেত্রী—প্রধানমন্ত্রী।’

About Author Information
আপডেট সময় : ১০:৪৯:১১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুলাই ২০১৮
৬০০ Time View

মমতাকে প্রধানমন্ত্রী করার জোরালো দাবি তৃণমূলের

আপডেট সময় : ১০:৪৯:১১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুলাই ২০১৮

ভারতের স্বাধীনতার পর ৭১ বছরের ইতিহাসে কোনো বাঙালি প্রধানমন্ত্রী হননি। ১৯৯৬ সালে যুক্তফ্রন্টের আমলে একবার পশ্চিমবঙ্গের কমিউনিস্ট নেতা ও তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুকে প্রধানমন্ত্রী করার সুযোগ আসে। ১৩ দলের বিরোধী জোট যুক্তফ্রন্ট জ্যোতি বসুকে প্রধানমন্ত্রী করার প্রস্তাব করে। তা বাস্তবে রূপ পায়নি। এবার দাবি উঠেছে পশ্চিমবঙ্গের প্রভাবশালী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে। তৃণমূল চাইছে, তিনিই হবেন দেশের পরবর্তী সরকারপ্রধান।

জ্যোতি বসুর দল সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটি বৈঠকের পর ভোটাভুটিতে বাতিল করে দেয় ওই সরকারে যাওয়ার প্রস্তাব। এ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট পড়ে ২২টি। বিপক্ষে ২৭টি। তৎকালীন সিপিএমের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক হরকিষেণ সিং সুরজিৎ, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যরা ছিলেন প্রস্তাবের পক্ষে। আশ্চর্যের ব্যাপার, কেন্দ্রীয় কমিটি ও পলিটব্যুরোর সাত বাঙালি সদস্য প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছিলেন। ফলে, জ্যোতি বসু আর প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ পাননি। প্রধানমন্ত্রী করা হয় যুক্তফ্রন্টের নেতা ও কর্ণাটকের সংযুক্ত জনতা দলের নেতা এইচ ডি দেবগৌড়াকে।

১৯৯৭ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আগেই একইভাবে ভারতের রাষ্ট্রপতি করারও একবার প্রস্তাব আসে জ্যোতি বসুকে। ওই প্রস্তাব দেন তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়া। এতেও সায় দেয়নি সিপিএম। ফলে বাঙালি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হওয়ার সুযোগ হাতছাড়া হয়।

২০১২ সালে ভারতের রাষ্ট্রপতি হওয়ার সুযোগ আসে কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা প্রণব মুখোপাধ্যায়ের। কংগ্রেসের সমর্থনে তিনি হয়েও যান ভারতের প্রথম বাঙালি রাষ্ট্রপতি। অবশ্য সেদিন প্রথম দিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রণবের সমর্থনে আপত্তি জানালেও শেষে তিনি তাঁর পক্ষেই চলে আসেন। একজন বাঙালি ভারতের রাষ্ট্রপতি হওয়ার সুযোগ পান। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ এখন পর্যন্ত কোনো বাঙালি পাননি।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভারতের প্রধানমন্ত্রী করার জন্য দাবি তুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা। তৃণমূলের যুক্তি, ভারতের বর্তমান শাসক দলের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জনপ্রিয়তা দিনে দিনে কমে যাচ্ছে। বিভিন্ন জনমত সমীক্ষায় সেই চিত্র ফুটে উঠেছে। তাই মমতা এবার বিজেপিবিরোধী দলকে নিয়ে মমতা ফেডারেল ফ্রন্ট গড়ার প্রস্তাব দিয়ে মাঠে নেমে পড়েছেন। মমতা মনে করছেন, বিজেপিবিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল একজোট হলে ভারতে মোদিকে পরাজিত করা কঠিন হবে না। ইতিমধ্যে ২১ জুলাই কলকাতার ধর্মতলায় শহীদ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক বিশাল সমাবেশে বলেন, ‘মোদি আর ক্ষমতায় ফিরছেন না। ৫৪৩ আসনের লোকসভায় ১৫০-এর বেশি আসন পাবেন না। ফলে, বিরোধী শক্তির জোট ২০১৯ সালে সরকার গড়বে। গড়বে মানুষের সরকার।’ যদিও ২০১৪ সালের সর্বশেষ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি একাই ২৮২টি আসন পেয়েছিল।

আগামী ১৯ জানুয়ারি কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে গোটা ভারতের বিজেপিবিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছেন মমতা। এখন থেকেই আন্দোলন শুরু হবে ‘মোদি ঠেকাও, দেশ বাঁচাও’ আন্দোলন। মমতার কথা, ‘২০১৯ বিজেপি ফিনিস’।

বিজেপির সাম্প্রদায়িক নীতির বিরুদ্ধে এখন সোচ্চার হয়েছে বহু রাজনৈতিক দল। এমনকি বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ থেকে সমর্থন তুলেও নিয়েছে বেশ কটি শরিক দল। এর মধ্যে রয়েছে শিবসেনা, তেলেগু দেশম। এসব দলের নেতারা এসে দাঁড়িয়েছেন মমতার প্রস্তাবিত ফেডারেল ফ্রন্টে যোগ দেওয়ার জন্য। পাশে দাঁড়িয়েছে জম্মু ও কাশ্মীরের সাবেক মুখমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহর ন্যাশনাল কনফারেন্সও।

ভারতের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি রাহুল গান্ধীও সম্প্রতি বলেছেন, মোদিকে হঠাতে যদি অন্য কাউকে প্রধানমন্ত্রী করতে হয়, তবে সেই দাবি থেকে সরে আসবে কংগ্রেস। প্রয়োজনে মমতা বা মায়াবতীকে প্রধানমন্ত্রী করা হলে আপত্তি থাকবে না কংগ্রেসের।

এ ঘোষণার পর প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন মমতা। মমতাও জানেন, তাঁর দলের অবস্থান জাতীয় কংগ্রেসের পর। আগামী নির্বাচনে তৃতীয় স্থানেও চলে যেতে পারে। যদিও মায়াবতীর মতো অন্য রাজ্যে তেমন সংগঠন নেই মমতার। মমতার শক্তি পশ্চিমবঙ্গকে নিয়ে। পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি লোকসভা আসনের মধ্যে ৪২টি আসনই তাঁর দল পাবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন মমতা। মূলত, এই শক্তি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন মমতা। মমতার তৃণমূল কংগ্রেসও মনে করছে, আগামী বছরের লোকসভা নির্বাচনে দল দেশের অন্য রাজ্য থেকে দু-একটি আসন পেতে পারে। তাই মমতা ভাবছেন, আঞ্চলিক দল যদি ক্ষমতায় যাওয়ার মতো আসন পায়, তবে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ আসতে পারে তাঁর। কারণ, অনেক দলই চাইছে, এবার ভারতের একজন নারী প্রধানমন্ত্রী হোক। সে ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছেন মমতা, মায়াবতীরা।

কিন্তু রাজনৈতিক মহলে এখনই প্রশ্ন উঠেছে, বিজেপিবিরোধী দল যদি ক্ষমতায় আসার জন্য ২৭২টি আসন বাগিয়ে নিতে পারে, তখন কি কংগ্রেস, তেলেগু দেশম, সমাজবাদী পার্টি, বিজু জনতা দল, রাষ্ট্রীয় জনতা দল, জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টির নেতারা মমতাকে ছেড়ে দেবেন প্রধানমন্ত্রীর পদ?

এসব যুক্তি না মেনে মমতার দলের নেতা-কর্মীরা আগামী বছর ভারতের একজন বাঙালি প্রধানমন্ত্রী পাওয়ার জন্য শুরু করেছেন রাজনৈতিক তৎপরতা। দাবিও তুলেছেন, মমতাকে তাঁরা দেখতে চান ভারতের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে। আর সে লক্ষ্য ও দাবি নিয়ে মাঠে নেমেছেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা।

গত শনিবার মেদিনীপুরের এক জনসভায় পশ্চিমবঙ্গের পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘মমতার বিকল্প নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর আজ বাংলার নেত্রী নন। তিনি বিশ্ববন্দিত নেত্রী। আমরা বাঙালি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁকে দেখতে চাই। তাঁকে প্রধানমন্ত্রী চাই।’ এই সভায় তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীও শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে সুর মিলিয়ে বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে রেখেই দেশে মোদিবিরোধী জোট হচ্ছে। মমতাই হবেন দেশের পরবর্তী নেত্রী—প্রধানমন্ত্রী।’