মহাসড়কে ডাকাতদের রাজত্ব
সবুজদেশ ডেক্সঃ দেশের অর্থনীতির পাইপলাইন হিসেবে পরিচিত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চলছে নিত্যনতুন কৌশলে ডাকাতি। ডাকাত চক্রের কবল থেকে রক্ষা পাচ্ছে না পণ্যবাহী গাড়ি থেকে শুরু করে যাত্রীবাহী বাসগুলো। এমন কী বাদ যাচ্ছে না বরযাত্রীর গাড়িও। দেশের গুরুত্বপূর্ণ এ মহাসড়কের ডাকাতিতে জড়িত কমপক্ষে ১০ চক্রের সন্ধান মিলেছে। কিন্তু কোনোভাবেই তাদের প্রতিরোধ করতে পারছে না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নতুন তথ্য হচ্ছে, পণ্য বহনকারী কিছু গাড়ির চালক ও সহকারীর যোগসাজশ রয়েছে ডাকাতদের সঙ্গে। র্যাব-৭ অধিনায়ক লে. কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ডাকাতিতে নতুন কয়েকটি চক্র সক্রিয় বলে আমাদের কাছে তথ্য আছে। তাদের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। শিগগিরই তাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হবে।’ তিনি বলেন, ‘কিছুদিন আগে অভিযানের মুখে ডাকাতরা গা ঢাকা দেয়। সম্প্রতি স্থানীয় ডাকাতের সহায়তায় মুন্সীগঞ্জ ও নরসিংদীর কয়েকটি ডাকাত দল সক্রিয় হয়েছে।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক পুলিশ কর্তকর্তা বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ডাকাতি করে এমন কমপক্ষে ১০টি চক্র সক্রিয় রয়েছে। তাদের সদস্য সংখ্যা শতাধিক। এ চক্রের সদস্যরা ১০ থেকে ১৫ জন অংশ নিয়ে দুই-তিনটা গ্রুপে বিভক্ত হয়ে ডাকাতি করে। জানা যায়, প্রায় ৩৬০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের মহাসড়কে ১৫০ কিলোমিটার রয়েছে চট্টগ্রাম অংশে। এ মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করে ৫০ হাজারের বেশি যানবাহন। মহাসড়কে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অপ্রতুল টহলের সুযোগ নিচ্ছে ডাকাতরা। স্থানীয় ডাকাত দলে প্রতিনিয়ত যোগ দিচ্ছে আশপাশের জেলার ডাকাতরা। এ ধরনের ডাকাতিতে জড়িত এমন কমপক্ষে ১০টি চক্র জড়িত রয়েছে। যাতে শতাধিক সদস্য রয়েছে বলে ধরণা করা হচ্ছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের অন্তত ২৫টি স্থানে নিয়মিত ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এসব স্থানের মধ্যে ১৫টি স্পট ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোর মধ্যে সীতাকুণ্ড সদর, কুমিরা, ছোট কমলদহ, মিরসরাই সদর, জোরারগঞ্জ, ফাজিলপুর, ফেনীর মহিপাল, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম, পদুয়া, চান্দিনা ও দাউদকান্দি অন্যতম। নাম প্রকাশ না করার শর্তে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এক সদস্য বলেন, পণ্য বহনকারী কিছু গাড়ির চালক ও সহকারীর যোগসাজশ রয়েছে সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের সঙ্গে। তারা পণ্য নিয়ে ঢাকা কিংবা চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার আগেই মোবাইল ফোনে ডাকাতদের তথ্য জানিয়ে দেয়। ডাকাত দলের সদস্যরা নির্দিষ্ট স্থানে অবস্থান নিয়ে গাড়ি এলে ডাকাতি করে। ডাকাতির পর লুঠ করা মালের একটি অংশ চলে যায় তথ্য দেওয়া চালক ও সহকারীর কাছে।
(সংগ্রিহিত)