ঢাকা ০২:২৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫, ১২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মাগুরায় হত্যার অভিযোগে স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা

  • সবুজদেশ ডেস্ক:
  • Update Time : ১০:২৮:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫
  • ১৯ বার পড়া হয়েছে।

 

মাগুরায় যৌতুকের দাবিতে এক গৃহবধূকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগে স্বামীসহ পাঁচজনের নামে মামলা হয়েছে। ওই গৃহবধূর ভাই রিজু শেখ আজ বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) মাগুরা সদর থানায় মামলা করেছেন।

নিহত নারীর নাম মনিরা আক্তার ওরফে মীম (২২)। তিনি মাগুরা সদর উপজেলার আলিধানী গ্রামের আরজু শেখের মেয়ে। তার স্বামী শামীম শেখের (৩০) বাড়ি উপজেলার শিবরামপুর গ্রামে।

মনিরা আক্তারের আরেক ভাই সুজায়েত শেখ জানান, পাশের শিবরামপুর গ্রামের বাসিন্দা শামীমের সঙ্গে পাঁচ বছর আগে তার বোনের বিয়ে হয়। তাদের সাড়ে তিন বছরের একটা ছেলে আছে। বিয়ের পর বিভিন্ন সময় তার বোনকে শারীরিক নির্যাতন করেছেন শামীম। এ বিষয়ে পারিবারিকভাবে মীমাংসা করা হয়েছে।

ছয় মাস আগে স্বামীর জন্য ইজিবাইক কেনার কথা বলে বাবার বাড়ি থেকে এক লাখ টাকা নেন মনিরা আক্তার। কথা ছিল ইজিবাইক চালিয়ে ওই টাকা ফেরত দিয়ে দেবেন শামীম। তবে তিনি টাকা ফেরত দেননি। এক সপ্তাহ আগে মনিরা আরো সাত হাজার টাকা বাবার বাড়ি থেকে নিয়ে আসেন। বুধবার (২৫ জুন) সেই টাকা ফেরত দেয়া নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথা-কাটাকাটি শুরু হয়।

সুজায়েত শেখ অভিযোগ করেন, ‘‘কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে মনিরাকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন শামীম ও তার বাড়ির লোকজন। হত্যার পর তাকে টয়লেটের ভেতর ফেলে রাখা হয়েছিল। পরে তারা মনিরাকে হাসপাতালে ফেলে রেখে চলে যায়। আমরা আশপাশের লোকজনের কাছে বোনের মৃত্যুর খবর পাই।’’

মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মামুনুর রশীদ জানান, বুধবার (২৫ জুন) বেলা ২টা ৫০ মিনিটের দিকে ওই নারীকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হয়। ওই নারী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন, এমন তথ্য দিয়ে সোহাগ নামের এক ব্যক্তি তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন।

এ বিষয়ে জানতে শামীম শেখের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তার বাবা মিরাজ শেখ বলেন, ‘‘আমি ঢাকায় গাড়ি চালাই। বাড়ির খবর জানি না। বুধবার (২৫ জুন) একবার ছেলে ফোন করে বলেছিল পুত্রবধূ আত্মহত্যা করেছেন। এরপর আর তাকে ফোনে পাইনি।’’

মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আইয়ুব আলী জানান, যৌতুকের দাবিতে হত্যা ও এর প্ররোচনার অভিযোগে নিহত গৃহবধূর ভাই বাদী হয়ে মামলা করেছেন। এতে তার স্বামীসহ পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে। এরই মধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। লাশের ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

সবুজদেশ/এসএএস

Tag :

মাগুরায় হত্যার অভিযোগে স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা

Update Time : ১০:২৮:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫

 

মাগুরায় যৌতুকের দাবিতে এক গৃহবধূকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগে স্বামীসহ পাঁচজনের নামে মামলা হয়েছে। ওই গৃহবধূর ভাই রিজু শেখ আজ বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) মাগুরা সদর থানায় মামলা করেছেন।

নিহত নারীর নাম মনিরা আক্তার ওরফে মীম (২২)। তিনি মাগুরা সদর উপজেলার আলিধানী গ্রামের আরজু শেখের মেয়ে। তার স্বামী শামীম শেখের (৩০) বাড়ি উপজেলার শিবরামপুর গ্রামে।

মনিরা আক্তারের আরেক ভাই সুজায়েত শেখ জানান, পাশের শিবরামপুর গ্রামের বাসিন্দা শামীমের সঙ্গে পাঁচ বছর আগে তার বোনের বিয়ে হয়। তাদের সাড়ে তিন বছরের একটা ছেলে আছে। বিয়ের পর বিভিন্ন সময় তার বোনকে শারীরিক নির্যাতন করেছেন শামীম। এ বিষয়ে পারিবারিকভাবে মীমাংসা করা হয়েছে।

ছয় মাস আগে স্বামীর জন্য ইজিবাইক কেনার কথা বলে বাবার বাড়ি থেকে এক লাখ টাকা নেন মনিরা আক্তার। কথা ছিল ইজিবাইক চালিয়ে ওই টাকা ফেরত দিয়ে দেবেন শামীম। তবে তিনি টাকা ফেরত দেননি। এক সপ্তাহ আগে মনিরা আরো সাত হাজার টাকা বাবার বাড়ি থেকে নিয়ে আসেন। বুধবার (২৫ জুন) সেই টাকা ফেরত দেয়া নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথা-কাটাকাটি শুরু হয়।

সুজায়েত শেখ অভিযোগ করেন, ‘‘কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে মনিরাকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন শামীম ও তার বাড়ির লোকজন। হত্যার পর তাকে টয়লেটের ভেতর ফেলে রাখা হয়েছিল। পরে তারা মনিরাকে হাসপাতালে ফেলে রেখে চলে যায়। আমরা আশপাশের লোকজনের কাছে বোনের মৃত্যুর খবর পাই।’’

মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মামুনুর রশীদ জানান, বুধবার (২৫ জুন) বেলা ২টা ৫০ মিনিটের দিকে ওই নারীকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হয়। ওই নারী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন, এমন তথ্য দিয়ে সোহাগ নামের এক ব্যক্তি তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন।

এ বিষয়ে জানতে শামীম শেখের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তার বাবা মিরাজ শেখ বলেন, ‘‘আমি ঢাকায় গাড়ি চালাই। বাড়ির খবর জানি না। বুধবার (২৫ জুন) একবার ছেলে ফোন করে বলেছিল পুত্রবধূ আত্মহত্যা করেছেন। এরপর আর তাকে ফোনে পাইনি।’’

মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আইয়ুব আলী জানান, যৌতুকের দাবিতে হত্যা ও এর প্ররোচনার অভিযোগে নিহত গৃহবধূর ভাই বাদী হয়ে মামলা করেছেন। এতে তার স্বামীসহ পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে। এরই মধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। লাশের ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

সবুজদেশ/এসএএস