সবুজদেশ ডেস্কঃ

কুয়েতের কারাগারে বন্দি লক্ষ্মীপুর-২ আসনের এমপি কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের মানবপাচার সংক্রান্ত কাজে আরও যারা জড়িত তাদের খোঁজ পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। সম্পূর্ণ তথ্য পেলে বাকিদের পরিচয় প্রকাশ করা হবে। বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে মালিবাগে সিআইডি নিজ কার্যালয়ে সংস্থাটির প্রধান এসব তথ্য জানান।

মাহবুবুর রহমান জানান, পাপুলের ৫২৬টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে গত চার বছরে ৩৫০ কোটি টাকার মতো লেনদেন হয়েছে। টাকা কোন কোন অ্যাকাউন্টে কার কার কাছে ট্রান্সফার হয়েছে এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্তের সূত্র ধরে মানবপাচারের ঘটনায় আরও কয়েকজনের সংশ্লিষ্টতার তথ্য পেয়েছে সিআইডি। 

তিনি বলেন, প্রাথমিক তদন্তে ১৩টি ব্যাংকে ৫২৬টি একাউন্টের তথ্য পাওয়া গেছে। ২০১৬ সাল থেকে ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলো পর্যালোচনা করে ৩৫০ কোটি টাকার মতো লেনদেনের তথ্য পেয়েছে সিআইডি। তবে তার অ্যাকাউন্টে বর্তমানে ৩৮ কোটি টাকা জমা রয়েছে।

ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান বলেন, সব ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করতে আদালতের কাছে আবেদন করা হয়েছে।

দুর্নীতি দমন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, তারা এরই মধ্যে পাপুল, তার স্ত্রী সংরক্ষিত আসনের এমপি সেলিনা ইসলাম, শ্যালিকা জেসমিন প্রধান ও মেয়ে ওয়াফা ইসলামের ৬১৩টি ব্যাংক জব্দ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।  দেশের আটটি ব্যাংকে এই চার জনের এসব অ্যাকাউন্টের খোঁজ পেয়েছে দুদক।

এদিকে, সিআইডি তাদের তদন্তে পাপুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলামের বিরুদ্ধে এখনও কোনও অভিযোগ পায়নি।

মূলত মানবপাচারের তথ্য মেলায় কাজী শহিদুল ইসলাম পাপুল, মো. সাদিকুর রহমান ওরফে মনির, শ্যালিকা জেসমিন প্রধান, মেয়ে ওয়াফা ইসলাম, কাজী বদরুল আলম  ও দুই প্রতিষ্ঠান জে ডব্লিউ লীলাবালী, জব ব্যাংক ইন্টারন্যাশনালের বিরুদ্ধে  মামলা করেছে সিআইডি।

লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ (সংশোধনী/২০১৫) এর ৪(২), ৪(৪) ধারায় পল্টন থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) পল্টন থানায় মানি লন্ডারিং আইনে মামলাটি দায়ের করে সিআইডি। মামলায় ৩৮ কোটি ২২ লাখ ৪০ হাজার ৫৬৭ টাকা পাচারের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৬ জুন এমপি শহিদুল ইসলাম পাপুলকে কুয়েতে গ্রেফতার করে সে দেশের পুলিশ। তার বিরুদ্ধে মানব ও অর্থপাচার এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের শোষণের অভিযোগ এনেছে কুয়েত সরকার। জানুয়ারিতে এই মামলার রায় দেওয়ার কথা রয়েছে।

এদিকে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ১৪৮ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে পাপুল ও তার স্ত্রী সংরক্ষিত আসনের এমপি সেলিনা ইসলামের বিরুদ্ধে গত ১১ নভেম্বর মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এর উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন বাদী হয়ে এ মামলা করেন। মামলায় পাপুলের শ্যালিকা জেসমিন প্রধান ও মেয়ে ওয়াফা ইসলামকেও আসামি করা হয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here