সবুজদেশ ডেক্সঃ সারা দেশে দলীয় নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে দেওয়া ‘ভৌতিক’ মামলাকে সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে সবচেয়ে বড় বাধা বলে মনে করছে বিএনপি। দলটি বলছে, এভাবে মামলা ও গ্রেপ্তার করে গোটা নির্বাচনকে অনিশ্চিত করে তোলা হচ্ছে।

আজ শুক্রবার সকালে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কথা বলেন। তিনি অভিযোগ করেন, বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে এবং জনগন থেকে বিএনপির প্রার্থীদের ভোট দিতে না পারে সেজন্য এ ধরনের মামলা দেওয়া হচ্ছে এবং গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে ১৭ সেপ্টম্বর পর্যন্ত সারা দেশে বিএনপির নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে ৩ হাজার ৭৩৬টি মামলা দেওয়া হয়েছে। এসব মামলায় নাম উল্লেখ করে তিন লাখ ১৩ হাজার ৩৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আর অজ্ঞাত হিসেবে দুই লাখ ৩৩ হাজার ৭৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন তিন হাজার ৬৯০ জন।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, সারা দেশে হাজার হাজার ভৌতিক মামলা ও গণ হারে গ্রেপ্তারের ঘটনা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একদিকে সরকার নির্বাচনকে নিজদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সব কিছু নিজেদের মতো করে সাজাচ্ছে অন্যদিকে বিরোধী দলের এমনকি বিরোধি মত পোষণ করেন এমন অরাজনৈতিক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে গণহারে মামলা ও তাদের বাসা–বাড়িতে তল্লাশি চালানোর মতো ঘটনা ঘটিয়ে চলছেন। তিনি বলেন, সরকারের উচিত সবার সঙ্গে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়া। অন্যথায় জাতি তাদের ক্ষমা করবে না, একদিন বিচার হবেই।

অনুপস্থিতিতে বিচার ন্যায়বিচারের পরিপন্থী:

সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে বিচার করার সিদ্ধান্ত ন্যায়বিচারের পরিপন্থী। তিনি বলেন, আমরা এই সিদ্ধান্ত মানতে পারছি না। ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ। কারা কর্তৃপক্ষ স্বীকার করেছেন খালেদা জিয়া হাঁটার মতো উপযুক্ত নন। তাঁদের প্রতিবেদনে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করতে বলা হয়েছে।

বিএনপির মহাসচিব খালেদা জিয়ার বিচার নিয়ে তাড়াহুড়োর সমালোচনা করেন। এক সপ্তাহে পরপর তিন দিন তারিখ দেওয়া হয়েছে, কেন? সরকারের তাড়াহুড়োর কারণ বোঝা যায়। সরকার চায় যত দ্রুত খালেদা জিয়াকে আটকে রাখার ব্যবস্থা করা যায়। কিন্তু আদালতের কারণে জনগন এটা প্রত্যাশা করে না।

ফখরুল বলেন, ‘আমরা মনে করি আদালতের আদেশ ব্যক্তির সাংবিধানিক ও মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। এই আদেশ পরিবর্তন হওয়া উচিত এবং শুনানি বন্ধ করে বিএনপির চেয়ারপারসনের চিকিৎসা দেওয়া উচিৎ বলে মনে করি।’

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হেসেন, মওদুদ আহমদ, রফিকুল ইসলাম মিয়া আবদুল মইন খান, নজরুল ইসলাম, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দীন চৌধুরী অ্যানি প্রমুখ।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here