ঢাকাঃ

বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের নৃশংস হত্যাকাণ্ড এখন দেশের সব থেকে আলোচিত বিষয়। আবরার হত্যা মামলায় গ্রেফতারকৃতরা রিমান্ডে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে নানা তথ্য দিয়েছেন আটককৃত শিক্ষার্থীরা।

আবরারের ওপর নির্যাতনের কথাও তারা স্বীকার করেন। আবরার হত্যা মামলায় ১৯ আসামির ১০ জন বুয়েট ছাত্রলীগের পদধারী; বাকিরা কর্মী ও সমর্থক।

জিজ্ঞাসাবাদে ছাত্রলীগের নেতারা স্বীকার করেন, নির্যাতনের মুখে রাত পোহালেই হল ছেড়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আবরার। শেরেবাংলা হলের দুটি কক্ষে দুই দফায় তার ওপর চলে নির্মম নির্যাতন। এর আগে রাত ৮টায় হলের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে আবরারকে ডেকে নেন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের দুই সদস্য মুনতাসিরুল আল জেমি ও এহেতাশামুল রাব্বি তানিম।

২০১১ ও ২০০৫ নম্বর কক্ষে চালানো হয় নির্যাতন। আবরারের নিস্তেজ দেহ কক্ষে ফেলে রেখে পলাশী মোড়ে কয়েকজন খেতেও যান। রাত ২টার কিছুক্ষণ পর তার মরদেহ নিচে নামিয়ে আনেন কয়েকজন।

মেধাবী ছাত্র আবরারের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের করা চুক্তির সমালোচনা করে ফেসবুকে সমালোচনামূলক স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন। এজন্য তাকে ছাত্রশিবির হিসেবে সন্দেহ করা হয় এবং নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।

ওই ঘটনায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলসহ ১১ নেতাকে স্থায়ীভাবে বহিস্কার করা হয়। গত সোমবার রাতে নিহত আবরারের বাবা বরকতুল্লাহ বাদী হয়ে ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করলে ওই রাতেই হত্যায় সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগে ১০ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতদের গতকাল আদালতে হাজির করে প্রত্যেকের ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেককে পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এ ছাড়া গতকাল গ্রেফতার করা হয় আরও তিনজনকে। তারা হলেন- শামসুল আরেফিন রাফাত, মনিরুজ্জামান মনির ও আকাশ হোসেন। মনির ও আকাশ এজাহারভুক্ত আসামি। রাফাতকে সন্দেহভাজন হিসেবে ধরা হয়। আবরার হত্যা মামলাটি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তদন্ত করছে। এ নিয়ে এ হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার হলো ১৩ জন।

ডিএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেন, আবরার হত্যার ঘটনায় ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদের অল্প সময়ের মধ্যে ধরা হবে।

এছাড়াও ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) আবদুল বাতেন বলেন, গ্রেফতারকৃতরা আবরারের ওপর হামলায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here