ঢাকা ০৫:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মিথ্যা মামলায় ২৪ বছরের সাজা ভোগ করছে হাফেজ আকরাম

আব্দুল্লাহ বাশার, কোটচাঁদপুর (ঝিনাইদহ):

 

২০১৬ সালের জুলাই মাসে এলাকার যুবকদের নিয়ে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে আকরাম হোসেন। ইফতার মাহফিল চলাকালীন সময়ে পুলিশ এসে তাকে ধরে নিয়ে যায়। এক সপ্তাহ খোঁজ মেলেনি আকরামের। এরপর ১১ জুলাই তাকে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেফতার দেখানো হয়। আদালত তাকে ২৪ বছরের কারাদণ্ড। কিন্তু এটা ছিল পুলিশের সাজানো মামলা। আর এই মামলায় কারাভোগ করছে হাফেজ আকরাম হোসেন। মামলাটি মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন হাফেজ আকরাম হোসেনের পিতা মোহাম্মদ আলম বিশ্বাস।

সাবেক শিবির নেতা আকরাম হোসেন ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার বলুহর ইউনিয়নের এড়ান্দা গ্রামের মোহাম্মদ আলম বিশ্বাসের ছেলে ও একটি হাফিজিয়া মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা। তিনি এক কন্যা সন্তানের জনক।

আকরাম হোসেনের পিতা মোহাম্মদ আলম বিশ্বাস সবুজদেশ নিউজকে জানান, হাফেজ আকরাম নিজ গ্রামের মসজিদে এলাকার যুবকদের নিয়ে ২০১৬ সালে ২৮ শে রমজান একটি ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেন। ইফতার মাহফিল চলাকালীন সময় হঠাৎ কোটচাঁদপুর মডেল থানায় কর্মরত পুলিশ অফিসার এসআই সৈয়দ আলী, এস আই বুরুজ বল্লব সাধু, এস আই প্রদীপ কুমার সানা, এস আই সমীরণ কুমার বৈদ্য, এএসআই মোয়াজ্জেমসহ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ইফতার মাহফিলে হানা দিয়ে উঠিয়ে নিয়ে যায় আকরামকে। এক সপ্তাহ গুম করে রাখে তাকে। এরপর তার পরিবারের কাছ থেকে ক্রাস ফায়ারের ভয় দেখিয়ি বেশ কিছু টাকা হাতিয়ে নেন এস আই সৈয়দ আলী।

তিনি আরো জানান, পরে ২০১৬ সালের ১১ জুলাই অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেফতার দেখিয়ে কোর্টে হাজির করানো হয়। সেই মামলায় আসামি করা হয় আরো সাতজনকে। মামলার এজাহারে শিবির নেতা হাফেজ আকরামকে বানানো হয় জঙ্গি। মামলার বিবরণে লেখা হয় অস্ত্র সাজে সজ্জিত হয়ে নাশকতামূলক কার্য সম্পাদনের জন্য সঙ্ঘবদ্ধ হয়েছে উল্লেখ করা হয়। মামলার সকল তথ্য মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্য প্রণোদিত, কাল্পনিক ও সাজানো নাটক বলে জানান তিনি।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, তৎকালীন হাসিনা সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ওই অসৎ পুলিশ অফিসার মিথ্যা সাজানো নাটকের মঞ্চ তৈরি করে। ঐ মিথ্যা মামলার সকল সাক্ষী আসামির পক্ষে সাক্ষী দিলেও ঝিনাইদহের স্পেশাল ট্রাইব্যাল এর সাবেক সিনিয়র জজ মো: নাজিমুদ্দৌলা তাকে ২৪ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেন।

আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রুস্তম আলী সবুজদেশ নিউজকে বলেন, সাক্ষীদের সাক্ষ্য অনুযায়ী আসামি বেখসুর খালাস পাওয়ার কথা কিন্তু বিচারক তাকে ২৪ বছর সাজা দিলেন। সে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার।

বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন উপদেষ্টা আশু হস্তক্ষেপে রাজনৈতিক মিথ্যা মামলা থেকে শিবির নেতা হাফেজ আকরাম মুক্তি পাবে বলে প্রত্যাশা করছেন পরিবার ও এলাকার মানুষ।

সবুজদেশ/এসএএস

About Author Information
আপডেট সময় : ০৮:০৪:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪
২৯ Time View

মিথ্যা মামলায় ২৪ বছরের সাজা ভোগ করছে হাফেজ আকরাম

আপডেট সময় : ০৮:০৪:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪

 

২০১৬ সালের জুলাই মাসে এলাকার যুবকদের নিয়ে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে আকরাম হোসেন। ইফতার মাহফিল চলাকালীন সময়ে পুলিশ এসে তাকে ধরে নিয়ে যায়। এক সপ্তাহ খোঁজ মেলেনি আকরামের। এরপর ১১ জুলাই তাকে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেফতার দেখানো হয়। আদালত তাকে ২৪ বছরের কারাদণ্ড। কিন্তু এটা ছিল পুলিশের সাজানো মামলা। আর এই মামলায় কারাভোগ করছে হাফেজ আকরাম হোসেন। মামলাটি মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন হাফেজ আকরাম হোসেনের পিতা মোহাম্মদ আলম বিশ্বাস।

সাবেক শিবির নেতা আকরাম হোসেন ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার বলুহর ইউনিয়নের এড়ান্দা গ্রামের মোহাম্মদ আলম বিশ্বাসের ছেলে ও একটি হাফিজিয়া মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা। তিনি এক কন্যা সন্তানের জনক।

আকরাম হোসেনের পিতা মোহাম্মদ আলম বিশ্বাস সবুজদেশ নিউজকে জানান, হাফেজ আকরাম নিজ গ্রামের মসজিদে এলাকার যুবকদের নিয়ে ২০১৬ সালে ২৮ শে রমজান একটি ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেন। ইফতার মাহফিল চলাকালীন সময় হঠাৎ কোটচাঁদপুর মডেল থানায় কর্মরত পুলিশ অফিসার এসআই সৈয়দ আলী, এস আই বুরুজ বল্লব সাধু, এস আই প্রদীপ কুমার সানা, এস আই সমীরণ কুমার বৈদ্য, এএসআই মোয়াজ্জেমসহ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ইফতার মাহফিলে হানা দিয়ে উঠিয়ে নিয়ে যায় আকরামকে। এক সপ্তাহ গুম করে রাখে তাকে। এরপর তার পরিবারের কাছ থেকে ক্রাস ফায়ারের ভয় দেখিয়ি বেশ কিছু টাকা হাতিয়ে নেন এস আই সৈয়দ আলী।

তিনি আরো জানান, পরে ২০১৬ সালের ১১ জুলাই অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেফতার দেখিয়ে কোর্টে হাজির করানো হয়। সেই মামলায় আসামি করা হয় আরো সাতজনকে। মামলার এজাহারে শিবির নেতা হাফেজ আকরামকে বানানো হয় জঙ্গি। মামলার বিবরণে লেখা হয় অস্ত্র সাজে সজ্জিত হয়ে নাশকতামূলক কার্য সম্পাদনের জন্য সঙ্ঘবদ্ধ হয়েছে উল্লেখ করা হয়। মামলার সকল তথ্য মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্য প্রণোদিত, কাল্পনিক ও সাজানো নাটক বলে জানান তিনি।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, তৎকালীন হাসিনা সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ওই অসৎ পুলিশ অফিসার মিথ্যা সাজানো নাটকের মঞ্চ তৈরি করে। ঐ মিথ্যা মামলার সকল সাক্ষী আসামির পক্ষে সাক্ষী দিলেও ঝিনাইদহের স্পেশাল ট্রাইব্যাল এর সাবেক সিনিয়র জজ মো: নাজিমুদ্দৌলা তাকে ২৪ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেন।

আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রুস্তম আলী সবুজদেশ নিউজকে বলেন, সাক্ষীদের সাক্ষ্য অনুযায়ী আসামি বেখসুর খালাস পাওয়ার কথা কিন্তু বিচারক তাকে ২৪ বছর সাজা দিলেন। সে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার।

বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন উপদেষ্টা আশু হস্তক্ষেপে রাজনৈতিক মিথ্যা মামলা থেকে শিবির নেতা হাফেজ আকরাম মুক্তি পাবে বলে প্রত্যাশা করছেন পরিবার ও এলাকার মানুষ।

সবুজদেশ/এসএএস