মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর বিমান হামলায় নিহত ৭
সবুজদেশ ডেস্কঃ
মিয়ানমারের স্যাগাইং অঞ্চলের একটি গ্রামে দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর বিমান হামলায় অন্তত ৭ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। বুধবার গভীর রাতে স্যাগাইংয়ের ওই গ্রামে সশস্ত্র বাহিনী বিমান হামলা চালিয়েছে বলে স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
প্রায় দুই বছর আগে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের পর থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটি নজিরবিহীন এক সঙ্কটের মুখোমুখি হয়েছে। গণতন্ত্রের পথে এক দশকের অস্থায়ী যাত্রার অবসান ঘটিয়ে সামরিক জান্তার ক্ষমতা দখল বিশ্বজুড়ে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।
সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থানের বিরোধীরা গেরিলা বাহিনী গঠন করে গণতান্ত্রিক সরকার ফিরিয়ে আনার দাবিতে আন্দোলন করছেন।
এক প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা ও বিবিসি বার্মিজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বুধবার গভীর রাতে স্যাগাইংয়ের কাথা শহরের মোয়ে তার লে গ্রামে ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে সামরিক বিমান থেকে বোমা ফেলা হয়েছে। তবে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম রয়টার্স এই তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে পারেনি বলে জানিয়েছে।
এই বিষয়ে মন্তব্য জানতে তাৎক্ষণিকভাবে মিয়ানমারের জান্তার একজন মুখপাত্রের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি, বলছে রয়টার্স।
প্রত্যক্ষদর্শী এবং গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, সামরিক বাহিনীর বোমা হামলায় অন্তত সাতজন গ্রামবাসী মারা গেছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজনের দেহ পুড়ে যাওয়ায় পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। বোমা হামলায় আহত হয়েছেন আরও কমপক্ষে পাঁচজন।
বোমা হামলার প্রত্যক্ষদর্শী ৪৪ বছর বয়সী জিন বলেন, কয়েক ডজন বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে এবং কিছু জেলায় যোগাযোগ ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে।
টেলিফোনে রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘ভয়ানকভাবে পুড়ে যাওয়া কিছু মৃতদেহ গতকাল রাতে দাফন করা হয়েছে এবং অন্যদের আজ দাফন করা হবে।’ নিরাপত্তার কারণে নিজের পুরো নাম প্রকাশ করতে অস্বীকৃতি জানান জিন।
আরও বিমান হামলার আশঙ্কায় স্থানীয় বাসিন্দারা মোয়ে তার লে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সেনাবাহিনী নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করার পর থেকে সংঘাতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে মিয়ানমার। দেশজুড়ে প্রতিরোধ আন্দোলন ও কিছু সশস্ত্র গোষ্ঠী আবির্ভূত হয়েছে। আর এসব গোষ্ঠীকে মোকাবিলায় জান্তা বাহিনী প্রায়ই প্রাণঘাতী শক্তি ব্যবহার করছে।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ মিয়ানমারের সহিংসতা বন্ধ এবং ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চিসহ সব রাজনৈতিক বন্দীকে মুক্তি দিতে দেশটির সেনাবাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
সূত্র: রয়টার্স।