জিম্মিদের মুক্তির সময় একের পর এক মানবিক আচরণ করে আসছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাস। এবার জিম্মিদের মুক্তির সময় অসাধারণ দৃশ্যের দেখা মিলিছে। মুক্তির সময় যোদ্ধার কপালে চুমু দিয়ে অনন্য নজির স্থাপন করেছে এক ইসরায়েলি জিম্মি।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি তিন জিম্মিকে মুক্তির জন্য মঞ্চে হাজির করা হয়েছে। তাদের গাজার নুসেইরাত এলাকা থেকে মুক্তি দেওয়া হবে। তারা হলেন এলিজা কোহেন, ওমর ওয়েঙ্কার্ট এবং ওমর শেম টভ।
আল জাজিরার জানিয়েছে, মঞ্চে হাজির করার পর জিম্মিদের হাসতে এবং উল্লসিত ফিলিস্তিনি জনতার দিকে ইঙ্গিত করতে দেখা গেছে। এ সময় বন্দিদের মধ্যে একজন তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ফিলিস্তিনি যোদ্ধার কপালে চুমু খেয়েছেন।
এর আগে ১৫ ফেব্রুয়ারি টাইমস অব ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজা থেকে জিম্মিদের মুক্তির সঙ্গে সঙ্গে উপহার দিয়ে আসছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাস। তবে এবার এক অনন্য নজির স্থাপন করেছে গোষ্ঠীটি। জিম্মির মেয়ের জন্মে অনন্য উপহার দিয়েছে তারা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এদিন তিন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল। মুক্তিপ্রাপ্তরা হলেন- ইয়ার হর্ন, সাগি ডেকেল-চেন এবং আলেকজান্ডার ট্রুফানোভ। তারা ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরে হামাসের হাতে জিম্মি হন। এ সময় তাদের উপহার ও সনদপত্র তুলে দেওয়া হয়।
একটি সূত্র জানায়, জিম্মি সাগুই ডেকেল-চেনকে তার মেয়ের জন্য অনন্য উপহার দিয়েছে হামাস। তিনি জিম্মি হওয়ার চার মাস পর কন্যাসন্তানের বাবা হন। মুক্তির সময় তার মেয়ের জন্য উপহার হিসেবে একটি স্বর্ণমুদ্রা দিয়েছে তারা।
এর আগে যুদ্ধবিরতির চুক্তি অনুযায়ী প্রথম ধাপে জানুয়ারিতে হামাসের হাতে জিম্মি থাকা ৩ ইসরায়েলি বেসামরিক নারী মুক্তি পান। এ সময় ঘরে ফেরা বন্দিদের হাতে একটি করে ‘উপহারের’ ব্যাগও তুলে দেন হামাস যোদ্ধারা।
সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত লাইভ ভিডিওতে দেখা যায়, আনুষ্ঠানিক পরিবেশের মধ্যে হাসিমুখে তিন নারী একটি গাড়িতে উঠে বসেন। তখন চারপাশে বেশ কয়েকজন কমলা রঙের ভেস্ট পরিহিত রেডক্রসের কর্মী, নেকাবে মুখ ঢাকা হামাস যোদ্ধা এবং বহু সাধারণ মানুষ আনন্দ প্রকাশ করেন।
ভিডিওতে দেখা যায়, ওই তিন নারী গাড়িতে উঠে বসার পর গাড়ির জানালার পাশেই হামাসের সদস্যরা ৩টি স্মারক সনদে স্বাক্ষর করেন। রেড ক্রসের আন্তর্জাতিক কমিটির (আইসিআরসি) সদস্যদেরও এই সনদে স্বাক্ষর করতে দেখা যায়। এরপর সনদগুলো মুক্তি পাওয়া তিন নারীর হাতে তুলে দেওয়া হয়।
সনদে আরবিতে বড় করে ‘মুক্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে’ শব্দগুলো লেখা ছিল। ওই সনদ হাতে নিয়ে জিম্মিদের হাসিমুখে ছবি তুলতেও দেখা যায়। এরপর তাদের প্রত্যেকের হাতে একটি করে উপহারের ব্যাগও তুলে দেন হামাস সদস্যরা। হাস্যোজ্জ্বল চেহারায় তারা উপহারের ব্যাগ গ্রহণ করেন।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, বন্দি অবস্থায় থাকাকালীন পণবন্দিদের বিভিন্ন মুহূর্তের ছবি রয়েছে ওই উপহারের ব্যাগে। জানা যাচ্ছে, গাজার মাটিতে যে দীর্ঘ সময় তারা কাটিয়েছিলেন, তার মধ্যে ভালো মুহূর্তগুলো যাতে স্মরণীয় হয়ে থাকে তার জন্যই এ উদ্যোগ হামাসের। এ ছাড়াও গাজা উপত্যকার একটি মানচিত্রও ছিল ওই উপহারের ব্যাগে।
সবুজদেশ/এসইউ