সবুজদেশ ডেক্সঃ মুন্সিগঞ্জ জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে হামলার পর ভাঙচুর ও নেতা-কর্মীদের পিটিয়ে আহত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে সুপারমাকের্ট এলাকায় দলীয় কার্যালয়ে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় কমপক্ষে ১২ জন নেতা-কর্মীকে পিটিয়ে আহত হওয়ার কথা নিশ্চিত করেছে বিএনপি। ধানের শীষের প্রার্থীর দাবি, নৌকার প্রার্থী তাঁর লোকজন দিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন।

এ ঘটনায় আহত ব্যক্তিরা হলেন মুন্সিগঞ্জ শহর বিএনপির সহসভাপতি মো. শাহিন মিয়া (৪০), মোস্তাফিজুর রহমান (৪০), মোতালেব সরদার (৬০), শহর শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. বাবুল হোসেন (৪০), জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদ মো. মহিউদ্দিন (৩৫), যুবদল নেতা এ আর খান টিপু, ইকবাল হোসেন, রিপন, আবু তাহেরসহ আরও কয়েকজন। আহত ব্যক্তিদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিএনপির কিছু নেতা-কর্মী দলীয় কার্যালয়ে বসেছিলেন। হঠাৎ ১৫-২০ জনের একটি দল ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে লাঠিসোঁটা নিয়ে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের ভেতরে ঢোকে। পরে তারা দলীয় কার্যালয়ের চেয়ার–টেবিল ভাঙচুর করে। এ সময় কার্যালয়ে থাকা বিএনপির নেতা–কর্মীদেরও পেটানো হয়।

বিএনপির দাবি, আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সমর্থকেরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। বিএনপির সমর্থকেরা যেন ভোটের মাঠে থাকতে না পারে এবং দলীয় কর্মীরা যেন কার্যালয়ে আসতে না পারে, সে জন্য নৌকার প্রার্থী এ ঘটনা ঘটিয়েছেন।

বিএনপরি প্রার্থী আবদুল হাই প্রথম আলোকে বলেন, হামলার সময় নৌকার প্রার্থী মৃণাল কান্তি দাসের গাড়ি পার্টি অফিস থেকে মাত্র ১০০ হাত দূরে ছিল। মৃণাল কান্তি গাড়ির মধ্যেই ছিলেন। বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের নিচেই পুলিশ অবস্থান করছিল। তিনি আরও বলেন, ‘মৃণাল কান্তির নির্দেশে আমাদের পার্টি অফিসে হামলা করা হয়েছে। আমাদের কমপক্ষে ১২ জন নেতা–কর্মীকে চেয়ার ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত ও আহত করা হয়েছে।’

আবদুল হাই অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা ইউনিয়ন পর্যায়ে একটি নির্বাচনী ক্যাম্প বানাতে পারি না। আমাদের পোষ্টার লাগানোর পর, তা ছিঁড়ে ফেলা হয়। নৌকার প্রার্থী নিজে আমাদের নেতা-কর্মীদের মাঠে না থাকার জন্য ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন।’ এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নিতে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা পুলিশের কাছে অনুরোধ জানান তিনি।

তবে হামলা চালানোর বিষয়টি অস্বীকার করেছেন নৌকার প্রার্থী মৃণাল কান্তি দাস। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘সন্ধ্যায় আমি সেখানে ছিলাম। তখন হামলার কোনো কথা শুনিনি। আমি আপনার (প্রতিবেদক) মাধ্যমেই প্রথম শুনলাম।’ তিনি আরও বলেন, ‘হামলার রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে না। এটি আমাদের আদর্শ নয়। আমরা কাউকে ভয়ভীতিও দেখাইনি।’ উল্টো বিএনপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভয় দেখানোর অভিযোগ তোলেন মৃণাল কান্তি দাস।

মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ঘটনার খবর পেয়ে সেখানে যাই। দুর্বৃত্তরা হামলা করে পার্টি অফিস ভাঙচুর করে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। ঘটনার সঙ্গে কে বা কারা জড়িত, তা এখনো জানা যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা সায়লা ফারজানা প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার খবর শুনেই সেখানে পুলিশ পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনী ক্যাম্প করতে না দেওয়া, পোস্টার ছেঁড়াসহ অন্যান্য বিষয়ে লিখিতভাবে জানালে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here