মোবারকগঞ্জ চিনিকলে অবৈধ নিয়োগের শ্রমিক নিতে তোড়জোড়
বিগত সরকারের আমলে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ মোবারকগঞ্জ চিনিকলে দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে অবৈধ নিয়োগকৃত শ্রমিকদের আবারও কাজে লাগাতে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। এ নিয়ে সোমবার সকালে পক্ষে-বিপক্ষে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে মোবারকগঞ্জ চিনিকল এলাকায়।
এ প্রতিবেদকের হাতে আসা কয়েকটি চিঠিতে ১৩৭ জনের নাম পাওয়া গেছে। যারা গত মৌসুমে বিভিন্ন পদে ৪৯০ টাকায় দৈনিক হাজিরায় কাজ করেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০২৩-২০২৪ আখ মাড়াই মৌসুমে দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে মিলটির বিভিন্ন বিভাগে ১৩৭ জন শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয়। ঝিনাইদহ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার ও মোবারকগঞ্জ চিনিকল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি গোলাম রসুল এ সকল শ্রমিকের তালিকা চিনিকল কর্তপক্ষের কাছে প্রদান করে। টাকার বিনিময়ে এসব শ্রমিকদের কাজে লাগায় গোলাম রসুল। ১৩৭ জন শ্রমিকের অধিকাংশই ছাত্রলীগ যুবলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। রয়েছে উপজেলা ছাত্রলীগ ও যুবলীগের পদধারী নেতারা। ৫ আগস্ট বিগত সরকারের পতনের পর আত্মগোপনে চলে যায় গোলাম রসুলসহ অবৈধভাবে নিয়োগকৃত অনেক শ্রমিক। আগামী ১৩ ডিসেম্বর সুগার মিলের ২০২৪-২০২৫ আখ মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধন। এজন্য আবারও জনবল সংকট কাটাতে আওয়ামী লীগের সময়ে নিয়োগকৃত ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীদের পুনরায় কাজে নেওয়ার তৎপরতা চলছে।
সাধারণ শ্রমিকরা জানায়, বিগত সরকারের সময়ে অবৈধভাবে নিয়োগের দৈনিক হাজিরার শ্রমিকদের ২০২৪-২০২৫ আখ মাড়াই মৌসুমে কাজে লাগাতে সোমবার সকালে ব্যবস্থাপনা পরিচালককে চাপ দেয় বহিরাগত একটি পক্ষ। কিন্তু চিনিকলে কর্মরত বর্তমান শ্রমিকরা এর বিরোধিতা করেন। এতে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় দুই পক্ষের মধ্যে। পরে যৌথবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীদের পুনর্বাসন করছে। যদি পূর্বের ন্যায় তারা আবারও কাজের সুযোগ পায় তাহলে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা করছে সাধারণ শ্রমিকরা।
মিলটির সাধারণ শ্রমিক ইলিয়াস রহমান মিঠু সবুজদেশ নিউজকে বলেন, বিগত সরকারের সময়ে একদমই অবৈধভাবে ১৩৭ জন শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নূন্যতম এসকল শ্রমিকদের সাক্ষাৎকারও নেওয়া হয়নি। সাবেক এমপি আনার ও তার বন্ধু গোলাম রসুল টাকার বিনিময়ে এ সকল শ্রমিকদের নিয়োগ দেয়। আর এ কাজে মিলটির বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সহায়তা করেছে। বহিরাগত একটি পক্ষ পূর্বের ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীদের আবারও কাজে লাগাতে উঠে-পড়ে লেগেছে।
আরেক শ্রমিক জবেদ আলী সবুজদেশ নিউজকে বলেন, গত মৌসুমে নিয়োগ পাওয়া ১৩৭ জনের অধিকাংশই ছাত্রলীগ-যুবলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। তাদের আবারও কাজে লাগাতে চাই মিল কর্তৃপক্ষ। পুনরায় এ মৌসুমে তাদের কাজে লাগালে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হতে পারে।
এ ব্যাপারে চিনিকলটির ব্যবস্থপনা পরিচালক সাইফুল আলম সবুজদেশ নিউজকে বলেন, যে অভিযোগ করা হচ্ছে এটা সঠিক না। যে ১৩৭ জন নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল সেটি দৈনিক হাজিরায়। তাদের কোন নিয়োগই নাই। তাদের পুনরায় কাজে নেওয়া হবে না।
সবুজদেশ/এসএএস