যশোরে কিশোরী গণধর্ষণে জড়িত ‘কিশোর গ্যাং’
যশোরঃ
যশোরে এক কিশোরীর গণধর্ষণ মামলা তদন্ত করতে গিয়ে ‘কিশোর গ্যাংয়ের’ সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে পুলিশ। এই গ্যাংয়ের আট সদস্য দুই দফায় ওই কিশোরীকে গণধর্ষণ করে, যাদের সম্পর্কে ভয়ঙ্কর তথ্য দিয়েছে পুলিশ।
এর মধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার কিশোর গ্যাংয়ের তিন সদস্য হলেন শহরের শংকরপুর গোলপাতা মসজিদ এলাকার আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে আল আফসান পুষ্প, খড়কি দক্ষিণ হাজামপাড়ার আব্দুর রশিদের ছেলে রায়হান (২০) ও সোহরাব হোসেনের ছেলে শাকিল (২০)।
শনিবার (০৪ জানুয়ারি) দুপুরে গ্রেফতারদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এর আগে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানিয়েছেন।
তৌহিদুল ইসলাম বলেন, গত ২ নভেম্বর এক কিশোরীকে (১৫) অসুস্থ অবস্থায় যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই কিশোরী গণধর্ষণের অভিযোগ করায় ওই দিনই কোতোয়ালি থানায় মামলা করা হয়। কোতোয়ালি ও ডিবি পুলিশ যৌথভাবে মামলার তদন্ত ও আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু করে।
গত বৃহস্পতিবার (০২ জানুয়ারি) ভোরে মামলার প্রধান আসামি পুষ্পকে খুলনার সোনাডাঙ্গা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী শুক্রবার (০৩ জানুয়ারি) রাতে গোপালগঞ্জ ও খড়কি এলাকা থেকে রায়হান ও শাকিলকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক তদন্ত, বাদীর সাক্ষ্য ও আসামিদের জবানবন্দিতে পুলিশ জানতে পারে, আল আফসান পুষ্প প্রথমে ওই কিশোরীর সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তোলে। গত ১ নভেম্বর রাত ১০টার দিকে কিশোরীকে মোটরসাইকেলে করে খড়কি ডাক্তারবাড়ির পেছনে বাগানের ভেতর নিয়ে যায় পুষ্প।
সেখানে জোর করে কিশোরীকে মদ খাইয়ে গণধর্ষণ করে পুষ্প, তার বন্ধু রায়হান, শাকিল, রবিউল ও শাহদিয়া। এরপর কিশোরীকে পুষ্পের বন্ধু শহরের লোন অফিসপাড়ার হৃদয়ের ভাড়া বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে দ্বিতীয় দফায় কিশোরীকে গণধর্ষণ করে পুষ্প, ভাগ্নে মামুন, হৃদয় ও ন্যাটা মামুন।
পরদিন ২ নভেম্বর কিশোরীকে যশোর পৌরপার্কে নিয়ে যায় হৃদয়, ভাগ্নে মামুন ও ন্যাটা মামুন। সেখানে কিশোরী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নিয়ে যায় তারা।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ফেসবুকসহ নানা মাধ্যমে উঠতি বয়সী তরুণী ও কিশোরীদের সঙ্গে বন্ধুত্ব িএবং প্রেমের সম্পর্ক গড়ে বন্ধুদের নিয়ে গণধর্ষণ করে এই কিশোর গ্যাং। পাশাপাশি এরা মাদকের সঙ্গেও জড়িত। এই গ্যাংয়ের অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রেখেছে পুলিশ। পাশাপাশি এই চক্র আরও কী কী অপরাধের সঙ্গে জড়িত তাও খতিয়ে দেখা হবে।