যশোরঃ
যশোরে শেখ হাসিনার জন্মদিনের অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি ও হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সিনিয়র নেতাদের চেয়ারে বসানোকে কেন্দ্র করে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর আওয়ামী লীগের সমর্থকদের মধ্যে এই হাতাহাতি ও হট্টগোল হয়। তবে এই ঘটনায় কেউ আহত না হলেও দলীয় কার্যালয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৬তম জন্মদিন উপলক্ষে বুধবার দুপুরে শহরের গাড়িখানা এলাকার দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে জেলা আওয়ামী লীগ। অনুষ্ঠান শুরুর আগে পৌর আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত হন। পরে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলনের নেতৃত্বে একটি মিছিল নিয়ে তার সমর্থকরা দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠানে আসেন।
এসময় সিনিয়রদের উপেক্ষা করে জুনিয়ররা সামনের সারিতে বসা নিয়ে বিবাদের সূত্রপাত হয়। এ নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মাহমুদ হাসান বিপু বিবাদে জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে দুই নেতার সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতি ও হট্টগোলের ঘটনা ঘটে। পরে সাংবাদিকরা ছবি তোলা ও ভিডিও করতে থাকলে নিজেরাই নিবৃত্ত হয়ে যান তারা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র দুই নেতা জানান, মিছিল সহকারে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন দলীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করে তার সংরক্ষিত সভাপতির চেয়ারটিতে বসেন। তার কয়েকটি চেয়ার পরেই সভাপতির ছেলে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সামির ইসলাম পিয়াস, অধ্যাপক মোয়াজ্জেম হোসেন, মৎস্য সমিতির নেতা ফিরোজ হোসেন সিনিয়র নেতাদের চেয়ারগুলো দখল করে নেন। এসময় জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম আফজাল হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ হারুনুর রশিদ, আইন বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল কাদিরসহ অনেক সিনিয়র নেতা চেয়ার না পেয়ে পেছনের সারিতে বসেন ও দাঁড়িয়ে থাকেন।
এক পর্যায়ে পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মাহমুদ হাসান বিপু সিনিয়র নেতাদের বসার সুযোগ করে দিতে জুনিয়র সদস্যদের আহ্বান জানালে উত্তেজিত হয়ে যান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন। এরপর একে অপরের সঙ্গে বিবাদে জড়ান। পরবর্তীতে জেলার সভাপতির সমর্থক ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতি ও হট্টগোলের ঘটনা ঘটে। এসময় মিলন বারবার বিপুর দিকে তেড়ে যান।
বছরখানেক আগে পুলিশি নির্যাতনের ঘটনা টেনে এনে বিপুকে উদ্দেশ্য করে সভাপতি মিলন বলেন, ‘পুলিশ দিয়ে তোকে পিটায়ে হয়নি; মার খেয়েও সব ভুলে গেছিস। আরও পিটানোর দরকার তোর!’
অনুষ্ঠানে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কোতোয়ালি মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সফিক সাংবাদিকের বলেন, অনুষ্ঠানে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে কিছুটা উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল। পরে দুপক্ষের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
এই বিষয়ে পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মাহমুদ হাসান বিপু কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। আর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনের কাছে বক্তব্য চাইলে তিনি বলেন, ‘হাতাহাতি নয়; আপনারা লিখবেন মারামারি করেছি।’
এদিকে, হাতাহাতি ও হট্টগোলের ঘটনার পরে অনুষ্ঠানে যোগ দেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার। এরপর জেলা আওয়ামী লীগের সব স্তরের নেতাদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৬তম জন্মদিন উপলক্ষে দোয়া ও কেক কাটা হয়।