যশোরে ফাঁসির রায় কার্যকরে প্রস্তুত ৫ জল্লাদ
যশোর:
ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি আজিজুল ওরফে আজিদ ওরফে আজিজ (৫০) ও মিন্টু ওরফে কালুর (৫০) ফাঁসির রায় কার্যকরে সব প্রস্তুত সম্পন্ন করেছে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষ।
সোমবার রাত পৌনে ১১টায় কেন্দ্রীয় কারাগারের ফাঁসির মঞ্চে দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হবে। ফাঁসি কার্যকরে প্রশিক্ষিত ৫ জল্লাদ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার খাসকররা ইউনিয়নের রায়লক্ষ্মীপুর গ্রামের আলী হিমের ছেলে মিন্টু ওরফে কালু ও একই গ্রামের বদর ঘটকের ছেলে আজিজ ওরফে আজিজুল।
যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলর তুহিন কান্তি খান বলেন, সোমবার রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে দুই আসামির ফাঁসির রায় কার্যকর করা হবে। এজন্য আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সব প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। ফাঁসি কার্যকরে মশিয়ার, কেতু কামালসহ পাঁচ জল্লাদ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ সময় জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও সিভিল সার্জনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। ইতোমধ্যে আসামির পরিবারের পক্ষ থেকে শেষ দেখা করে গেছেন অনেকেই।
জানা যায়, ২০০৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর আলমডাঙ্গা থানার জোড়গাছা গ্রামের কমেলা খাতুন ও তার বান্ধবী ফিঙ্গে বেগমকে রায়লক্ষ্মীপুর মাঠে হত্যা করা হয়। হত্যার আগে তাদের দুজনকে ধর্ষণ করা হয় বলে পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধের পর মৃত্যু নিশ্চিত করতে গলা কাটা হয় ওই দুই নারীর। এ ঘটনায় খুনের পরদিন নিহত কমেলা খাতুনের মেয়ে নারগিস বেগম আলমডাঙ্গা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত ওই দুজনসহ চারজনকে আসামি করা হয়। অপর দুজন হলেন একই গ্রামের সুজন ও মহি। মামলা বিচারাধীন অবস্থায় মারা যান আসামি মহি। ২০০৭ সালের ২৬ জুলাই চুয়াডাঙ্গার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল সুজন, আজিজ ও মিন্টুকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন।
এরপর আসামিপক্ষের লোকজন হাইকোর্টে আপিল করেন। ২০১২ সালে ১১ নভেম্বর নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখার আদেশ দেন হাইকোর্ট। চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগ দুই আসামির রায় বহাল রাখেন এবং অপর আসামি সুজনকে খালাস দেন। এ বছরের ২০ জুলাই যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান সুজন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুজন রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চান, কিন্তু তা নামঞ্জুর হয়। ৬ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে কারা অধিদফতরকে চিঠি দেয়। যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার ৮ সেপ্টেম্বর সেই চিঠি গ্রহণ করে। এরপর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে পদক্ষেপ গ্রহণ করে কারা কর্তৃপক্ষ।