যশোরে বিদেশ ফেরত ২৩ হাজার, হোম কোয়ারেন্টাইনে ৩৩২ জন
যশোর প্রতিনিধিঃ
যশোরে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৮ মার্চ পর্যন্ত বিদেশ থেকে এসেছেন ২৩ হাজার ৩৯৪ জন। এদের মধ্যে মাত্র ৩৩২ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। বাকিরা কী অবস্থায় আছেন তা জানা নেই প্রশাসনের।
তবে তাদের অবস্থান সনাক্ত করতে যশোরের আট উপজেলায় বিদেশ ফেরতদের তালিকা পাঠানো হয়েছে। এছাড়া জেলার সব ইউপি সদস্যকে প্রধান করে একটি করে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
শনিবার দুপুরে যশোর সার্কিট হাউজে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের লক্ষ্যে গঠিত যশোর জেলা কমিটির জরুরি সভায় এ তথ্য জানান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফ।করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভা শেষে বের হয়ে আসলে কয়েকজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অনেকে বিদেশ থেকে এসে হোম কোয়ারেন্টাইনের ভয়ে আত্মীয়-স্বজন বাড়ী বেড়াতে গিয়েছেন।
যশোর জেলা প্রশাসক ও করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ শফিউল আরিফ বলেন, গত এক মাসে ২৩ হাজার মানুষ বিদেশ থেকে যশোরে আসলেও হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন মাত্র ৩৩২ জন। বাকিরা কোথায় আছেন, কিভাবে আছেন তার কোন চিত্র প্রশাসনের কাছে নেই। আমাদের কাছে ২৩ হাজার ব্যক্তির একটি তালিকা পাঠানো হয়েছে। যাদের পাসপোর্টে যশোরের ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে। তবে তারা সবাই যশোরে অবস্থান করছেন কিনা তা আমাদের জানা নেই। তালিকাটি সব উপজেলায় পাঠানো হয়েছে।যশোরে অবস্থান করলে সব বিদেশফেরত ব্যক্তিকে পর্যাবেক্ষণে আনতে জেলা প্রশাসন কাজ করছে। আবার অনেকেই যারা হোম কোয়ারেন্টাইনের আছেন বলে বলা হচ্ছে তারাও সঠিকভাবে নিয়ম মানছেন না।
সংগত কারণে যশোরে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এই কাজের জন্য প্রতিটি ওয়ার্ডে ইউপি সদস্য দিয়ে একটি করে কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি ওয়ার্ডের বিদেশফেরত ব্যক্তির হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করবে। কোন ব্যক্তি কমিটির নির্দেশনা না মানলে জেলা প্রশাসন তার বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগ করবেন।
জেলা সিভিল সার্জন সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন বলেন, যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালসহ সকল উপজেলা হাসপাতালে সাড়ে চারশ’ বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সিভিল সার্জন অফিসের পক্ষ থেকে বলা হয় আলাদা আইসুলেশন ওয়ার্ড, সেবিকা, রোগী পরিবহনের জন্য আলাদা অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া বেনাপোল স্থলবন্দরে করোনাভাইরাস পরীক্ষায় জনবল বৃদ্ধি করা হয়েছে। ভারত থেকে আসা যাত্রীদের স্ক্যানার এবং অতিরিক্ত হ্যান্ড থার্মাল স্ক্যানারের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হচ্ছে।
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক দিলীপ কুমার রায় বলেন, হাসাপাতালে রোগীর সাথে আসা স্বজনদের সংখ্যার ব্যাপারে কোন আইন না থাকার কারণে ভিড় বেড়ে যাচ্ছে। এতে করে হাসপাতালে ভিজিটিং আওয়ারে লোক সমাগম অনেক বেশি হচ্ছে। আর এতে সংক্রামন রোগের ঝুঁকি বেড়ে যতে পারে। তবে সচেতনতার ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কাজ করে যাচ্ছে।
সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল, যশোর পৌর মেয়র জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সালাউদ্দীন শিকদার, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিন্টু, জেলা সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন, যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক দিলীপ কুমার রায় প্রমুখ, প্রেস ক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন প্রমুখ।