যশোরে মা-মেয়েসহ নিহত ৬, ক্ষতিগ্রস্থ ২ লক্ষ পরিবার
যশোর প্রতিনিধিঃ
ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাÐবে গাছ উপড়ে পড়ে যশোরে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন এলাকা অসংখ্য কাঁচা ঘরবাড়ি ও গাছপালা ভেঙ্গে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মণিরামপুর, শার্শা, অভয়নগর, কেশবপুর ও চৌগাছায় উপজেলায়। ভেঙ্গে পড়েছে বিদ্যুতের খুটি। বিদ্যুতের খুটি ভেঙ্গে পড়ায় সমগ্র জেলায় বিদ্যুৎ বিছন্ন রয়েছে। বৃহস্পতিবার যশোর জেলার এমন বিধ্বস্ত এ চিত্র দেখা গেছে। এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় প্রবল গতিতে যশোরে ঘূর্ণিঝড় আম্পান আঘাত হানে। ঝড়ের তাÐব চলে সারারাত। তবে বৃহস্পতিবার সারাদিনও থেমে থেমে বাতাস ও গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি অব্যহত রয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে মতে, আম্পানের আঘাতে যশোরের আট উপজেলায় ১ লক্ষ ৬৭ হাজার ৫শ’ ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১ শ’ ১৫ একর সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। দুই হাজার ৮৫০ টি প্রাণী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তান্ডবে গাছ উপড়ে পড়ে ৬ জন মারা গেছে ও অর্ধশতাধিক আহত হয়েছে। এছাড়া দেশের ঐতিহ্যবাহী যশোর বেনাপোল সড়কের শতবর্ষী প্রায় অর্ধশতাধিক গাছ ক্ষতিগ্রস্ত ও সড়কের উপরে উপড়ে পড়েছে। এতে বৃহস্পতিবার এই সড়কে বিভিন্ন পণ্যবাহী ট্রাক ও জরুরি যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে।
(২১ মে) বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন জানান, আম্পানের আঘাতে যশোরের ৮টি উপজেলার ৯৩টি ইউনিয়ন এলাকায় কম বেশি ক্ষতি হয়েছে। গাছ উপড়ে পড়ে যশোরের ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে চৌগাছা উপজেলার চায়না বেগম (৪৫) ও তার মেয়ে রাবেয়া খাতুন (১৫), বাঘারপাড়ার উপজেলার দরাজহাট এলাকার ডলি বেগম (৪৫), শার্শা উপজেলার ময়না খাতুন (৪০), জামতলা এলাকার মুক্তার আলী (৬৫) ও একই এলাকার গোপাল চন্দ্র (৫০) মৃত্যুবরণ করেছে। অনেক এলাকায় ঘর ভেঙে পড়েছে। কিছু এলাকায় ঘরের আংশিক ক্ষতি হয়েছে। সব মিলিয়ে যশোরে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার রয়েছে দুই লক্ষাধিক পরিবার।
যশোরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফ বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে যশোরে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অনেক বাড়িঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদসহ বহু স্থাপনা ভেঙে গেছে। উপড়ে গেছে বহু গাছপালা ও বিদ্যুতের খুঁটি। অনেক গ্রামের কাচা রাস্তা পানির তোড়ে ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এদিকে জেলায় ১৮১ জন আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া লোকজন বাড়ি ফেরা শুরু করেছেন। যশোরে ৬ জন মৃত্যুবরণ করেছে। মৃত্যুবরণকারী প্রতিটি পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রস্তত করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের দ্রæতই ত্রাণ ও বসতবাড়ি পুনঃনির্মানের ব্যবস্থা করা হবে।