যশোরে আত্মসাৎকৃত ৭ হাজার ১৪০ বস্তা সরকারি সারের মধ্যে ৩ হাজার ১৫ বস্তা উদ্ধার করেছে ডিবি পুলিশ। গত কয়েকদিনে যশোর ও ঝিনাইদহের চারটি স্থান থেকে এ সার উদ্ধার এবং জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়।
এরমধ্যে সর্বশেষ ১৯ মার্চ (বুধবার) মণিরামপুরের জয়পুর গোপের বাজার থেকে ৪০০ বস্তা উদ্ধার ও একজনকে গ্রেফতার করে মধ্যরাতে গণমাধ্যমে জানায় ডিবি পুলিশ।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন, যশোর সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর ইউনিয়নের চাউলিয়া গ্রামের নুর ইসলাম মোল্লার ছেলে মিলন হোসেন, অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া দক্ষিণপাড়ার কেরামত আলীর ছেলে আবু বক্কর ও বাঘারপাড়া উপজেলার নারকেলবাড়িয়া গ্রামের অনাত সাহার ছেলে উজ্জ্বল কুমার সাহা।
ডিবির ওসি মঞ্জুরুল হক ভুঁইয়া সাংবাদিকদের বলেন, যশোর জেলার অভয়নগরের নভো ট্রেড অ্যান্ড ট্রান্সপোর্ট থেকে সরকারি বিসিআইসি ইউরিয়া সার ফরিদপুর টেপাখোলা বাফার গোডাউনে পাঠানোর জন্য অভিযুক্তদের সঙ্গে চুক্তি করেন ওই ট্রান্সপোর্টের প্রতিনিধি মোস্তাফিজুর রহমান মিল্টন। গত ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৪৮টি ট্রাকের মাধ্যমে মোট ৩১ হাজার ৩৬০ বস্তা সার পাঠানো হয়। যার মূল্য ৪ কোটি ৩৯ লাখ চার হাজার টাকা। কিন্তু ৩৩টি ট্রাক গন্তব্যে পৌঁছালেও ১৫টি ট্রাকের সাত হাজার ১৪০ বস্তা সার পৌঁছেনি। সেগুলো আত্মসাৎ করা হয়। যার দাম ৯৯ লাখ ৯৬ হাজার টাকা। এ বিষয়ে ডিবির কাছে অভিযোগ দেয় মোস্তাফিজুর রহমান। এরপর যশোর জেলার পুলিশ সুপার রওনক জাহানের নির্দেশে তদন্ত করতে মাঠে নামেন ডিবি পুলিশ।
ডিবি পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মনজুরুল হক ভুঁইয়ার নেতৃত্বে ডিবি পুলিশের এসআই আবু হাসানের সমন্বয়ে একটি টিম প্রথম দফায় গত ১৩ মার্চ রাতে যশোরের অভয়নগর থানাধীন ভাঙ্গাগেট এলাকার মিলন হোসেন ও আবু বক্কারকে গ্রেফতার করেন। তাদের স্বীকারোক্তিতে ১৪ মার্চ বাঘারপাড়ার চতুরবাড়িয়া বাজার থেকে ৪৩৫ বস্তা ইউরিয়া সার উদ্ধার করা হয়। এরপর গ্রেফতার ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদে আরও তথ্য বেরিয়ে আসে। সেই তথ্যে ১৬ মার্চ যশোরের শার্শার বাঁগআচড়া বাজার থেকে ৮০০ বস্তা, ১৭ মার্চ সদর উপজেলার পুলেরহাট বাজার থেকে আরও ৪৬০ বস্তা এবং ঝিনাইদহের বারোবাজার থেকে ৯২০ বস্তা সরকারি সার উদ্ধার করা হয়। সর্বশেষ বুধবার (১৯ মার্চ) মণিরামপুর উপজেলার জয়পুর গোপের বাজার থেকে আরও ৪০০ বস্তা উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতার করা হয় আরও একজনকে।
ডিবির অফিসার ইনচার্জ মনজুরুল হক ভুঁইয়া সাংবাদিকদের কাছে আরও বলেছেন, এ পর্যন্ত ৩ হাজার ১৫ বস্তা সার উদ্ধার করা হয়েছে। যার দাম ৪২ লাখ ২১ হাজার টাকা। তিনি বলেন, ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে আরও অনেক তথ্য পাওয়া গেছে। যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে।
সবুজদেশ/এসইউ