ঢাকা ১০:৪৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যানবাহন ও চালকের বিরুদ্ধে দ্বিগুণ মামলা

Reporter Name

নিরাপদ সড়কের দাবিতে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন এবং পুলিশের ট্রাফিক সপ্তাহ শুরুর পর ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন ও চালকের বিরুদ্ধে মামলার হার দ্বিগুণ হয়েছে। ঢাকা মহানগরে গতকাল মঙ্গলবার ১২ ঘণ্টায় মামলা হয়েছে ৩ হাজার ৯০৯টি। আগের দিন ২৪ ঘণ্টায় মামলা হয়েছিল ৭ হাজার ১০০। স্বাভাবিক সময়ে ২৪ ঘণ্টায় মামলা হতো দুই থেকে আড়াই হাজার।

চট্টগ্রাম নগরে ফিটনেসবিহীন এবং কাগজপত্র না থাকা গাড়ির বিরুদ্ধে রেকর্ডসংখ্যক মামলা হয়েছে। ১ থেকে ৬ আগস্ট পর্যন্ত ছয় দিনে ৫ হাজার ৬৭৩টি গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আটক করা হয় ৫৬৬টি গাড়ি। গতকাল আধা বেলায় মামলা হয়েছে আরও ৬৮৪টি গাড়ির বিরুদ্ধে। আটক করা হয় আরও ৬৫টি গাড়ি। চট্টগ্রাম নগরে গাড়ির বিরুদ্ধে এত মামলা আগে হয়নি বলে পুলিশের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

ঢাকা মহানগর ট্রাফিক পুলিশ ও বিভিন্ন বিভাগের সদস্যরা গতকাল সকাল থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ট্রাফিক কার্যক্রম পরিচালনা করেন। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্কাউট দলের সদস্যরাও এতে সহযোগিতা করেছেন। মহাখালী, কাকলী, উত্তরা, বিমানবন্দর, খিলক্ষেত, র‍্যাডিসন ব্লু হোটেলের সামনে ট্রাফিক কর্মকর্তা ও সার্জেন্টদের যানবাহন থামিয়ে কাগজপত্র পরীক্ষা করতে দেখা যায়। গুলশান-১,২, নতুন বাজার, বাড্ডা ও ভাটারাতেও এই কার্যক্রম চলেছে। এসব সড়কের পাশে বাস, কার, সিএনজিচালিত অটোরিকশা সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। দায়িত্ব পালনকারী ট্রাফিক কর্মকর্তারা বলেন, এসব গাড়ির কোনোটির ফিটনেস, কোনোটির চলাচলের অনুমতি (পারমিট), আবার কোনোটির রেজিস্ট্রেশন নেই।

ট্রাফিক সপ্তাহ উপলক্ষে হাউস বিল্ডিং বাসস্ট্যান্ডে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। এ সময় পথচারীদের জন্য ট্রাফিক সচেতনতামূলক প্রচারপত্র, স্টিকার বিতরণ করা হয়। ট্রাফিক সপ্তাহ চলবে ১১ আগস্ট পর্যন্ত।

রামপুরা ব্রিজ ও গুলশান এলাকায় ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরনের যানবাহনের নিবন্ধন, লাইসেন্স, ফিটনেস, বিমার কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ে বিশেষ অভিযান চালায় পুলিশ। সড়কে দুর্ঘটনা রোধে এসব এলাকায় ট্রাফিকের পক্ষ থেকে চালক, যাত্রী, পথচারীদের সড়ক ও যানবাহন চালানোর আইন মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়।

গুলশান ২ নম্বরে সড়কের পূর্ব অংশে মোটরসাইকেল ও ব্যক্তিগত গাড়ি থামিয়ে কাগজপত্র যাচাই করা হয়। এখানে চালকদের কাগজপত্র, মোটরসাইকেল আরোহীদের হেলমেট, আইন না মেনে উল্টো পথে গাড়ি চালানো, নির্ধারিত গতির চেয়ে বেশি গতিতে গাড়ি চালানো, মেয়াদোত্তীর্ণ নিবন্ধনপত্র পাওয়া যাওয়ায় অনেক চালককে ২০০ থেকে ৭০০ টাকা জরিমানা করা হয়।

মোটরসাইকেল আরোহী শাহীনুল সজীব বলেন, ‘আমার হেলমেট ছিল কিন্তু পেছনে বসা ব্যক্তির মাথায় হেলমেট না থাকায় ২০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।’ এই এলাকায় মোটরসাইকেল নিয়ে উল্টো পথে যাওয়ায় এক ব্যক্তিকে ৭০০ টাকা জরিমানা করা হয়।

গুলশান এলাকার ট্রাফিক সার্জেন্ট মোস্তাক আহমেদ বলেন, ট্রাফিক আইনের বিভিন্ন ধারায় আইন না মানা ব্যক্তিদের জরিমানা করা হচ্ছে। এটি একটি প্রাথমিক সতর্কতা। ট্রাফিক সপ্তাহ চলার পাশাপাশি সারা মাসেই এই কার্যক্রম চলবে।

মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ ও ফার্মগেট ট্রাফিক পুলিশ বক্স থেকে মাইকে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হয়েছে। দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা জানিয়েছেন, পুলিশের ট্রাফিক সপ্তাহ উপলক্ষে গত তিন দিন থেকে এমন প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্বরত এক সদস্য বলেন, রাস্তায় যানবাহনের সংখ্যা স্বাভাবিকের তুলনায় খুব কম। হাতে গোনা কিছু বাস চলছে। প্রতিটি বাসেরই কাগজপত্র পরীক্ষা করা হচ্ছে। অধিকাংশেরই কাগজপত্র ঠিক ছিল। সবচেয়ে বেশি মামলা হয়েছে মোটরসাইকেলের বিরুদ্ধে।

ট্রাফিক সপ্তাহ উপলক্ষে মিরপুরজুড়ে ট্রাফিক পুলিশের তৎপরতা দেখা গেছে। মতিঝিল শাপলা চত্বর এলাকায় সকাল থেকে বিকেল চারটার মধ্যে প্রায় ১০০ মামলা হয়। বেলা সাড়ে তিনটার দিকে শাপলা চত্বরের উত্তর দিকে সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে গাড়ি থামিয়ে কাগজপত্র পরীক্ষা করছিলেন মতিঝিল থানার সার্জেন্ট ইসমাইল হোসেনসহ চারজন পুলিশ সদস্য। ইসমাইল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, আগের তুলনায় মামলার সংখ্যা অনেক বেড়েছে।

চট্টগ্রামে ১৬টি মোড়ে তল্লাশিচৌকি
চট্টগ্রাম নগর পুলিশ গত সোমবার থেকে ট্রাফিক সপ্তাহ পালন শুরু করেছে। নগরের ১৬ থানার গুরুত্বপূর্ণ ১৬টি মোড়ে তল্লাশিচৌকি বসিয়েছে পুলিশ। ফলে নগরে যানবাহন চলাচলও কমে গেছে। কিন্তু তল্লাশিচৌকি এলাকায় যানজট দেখা গেছে।

গতকাল নগরের প্রবর্তক মোড়, টাইগারপাস, নিউমার্কেট ও সদরঘাট মোড় ঘুরে দেখা গেছে, যেসব গাড়ির কাগজপত্র হালনাগাদ ছিল না, সেগুলোর বিরুদ্ধে ট্রাফিক আইনে মামলা দেওয়া হয়। গতকাল প্রতিটি মোড়ে ট্রাফিক পুলিশকে সহায়তা করে পুলিশ লাইনের রিজার্ভ ফোর্সের ৪০০ সদস্য এবং রোভার স্কাউটের ১২০ শিক্ষার্থী।

ট্রাফিক বিভাগ আরও জানায়, নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের আগে নগরে গড়ে প্রতিদিন চার শ থেকে সাড়ে চার শ গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা নিত ট্রাফিক পুলিশ। ছাত্র আন্দোলনের কারণে গড়ে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে নয় শ গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এ ছাড়া ছয় দিনে গাড়ির বিরুদ্ধে জরিমানা থেকে আয় হয়েছে ১৬ লাখ ৫ হাজার টাকা।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আমেনা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ছাত্ররা পথ দেখিয়েছে। তাদের কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে ট্রাফিক পুলিশ সপ্তাহ পালন শুরু হয়। এ কারণে নগরে স্বাভাবিকের দ্বিগুণ বেশি গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ট্রাফিক সপ্তাহ শেষ হওয়ার পরও অভিযান চলবে।

বিআরটিএর চিত্র
ট্রাফিক সপ্তাহ ও শিক্ষার্থী আন্দোলনের কারণে চট্টগ্রাম বিআরটিএর কার্যালয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স সংগ্রহ ও গাড়ির কাগজপত্র হালনাগাদের হিড়িক পড়েছে। গতকাল চট্টগ্রাম বিআরটিএ কার্যালয়ে ৩৮৩টি গাড়ির ফিটনেস কাগজপত্র নবায়ন ও ৩৮৫ জন ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার জন্য আবেদন করেন। স্বাভাবিক সময়ে ২০০-২৫০ গাড়ির ফিটনেস নবায়ন এবং গড়ে ১০০ জন ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতেন।

বিআরটিএ চট্টগ্রাম কার্যালয়ের উপপরিচালক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ এ প্রসঙ্গে বলেন, গাড়ির মালিক ও চালকের মধ্যে সচেতনতা বাড়ছে বলে ফিটনেস হালনাগাদ করতে মালিকেরা আসছেন। চালকেরাও লাইসেন্স নিয়ে গাড়ি চালাতে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

About Author Information
আপডেট সময় : ০৩:৩০:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ অগাস্ট ২০১৮
১০৯০ Time View

যানবাহন ও চালকের বিরুদ্ধে দ্বিগুণ মামলা

আপডেট সময় : ০৩:৩০:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ অগাস্ট ২০১৮

নিরাপদ সড়কের দাবিতে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন এবং পুলিশের ট্রাফিক সপ্তাহ শুরুর পর ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন ও চালকের বিরুদ্ধে মামলার হার দ্বিগুণ হয়েছে। ঢাকা মহানগরে গতকাল মঙ্গলবার ১২ ঘণ্টায় মামলা হয়েছে ৩ হাজার ৯০৯টি। আগের দিন ২৪ ঘণ্টায় মামলা হয়েছিল ৭ হাজার ১০০। স্বাভাবিক সময়ে ২৪ ঘণ্টায় মামলা হতো দুই থেকে আড়াই হাজার।

চট্টগ্রাম নগরে ফিটনেসবিহীন এবং কাগজপত্র না থাকা গাড়ির বিরুদ্ধে রেকর্ডসংখ্যক মামলা হয়েছে। ১ থেকে ৬ আগস্ট পর্যন্ত ছয় দিনে ৫ হাজার ৬৭৩টি গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আটক করা হয় ৫৬৬টি গাড়ি। গতকাল আধা বেলায় মামলা হয়েছে আরও ৬৮৪টি গাড়ির বিরুদ্ধে। আটক করা হয় আরও ৬৫টি গাড়ি। চট্টগ্রাম নগরে গাড়ির বিরুদ্ধে এত মামলা আগে হয়নি বলে পুলিশের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

ঢাকা মহানগর ট্রাফিক পুলিশ ও বিভিন্ন বিভাগের সদস্যরা গতকাল সকাল থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ট্রাফিক কার্যক্রম পরিচালনা করেন। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্কাউট দলের সদস্যরাও এতে সহযোগিতা করেছেন। মহাখালী, কাকলী, উত্তরা, বিমানবন্দর, খিলক্ষেত, র‍্যাডিসন ব্লু হোটেলের সামনে ট্রাফিক কর্মকর্তা ও সার্জেন্টদের যানবাহন থামিয়ে কাগজপত্র পরীক্ষা করতে দেখা যায়। গুলশান-১,২, নতুন বাজার, বাড্ডা ও ভাটারাতেও এই কার্যক্রম চলেছে। এসব সড়কের পাশে বাস, কার, সিএনজিচালিত অটোরিকশা সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। দায়িত্ব পালনকারী ট্রাফিক কর্মকর্তারা বলেন, এসব গাড়ির কোনোটির ফিটনেস, কোনোটির চলাচলের অনুমতি (পারমিট), আবার কোনোটির রেজিস্ট্রেশন নেই।

ট্রাফিক সপ্তাহ উপলক্ষে হাউস বিল্ডিং বাসস্ট্যান্ডে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। এ সময় পথচারীদের জন্য ট্রাফিক সচেতনতামূলক প্রচারপত্র, স্টিকার বিতরণ করা হয়। ট্রাফিক সপ্তাহ চলবে ১১ আগস্ট পর্যন্ত।

রামপুরা ব্রিজ ও গুলশান এলাকায় ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরনের যানবাহনের নিবন্ধন, লাইসেন্স, ফিটনেস, বিমার কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ে বিশেষ অভিযান চালায় পুলিশ। সড়কে দুর্ঘটনা রোধে এসব এলাকায় ট্রাফিকের পক্ষ থেকে চালক, যাত্রী, পথচারীদের সড়ক ও যানবাহন চালানোর আইন মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়।

গুলশান ২ নম্বরে সড়কের পূর্ব অংশে মোটরসাইকেল ও ব্যক্তিগত গাড়ি থামিয়ে কাগজপত্র যাচাই করা হয়। এখানে চালকদের কাগজপত্র, মোটরসাইকেল আরোহীদের হেলমেট, আইন না মেনে উল্টো পথে গাড়ি চালানো, নির্ধারিত গতির চেয়ে বেশি গতিতে গাড়ি চালানো, মেয়াদোত্তীর্ণ নিবন্ধনপত্র পাওয়া যাওয়ায় অনেক চালককে ২০০ থেকে ৭০০ টাকা জরিমানা করা হয়।

মোটরসাইকেল আরোহী শাহীনুল সজীব বলেন, ‘আমার হেলমেট ছিল কিন্তু পেছনে বসা ব্যক্তির মাথায় হেলমেট না থাকায় ২০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।’ এই এলাকায় মোটরসাইকেল নিয়ে উল্টো পথে যাওয়ায় এক ব্যক্তিকে ৭০০ টাকা জরিমানা করা হয়।

গুলশান এলাকার ট্রাফিক সার্জেন্ট মোস্তাক আহমেদ বলেন, ট্রাফিক আইনের বিভিন্ন ধারায় আইন না মানা ব্যক্তিদের জরিমানা করা হচ্ছে। এটি একটি প্রাথমিক সতর্কতা। ট্রাফিক সপ্তাহ চলার পাশাপাশি সারা মাসেই এই কার্যক্রম চলবে।

মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ ও ফার্মগেট ট্রাফিক পুলিশ বক্স থেকে মাইকে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হয়েছে। দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা জানিয়েছেন, পুলিশের ট্রাফিক সপ্তাহ উপলক্ষে গত তিন দিন থেকে এমন প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্বরত এক সদস্য বলেন, রাস্তায় যানবাহনের সংখ্যা স্বাভাবিকের তুলনায় খুব কম। হাতে গোনা কিছু বাস চলছে। প্রতিটি বাসেরই কাগজপত্র পরীক্ষা করা হচ্ছে। অধিকাংশেরই কাগজপত্র ঠিক ছিল। সবচেয়ে বেশি মামলা হয়েছে মোটরসাইকেলের বিরুদ্ধে।

ট্রাফিক সপ্তাহ উপলক্ষে মিরপুরজুড়ে ট্রাফিক পুলিশের তৎপরতা দেখা গেছে। মতিঝিল শাপলা চত্বর এলাকায় সকাল থেকে বিকেল চারটার মধ্যে প্রায় ১০০ মামলা হয়। বেলা সাড়ে তিনটার দিকে শাপলা চত্বরের উত্তর দিকে সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে গাড়ি থামিয়ে কাগজপত্র পরীক্ষা করছিলেন মতিঝিল থানার সার্জেন্ট ইসমাইল হোসেনসহ চারজন পুলিশ সদস্য। ইসমাইল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, আগের তুলনায় মামলার সংখ্যা অনেক বেড়েছে।

চট্টগ্রামে ১৬টি মোড়ে তল্লাশিচৌকি
চট্টগ্রাম নগর পুলিশ গত সোমবার থেকে ট্রাফিক সপ্তাহ পালন শুরু করেছে। নগরের ১৬ থানার গুরুত্বপূর্ণ ১৬টি মোড়ে তল্লাশিচৌকি বসিয়েছে পুলিশ। ফলে নগরে যানবাহন চলাচলও কমে গেছে। কিন্তু তল্লাশিচৌকি এলাকায় যানজট দেখা গেছে।

গতকাল নগরের প্রবর্তক মোড়, টাইগারপাস, নিউমার্কেট ও সদরঘাট মোড় ঘুরে দেখা গেছে, যেসব গাড়ির কাগজপত্র হালনাগাদ ছিল না, সেগুলোর বিরুদ্ধে ট্রাফিক আইনে মামলা দেওয়া হয়। গতকাল প্রতিটি মোড়ে ট্রাফিক পুলিশকে সহায়তা করে পুলিশ লাইনের রিজার্ভ ফোর্সের ৪০০ সদস্য এবং রোভার স্কাউটের ১২০ শিক্ষার্থী।

ট্রাফিক বিভাগ আরও জানায়, নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের আগে নগরে গড়ে প্রতিদিন চার শ থেকে সাড়ে চার শ গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা নিত ট্রাফিক পুলিশ। ছাত্র আন্দোলনের কারণে গড়ে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে নয় শ গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এ ছাড়া ছয় দিনে গাড়ির বিরুদ্ধে জরিমানা থেকে আয় হয়েছে ১৬ লাখ ৫ হাজার টাকা।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আমেনা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ছাত্ররা পথ দেখিয়েছে। তাদের কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে ট্রাফিক পুলিশ সপ্তাহ পালন শুরু হয়। এ কারণে নগরে স্বাভাবিকের দ্বিগুণ বেশি গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ট্রাফিক সপ্তাহ শেষ হওয়ার পরও অভিযান চলবে।

বিআরটিএর চিত্র
ট্রাফিক সপ্তাহ ও শিক্ষার্থী আন্দোলনের কারণে চট্টগ্রাম বিআরটিএর কার্যালয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স সংগ্রহ ও গাড়ির কাগজপত্র হালনাগাদের হিড়িক পড়েছে। গতকাল চট্টগ্রাম বিআরটিএ কার্যালয়ে ৩৮৩টি গাড়ির ফিটনেস কাগজপত্র নবায়ন ও ৩৮৫ জন ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার জন্য আবেদন করেন। স্বাভাবিক সময়ে ২০০-২৫০ গাড়ির ফিটনেস নবায়ন এবং গড়ে ১০০ জন ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতেন।

বিআরটিএ চট্টগ্রাম কার্যালয়ের উপপরিচালক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ এ প্রসঙ্গে বলেন, গাড়ির মালিক ও চালকের মধ্যে সচেতনতা বাড়ছে বলে ফিটনেস হালনাগাদ করতে মালিকেরা আসছেন। চালকেরাও লাইসেন্স নিয়ে গাড়ি চালাতে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।