খুলনা নগরীর পিকচার প্যালেস মোড়ে পুড়ে যাওয়া অস্থায়ী মার্কেট মালিকের সঙ্গে খুলনা মহানগর যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হুদা সাগরের টাকা দাবির একটি অডিও রেকর্ড ভাইরাল হয়েছে।
ভাইরাল হওয়া ওই অডিওতে প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়ার কমিটমেন্ট না রাখায় মার্কেট মালিককে ধমকাতে শোনা গেছে।
এর আগে গত ১৯ মার্চ আগুনে খুলনা নগরীর পিকচার প্যালেস সুপার মার্কেটটি পুড়ে যায়। মার্কেট মালিকের সঙ্গে খুলনা মহানগর যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হুদা সাগরের ফোনালাপটি কয়েক দিন আগের বলে ধারণা করা হচ্ছে।
১ মিনিট ৫৪ সেকেন্ডের ওই অডিওতে ফোনালাপের শুরুতে মার্কেট মালিক রাসেল মিয়াকে উদ্দেশ্য করে সাগর বলছেন, ‘তুমি আমার সঙ্গে যোগাযোগ করছো না, এটা কি ঠিক হচ্ছে তোমার?
উত্তরে ব্যবসায়ী বলছেন, ‘ভাই, আমি আছি খুব বিপদে।
তখন সাগর বলেন, ‘তুমি আমারে বলছো টাকা দিয়ে যাবা, তুমি পাঁচ মাসেও আমার সঙ্গে যোগাযোগই করলে না। এটা তোমার কাছে আমি প্রত্যাশা করি?
এর জবাবে ব্যবসায়ী বলেন, ‘ভাই টাকা ইনকাম করাই এখন কঠিন হয়ে গেছে।
এ কথা শুনে সাগর বলেন, ‘কেন ইনকাম কঠিন হয়ে গেল কেন? তুমি আমারে প্রথমে বললা ৫০ হাজার করে দিবা পিকচার প্যালেস থেকে। সেদিন বললা না ভাই ৩০ হাজার করে দিব। একটা টাকাও দিলা না। তুমি তো মেলাটেলা করতেছো।
তখন ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমি মেলা করছি না। মন্টুর মেলায় কয়েকটি স্টল দিয়েছি।’ এরপর আরও কিছু কথা হয় দু’জনের মধ্যে।
শেষে সাগর বলেন, ‘যাই হোক তুমি আমার সঙ্গে যে কমিটমেন্ট করেছো সেটা কি রাখবা, না রাখবা না? সেটা বললেই হয়ে যায়।
এরপর ব্যবসায়ী বলেন, ‘এখন পিকচার প্যালেসের যে অবস্থা, আছি খুব বিপদে। দোকানদারদের বেচাকেনা কম। টাকা পয়সা ঠিকমতো দিতে পারছে না। আমিও আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারতেছি না।
ব্যবসায়ীর বক্তব্য শেষে কিছুটা সময় চুপ করে রূঢ় কণ্ঠে সাগরকে বলেন, ‘আচ্ছা ঠিক আছে’।
এর আগে গত ১৯ মার্চ ভোরে আগুনে অস্থায়ী ওই মার্কেটের ৪৪টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এতে নিঃস্ব হয়ে পড়েন ব্যবসায়ী পরিবারগুলো।
স্থানীয়রা জানান, ভেঙে ফেলা পিকচার প্যালেস সিনেমা হলের জায়গা ভাড়া নিয়ে একবছর আগে অস্থায়ী মার্কেট তৈরি করেন ব্যবসায়ী রাসেল মিয়া। তিনি শহরে মেলা রাসেল নামে পরিচিত।
নাজমুল হুদা সাগর খুলনা মহানগর যুবদলের সদ্য সাবেক কমিটির সাধারণ সম্পাদক। যুবদলের এই কমিটির সভাপতি মাহাবুব হাসান পিয়ারু গত ২৩ মার্চ রাতে মুক্তিপণের দাবিতে এক ব্যবসায়ীকে অপহরণ মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে রয়েছেন।
অডিও রেকর্ডের বিষয়ে জানতে চাইলে নাজমুল হুদা সাগর এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করবেন না বলে জানান।
এ বিষয়ে ব্যবসায়ী রাসেল মিয়া বলেন, ‘আমি শেষ হয়ে গেছি। পথে বসে গেছি। আমারে আর শেষ কইরেন না’।
সবুজদেশ/এসইউ