ঢাকা ০৬:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ০১ জানুয়ারী ২০২৫, ১৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যুবলীগ নেতা খালেদের উত্থান যেভাবে

Reporter Name

ঢাকাঃ

ঢাকায় মতিঝিলের ফকিরাপুলে ইয়ংমেন্স ক্লাবে অবৈধভাবে জুয়ার আসর চালানোর অভিযোগে যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

বুধবার সন্ধ্যায় গুলশান-২ এর ৫৯ নম্বর রোডের ৫ নম্বর বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

এর আগে বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে খালেদের মালিকানাধীন রাজধানীর ফকিরাপুলের ইয়ংমেন্স ক্লাবেও অভিযান চালানো হয়।

যুবলীগ নেতা খালেদের উত্থান যেভাবে: 

২০১৩ সালের ২৯ জুলাই রাতে ঢাকার গুলশানে শপার্স ওয়ার্ল্ড নামে একটি বিপণী বিতানের সামনে ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজুল হক খান মিল্কিকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

শপার্স ওয়ার্ল্ডের ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরায় ধারণ করা ভিডিওচিত্র দেখে এক সময়ের সহযোগী যুবলীগ নেতা জাহিদ সিদ্দিকী তারেক এবং তার ভাড়াটে খুনিরাই মিল্কিকে হত্যা করে বলে জানায় পুলিশ। ঘটনার পর র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার ও পরে ‘ক্রসফায়ারে’ নিহত জাহিদ সিদ্দিকী তারেক।

মিল্কি ও তারেকের মৃত্যুর পর তাদের এলাকা নিজের নিয়ন্ত্রণে নেন খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া। ২০১২ সালের পর মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের ছত্রছায়ায় ঢাকার একটি অংশের নিয়ন্ত্রণ আসে খালেদের হাতে। নিজের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে সর্বোচ্চ শক্তি ব্যবহার করেন তিনি।

‘ভূঁইয়া অ্যান্ড ভূঁইয়া’ নামের প্রতিষ্ঠান দিয়ে নিজের কার্যক্রম পরিচালনা করতে শুরু করেন খালেদ। তার নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকাগুলোতে (মতিঝিল, শাহজাহানপুর, রামপুরা, সবুজবাগ, খিলগাঁও ও মুগদা) থাকা সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করেন খালিদ।

রাজউক, রেলভবন, ক্রীড়া পরিষদ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, যুব ভবন, কৃষি ভবন, ওয়াসার ফকিরাপুল জোনসহ এসব এলাকার বেশিরভাগ টেন্ডার দখলে নিতে থাকেন যুবলীগের এই নেতা।

শুধু তাই নয় মতিঝিল, ফকিরাপুল এলাকার কমপক্ষে ১৭টি ক্লাব নিয়ন্ত্রণ করেন খালেদ। এর মধ্যে ১৬টি ক্লাব নিজের লোকজন দিয়ে আর ফকিরাপুল ইয়াম্যান্স নামের ক্লাবটি সরাসরি তিনি পরিচালনা করেন। প্রতিটি ক্লাব থেকে প্রতিদিন কমপক্ষে এক লাখ টাকা নেন তিনি। এসব ক্লাবে সকাল ১০টা থেকে ভোর পর্যন্ত ক্যাসিনো (জুয়ার আসর) বসে।

এছাড়া খিলগাঁও-শাহজাহানপুর রুটে চলাচলকারী লেগুনা ও গণপরিবহন থেকে নিয়মিত টাকা দিতে হয় খালেদকে। প্রতি কোরবানির ঈদে শাহজাহানপুর কলোনি মাঠ, মেরাদিয়া ও কমলাপুর পশুর হাট নিয়ন্ত্রণ করেন তিনি।

খিলগাঁও রেল ক্রসিংয়ে রাতে একটি মাছের হাট বসে। সেখান থেকে মাসে কমপক্ষে এক কোটি টাকা আদায় করেন যুবলীগের এই নেতা। একইভাবে খিলগাঁও কাঁচাবাজারের সভাপতির পদটিও দীর্ঘদিন তিনি ধরে রেখেছেন। শাহজাহানপুরে রেলওয়ের জমি দখল করে দোকান ও ক্লাব নির্মাণ করেছেন।

About Author Information
আপডেট সময় : ০৯:৪৫:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯
৪৭৪ Time View

যুবলীগ নেতা খালেদের উত্থান যেভাবে

আপডেট সময় : ০৯:৪৫:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯

ঢাকাঃ

ঢাকায় মতিঝিলের ফকিরাপুলে ইয়ংমেন্স ক্লাবে অবৈধভাবে জুয়ার আসর চালানোর অভিযোগে যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

বুধবার সন্ধ্যায় গুলশান-২ এর ৫৯ নম্বর রোডের ৫ নম্বর বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

এর আগে বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে খালেদের মালিকানাধীন রাজধানীর ফকিরাপুলের ইয়ংমেন্স ক্লাবেও অভিযান চালানো হয়।

যুবলীগ নেতা খালেদের উত্থান যেভাবে: 

২০১৩ সালের ২৯ জুলাই রাতে ঢাকার গুলশানে শপার্স ওয়ার্ল্ড নামে একটি বিপণী বিতানের সামনে ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজুল হক খান মিল্কিকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

শপার্স ওয়ার্ল্ডের ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরায় ধারণ করা ভিডিওচিত্র দেখে এক সময়ের সহযোগী যুবলীগ নেতা জাহিদ সিদ্দিকী তারেক এবং তার ভাড়াটে খুনিরাই মিল্কিকে হত্যা করে বলে জানায় পুলিশ। ঘটনার পর র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার ও পরে ‘ক্রসফায়ারে’ নিহত জাহিদ সিদ্দিকী তারেক।

মিল্কি ও তারেকের মৃত্যুর পর তাদের এলাকা নিজের নিয়ন্ত্রণে নেন খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া। ২০১২ সালের পর মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের ছত্রছায়ায় ঢাকার একটি অংশের নিয়ন্ত্রণ আসে খালেদের হাতে। নিজের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে সর্বোচ্চ শক্তি ব্যবহার করেন তিনি।

‘ভূঁইয়া অ্যান্ড ভূঁইয়া’ নামের প্রতিষ্ঠান দিয়ে নিজের কার্যক্রম পরিচালনা করতে শুরু করেন খালেদ। তার নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকাগুলোতে (মতিঝিল, শাহজাহানপুর, রামপুরা, সবুজবাগ, খিলগাঁও ও মুগদা) থাকা সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করেন খালিদ।

রাজউক, রেলভবন, ক্রীড়া পরিষদ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, যুব ভবন, কৃষি ভবন, ওয়াসার ফকিরাপুল জোনসহ এসব এলাকার বেশিরভাগ টেন্ডার দখলে নিতে থাকেন যুবলীগের এই নেতা।

শুধু তাই নয় মতিঝিল, ফকিরাপুল এলাকার কমপক্ষে ১৭টি ক্লাব নিয়ন্ত্রণ করেন খালেদ। এর মধ্যে ১৬টি ক্লাব নিজের লোকজন দিয়ে আর ফকিরাপুল ইয়াম্যান্স নামের ক্লাবটি সরাসরি তিনি পরিচালনা করেন। প্রতিটি ক্লাব থেকে প্রতিদিন কমপক্ষে এক লাখ টাকা নেন তিনি। এসব ক্লাবে সকাল ১০টা থেকে ভোর পর্যন্ত ক্যাসিনো (জুয়ার আসর) বসে।

এছাড়া খিলগাঁও-শাহজাহানপুর রুটে চলাচলকারী লেগুনা ও গণপরিবহন থেকে নিয়মিত টাকা দিতে হয় খালেদকে। প্রতি কোরবানির ঈদে শাহজাহানপুর কলোনি মাঠ, মেরাদিয়া ও কমলাপুর পশুর হাট নিয়ন্ত্রণ করেন তিনি।

খিলগাঁও রেল ক্রসিংয়ে রাতে একটি মাছের হাট বসে। সেখান থেকে মাসে কমপক্ষে এক কোটি টাকা আদায় করেন যুবলীগের এই নেতা। একইভাবে খিলগাঁও কাঁচাবাজারের সভাপতির পদটিও দীর্ঘদিন তিনি ধরে রেখেছেন। শাহজাহানপুরে রেলওয়ের জমি দখল করে দোকান ও ক্লাব নির্মাণ করেছেন।