সোহেল রশীদ, রংপুরঃ

দীর্ঘ দিন ধরে উত্তরের বিভাগীয় নগরী রংপুরে বিএনপি’র রাজনীতিতে কোন্দল-গ্রুপিং চলছে। যা সাম্প্রতিক সময়ে আরও চরম আকার ধারণ করেছে। দলের কেন্দ্রীয় কিছু নেতার ইন্ধনে এমনটা হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। ফলে একদিকে মামলা-হয়রানী ভয়, অন্যদিকে দলের ভিতর কোন্দল এনিয়ে বিপাকে পড়েছে বিএনপির তৃণমূল। আর ঝিমিয়ে পড়েছে দলীয় কার্যক্রম।

জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতার বাহিরে রয়েছে বিএনপি। রাজপথের আন্দোলনেও তেমন একটা সুবিধা করতে পারেনি দলটি। অনেকেই মামলা-হয়রানীর শিকার হয়েছে। কেউ কেউ জেলও খেটেছেন। এমন পরিস্থিতিতে অনেকেই রাজনীতি থেকে বিদায় নিয়েছেন। কেউবা আবার নিবর থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। ফলে সারাদেশে ঝিমিয়ে পড়েছে বিএনপির দলীয় কার্যক্রম। এর ব্যতিক্রম ঘটেনি রংপুরেও ।

দলীয় সুত্র জানায়, ২০১৭ সালে রংপুর জেলা ও মহানগরের কমিটি গঠন করা হয় দুই বছরের জন্য। কমিটির মেয়াদ দেড় বছর অতিবাহিত হওয়ার পরও নতুন করে কমিটি গঠনে নেই কোনো তৎপরতা। এছাড়া দলের মহানগর কমিটির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর হোসেন মৃত্যু বরণ করার এক বছর অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত কাউকেই সভাপতির পদে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।

তৃণমূলের নেতাকর্মীদের অভিযোগ, রংপুর জেলা ও মহানগরের দুই একজন নেতা দলীয় কর্মীদের খোঁজখবর নিলেও উপজেলা পর্যায়ে নেতারা কর্মীদের দেখেও না দেখার অভিনয় করেন। মামলা-হয়রানীর শিকার নেতাকর্মীদের আইনীসহ আর্থিক সহায়তাও করেননি। এর ফলে অনেক কর্মীরা বলছেন, বিএনপি করাই এখন তাদের কাছে অপরাধ।

তৃণমুলের অভিযোগ রয়েছে, বিএনপির কেন্দ্রীয় দুই নেতার কারণে রংপুর জেলা ও মহানগর বিএনপিরতে পুর্নাঙ্গ কমিটি গঠন করা যাচ্ছে না। কমিটিতে যারা আছেন তাদের বেশিরভাগ এ দুই নেতার আশীর্বাদ পুষ্ট। দলীয় কর্মসূচিসহ সভা-সমাবেশে কর্মী সমর্থকদের জন্য টাকা খরচ করার ক্ষেত্রে নেতাদের কৃপণতায় দলটিকে রংপুরে আরো পিছিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ কর্মীদের। তাছাড়া সাম্প্রতিক সময়ের দলের মধ্যে গ্রুপিং-কোন্দলের কারণে বিএনপির কার্যক্রম ঝিমিয়ে পড়েছে।

রাজনীতিবিমুখ হওয়া নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, রংপুর মহানগর ও জেলার কয়েকজন নেতা ক্ষমতা ধরে রাখার কারণে স্থানীয় বিএনপির রাজনীতি এখন হারিয়ে যেতে বসেছে।

রংপুর মহানগরের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপি নেতা হারুন, ১৪ নং ওয়ার্ডের মিঠসহ বিএনপি ও অঙ্গ দলের বেশ কয়েকজন তৃণমুলের কর্মী জানান, নেতাদের সামনে পড়লে খোঁজ নেন। আমরা কীভাবে চলছি তার খবর কেউ নেন না। নেতাদের কারণে কর্মীরা হতাশ। আমরা তাদের কাছে টাকা চাই না। কর্মী সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব গড়ে তুলতে হবে। অন্যথায় বিএনপিকে আগামীতে খুঁজে পাওয়া যাবে না।

রংপুর মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মিজু বলেন, প্রতিনিয়ত দলের নেতাকর্মীদের খোঁজ-খবর নেয়া হয়। কেন্দ্রীয় নেতাদের বিষয়গুলো জানানো হয়েছে।

রংপুর জেলা বিএনপির সাইফুল ইসলাম এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি ব্যক্তিগত ভাবে বিএনপি ও অঙ্গ দলের নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের সাথে সব সময় যোগাযোগ করে যাচ্ছি। করোনা ও বন্যায় আসহায় দুস্ত মানুষের পাশে দাড়িয়েছি। খাদ্যসহ বিভিন্ন ধরণের সহযোগিতা করেছি। যা অব্যাহত রয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here