ঢাকা ০৫:৫২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০২ অক্টোবর ২০২৫, ১৬ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
খুলনা বিভাগের ৮টি আসন-

রাজনীতিতে সক্রিয় বিএনপির মরহুম নেতাদের স্ত্রী-সন্তানরা

  • সবুজদেশ ডেস্ক:
  • Update Time : ১২:২৪:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৪৭৬ বার পড়া হয়েছে।

 

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের মৃত্যুর পর রাজনীতিতে সক্রিয় আছেন তার স্ত্রী অধ্যাপিকা নার্গিস বেগম। আর ছেলে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বাবার জীবদ্দশায়ই রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। মা-ছেলে দুজনই নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে চলেছেন। দলের হাইকমান্ড তাদের কাজের মূল্যায়ন করছেন। বর্তমানে অধ্যাপিকা নার্গিস বেগম বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোর-৩ (সদর) আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। তিনি বিএনপির ‘একক প্রার্থী’ হিসাবে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে এ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী ছিলেন তিনি। শুধু নার্গিস বেগম কিংবা অনিন্দ্য ইসলাম অমিত নয়, খুলনা বিভাগে প্রয়াত বিএনপির এমপি, মন্ত্রী ও নেতার অন্তত ৯ জন স্ত্রী, সন্তান মাঠের রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছেন। অনেকেই ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে বাবা কিংবা স্বামীর আসনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী। পিতা ও স্বামীর ইমেজের পাশাপাশি মেধা, যোগত্যা ও দূরদর্শিতায় দলে নিজেদের অবস্থান দৃঢ় করেছেন তারা।

জানা যায়, যশোর-৩ (সদর) আসনের একাধিকবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম। এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। যশোর-২ (ঝিকরগাছা ও চৌগাছা) আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ঝিকরগাছা উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সাবিরা নাজমুল মুন্নী। তিনি জেলা বিএনপির সাবেক কোষাধ্যক্ষ প্রয়াত (গুম খুনের শিকার) নাজমুল ইসলামের সহধর্মিণী।

ঝিনাইদহ-২ (সদর-হরিণাকুণ্ডু) আসনে চারবারের সংসদ সদস্য ছিলেন ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি মসিউর রহমান। তার আসনে রাজনীতিতে সক্রিয় ছেলে ড্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. ইব্রাহিম রহমান বাবু। তিনিও মনোনয়ন প্রত্যাশী।

ঝিনাইদহ-৩ (মহেশপুর-কোটচাঁদপুর) আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী চারবারের সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম শহিদুল ইসলাম মাস্টারের ছেলে মহেশপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মেহেদী হাসান রনি। পিতার মৃত্যুর পর ছেলে এই আসনের রাজনীতিতে সক্রিয় আছেন।

ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ ও সদরের একাংশ) আসনে বিএনপির চারবারের সংসদ সদস্য এম শহীদুজ্জামান বেল্টু ২০২৪ সালের ২৯ অক্টোবর মারা যান। স্বামীর মৃত্যুর পর রাজনীতির মাঠে নেমেছেন সহধর্মিণী মুর্শিদা জামান বেল্টু। তিনি দলীয় নানা কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন। আগামী সংসদ নির্বাচনে তিনি বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী।

মাগুরা-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত মেজর জেনারেল (অব.) মজিদ উল হকের কন্যা ডা. সিমিন এ মজিদ মনজু। তিনি স্থানীয় রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছেন।

কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি রেজা আহাম্মদ বাচ্চু মোল্লা। তিনি ওই আসনের বিএনপির চারবারের এমপি ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি প্রয়াত আহসানুল হক মোল্লার ছেলে। চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক এমপি মরহুম সহিদুল ইসলাম বিশ্বাসের মেয়ে কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সদস্য মিলিমা বিশ্বাস মিলি।

জানতে চাইলে মহেশপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দবির উদ্দিন বলেন, শহিদুল মাস্টার ছিলেন মহেশপুর কোটচাঁদপুরের গণমানুষের নেতা। বারবার নির্বাচিত জনপ্রিয় জনপ্রতিনিধি। তার মৃত্যুর পর ছেলে মেহেদী হাসান রনি এই আসনে বিএনপির নেতাকর্মীদের আগলে রেখেছেন। সাধারণ মানুষ তাকে শহিদুল মাস্টারের ছায়া হিসাবেই দেখছেন। মহেশপুর পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন, শহিদুল মাস্টারের জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছেন তার ছেলে মেহেদী হাসান রনি। সাধারণ মানুষ বলছে, তারা শহিদুল মাস্টারকে ফিরে পেয়েছেন।

কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক মাহাবুবার রহমান বলেন, আমাদের দেশে উত্তরাধিকার সূত্রে অনেকেই নেতা হতে চান। কিন্তু নেতা হতে হলে শুধু উত্তরাধিকার থাকলে হয় না, প্রয়োজন হয় সামাজিক সম্মান, রাজনৈতিক অবস্থান ও অভিজ্ঞতা। শহিদুজ্জামান বেল্টুর স্ত্রী রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছেন। বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন। ৬ মাস আগেও তিনি রাজনীতির মাঠে ছিলেন না।’

জানতে চাইলে যশোর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন বলেন, প্রয়াত জননেতা তরিকুল ইসলাম ছিলেন গণমানুষের নেতা। তিনিও মানুষের জন্য রাজনীতি করেছেন। তার সেই আদর্শ ধারণ করে সহধর্মিণী অধ্যাপক নার্গিস বেগম ও ছেলে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত তাদের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও মেধায় রাজনীতিতে খুবই ভালো করছেন। অমিত খুলনা বিভাগে বিএনপিকে পুনর্গঠনে কাজ করছেন। তিনি আরও বলেন, প্রয়াত নেতার পরিবারের সদস্যরা রাজনীতিতে সক্রিয় ও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের প্রত্যেকেই নিজ নিজ যোগ্যতা ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে নেতা নির্বাচিত হয়েছেন।’

সবুজদেশ/এসএএস

Tag :
জনপ্রিয়

খুলনা বিভাগের ৮টি আসন-

রাজনীতিতে সক্রিয় বিএনপির মরহুম নেতাদের স্ত্রী-সন্তানরা

Update Time : ১২:২৪:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

 

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের মৃত্যুর পর রাজনীতিতে সক্রিয় আছেন তার স্ত্রী অধ্যাপিকা নার্গিস বেগম। আর ছেলে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বাবার জীবদ্দশায়ই রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। মা-ছেলে দুজনই নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে চলেছেন। দলের হাইকমান্ড তাদের কাজের মূল্যায়ন করছেন। বর্তমানে অধ্যাপিকা নার্গিস বেগম বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোর-৩ (সদর) আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। তিনি বিএনপির ‘একক প্রার্থী’ হিসাবে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে এ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী ছিলেন তিনি। শুধু নার্গিস বেগম কিংবা অনিন্দ্য ইসলাম অমিত নয়, খুলনা বিভাগে প্রয়াত বিএনপির এমপি, মন্ত্রী ও নেতার অন্তত ৯ জন স্ত্রী, সন্তান মাঠের রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছেন। অনেকেই ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে বাবা কিংবা স্বামীর আসনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী। পিতা ও স্বামীর ইমেজের পাশাপাশি মেধা, যোগত্যা ও দূরদর্শিতায় দলে নিজেদের অবস্থান দৃঢ় করেছেন তারা।

জানা যায়, যশোর-৩ (সদর) আসনের একাধিকবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম। এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। যশোর-২ (ঝিকরগাছা ও চৌগাছা) আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ঝিকরগাছা উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সাবিরা নাজমুল মুন্নী। তিনি জেলা বিএনপির সাবেক কোষাধ্যক্ষ প্রয়াত (গুম খুনের শিকার) নাজমুল ইসলামের সহধর্মিণী।

ঝিনাইদহ-২ (সদর-হরিণাকুণ্ডু) আসনে চারবারের সংসদ সদস্য ছিলেন ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি মসিউর রহমান। তার আসনে রাজনীতিতে সক্রিয় ছেলে ড্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. ইব্রাহিম রহমান বাবু। তিনিও মনোনয়ন প্রত্যাশী।

ঝিনাইদহ-৩ (মহেশপুর-কোটচাঁদপুর) আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী চারবারের সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম শহিদুল ইসলাম মাস্টারের ছেলে মহেশপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মেহেদী হাসান রনি। পিতার মৃত্যুর পর ছেলে এই আসনের রাজনীতিতে সক্রিয় আছেন।

ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ ও সদরের একাংশ) আসনে বিএনপির চারবারের সংসদ সদস্য এম শহীদুজ্জামান বেল্টু ২০২৪ সালের ২৯ অক্টোবর মারা যান। স্বামীর মৃত্যুর পর রাজনীতির মাঠে নেমেছেন সহধর্মিণী মুর্শিদা জামান বেল্টু। তিনি দলীয় নানা কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন। আগামী সংসদ নির্বাচনে তিনি বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী।

মাগুরা-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত মেজর জেনারেল (অব.) মজিদ উল হকের কন্যা ডা. সিমিন এ মজিদ মনজু। তিনি স্থানীয় রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছেন।

কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি রেজা আহাম্মদ বাচ্চু মোল্লা। তিনি ওই আসনের বিএনপির চারবারের এমপি ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি প্রয়াত আহসানুল হক মোল্লার ছেলে। চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক এমপি মরহুম সহিদুল ইসলাম বিশ্বাসের মেয়ে কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সদস্য মিলিমা বিশ্বাস মিলি।

জানতে চাইলে মহেশপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দবির উদ্দিন বলেন, শহিদুল মাস্টার ছিলেন মহেশপুর কোটচাঁদপুরের গণমানুষের নেতা। বারবার নির্বাচিত জনপ্রিয় জনপ্রতিনিধি। তার মৃত্যুর পর ছেলে মেহেদী হাসান রনি এই আসনে বিএনপির নেতাকর্মীদের আগলে রেখেছেন। সাধারণ মানুষ তাকে শহিদুল মাস্টারের ছায়া হিসাবেই দেখছেন। মহেশপুর পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন, শহিদুল মাস্টারের জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছেন তার ছেলে মেহেদী হাসান রনি। সাধারণ মানুষ বলছে, তারা শহিদুল মাস্টারকে ফিরে পেয়েছেন।

কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক মাহাবুবার রহমান বলেন, আমাদের দেশে উত্তরাধিকার সূত্রে অনেকেই নেতা হতে চান। কিন্তু নেতা হতে হলে শুধু উত্তরাধিকার থাকলে হয় না, প্রয়োজন হয় সামাজিক সম্মান, রাজনৈতিক অবস্থান ও অভিজ্ঞতা। শহিদুজ্জামান বেল্টুর স্ত্রী রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছেন। বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন। ৬ মাস আগেও তিনি রাজনীতির মাঠে ছিলেন না।’

জানতে চাইলে যশোর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন বলেন, প্রয়াত জননেতা তরিকুল ইসলাম ছিলেন গণমানুষের নেতা। তিনিও মানুষের জন্য রাজনীতি করেছেন। তার সেই আদর্শ ধারণ করে সহধর্মিণী অধ্যাপক নার্গিস বেগম ও ছেলে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত তাদের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও মেধায় রাজনীতিতে খুবই ভালো করছেন। অমিত খুলনা বিভাগে বিএনপিকে পুনর্গঠনে কাজ করছেন। তিনি আরও বলেন, প্রয়াত নেতার পরিবারের সদস্যরা রাজনীতিতে সক্রিয় ও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের প্রত্যেকেই নিজ নিজ যোগ্যতা ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে নেতা নির্বাচিত হয়েছেন।’

সবুজদেশ/এসএএস