রাতে নিরাপত্তাহীন হয়ে উঠেছে ঝিনাইদহ জেলায় অবস্থিত কোটচাঁদপুরসহ ৫ রেলওয়ে স্টেশন গুলো
সবুজদেশ ডেক্সঃ রাতে নিরাপত্তাহীন হয়ে উঠেছে ঝিনাইদহ জেলায় অবস্থিত কোটচাঁদপুরসহ ৫ রেলওয়ে স্টেশন গুলো। দিনে স্টেশন গুলোতে যাত্রীর ভিড় থাকলেও রাতে সেখানে একেবারই যাত্রী শূন্য হয়ে পড়েছে। নিরাপত্তার জন্য কোন সময়ই টহল নেই জিআরপি পুলিশের । ফলে রেলওয়ে যাতায়াতকারী যাত্রীরা ভুগছেন চরম নিরাপত্তাহীনতায়, সেই সাথে চুরি-ছিনতাইয়ের মত ঘটনা যেমন ঘটছে তেমনি ঘটছে নারী ধর্ষনের ঘটনা। জেলার কোটচাঁদপুরসহ বিভিন্ন রেল স্টেশনে দিনের বেলায় ঢাকা, খুলনা, রাজশাহীসহ বিভিন্ন রুটের যাত্রীদের ভীড় থাকলেও রাতে প্রায় যাত্রী শূন্য হয়ে পড়ে এসব স্টেশন। সে কারনে মাঝে-মধ্যেই যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা পয়সা, মোবাইল কিংবা জিনিসপত্র ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। সেই সাথে স্টেশনগুলোর প্লাটফর্ম সহ আশ পাশের ঝোপ-ঝাড়ে হরহামেশাই চলে মাদকের আড্ডা। এমনকি নিরাপত্তার অভাবে নারী ধর্ষনের মত ঘটনাও ঘটছে এসব রেল স্টেশনগুলোতে। ২০১৭ সালের ৫ মে রাতে ঢাকায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে কোটচাঁদপুর রেল স্টেশনে ট্রেনের অপেক্ষায় থাকা দুই নারী ধর্ষনের শিকার হয়। থানায় মামলার পর কোটচাঁদপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সে সময়কার সভাপতি শেখ শাহিন সহ ৩ জনকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করে থানা পুলিশ। সর্বশেষ চলতি বছরের ১০ সেপ্টেম্বর ভোর ৪ টার দিকে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেন থেকে কোটচাঁদপুর রেল স্টেশনে নামা এক যাত্রীকে ছুরিকাঘাত করে মোবাইল টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেয় ৩/৪ জনের একদল ছিনতাইকারী এবং ১৩ই সেপ্টেম্বর রাত ৮টার দিকে রেল কলনী পাড়ার সাইফুল ইসলাম সম্রাট নামে এক যুবককে চুরিকাঘাত করে বাড়ি ফেরার সময়। এতে করে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন রাতে চলাচলকারী যাত্রীরা। কারন স্টেশন গুলোতে নেই নিরাপত্তার কোন ব্যবস্থা, সেই সাথে নেই কোন জিআরপি পুলিশের টহল। ১৯৭৩ সালে জেলার মোবারকগঞ্জ স্টেশনে ৬ সদস্যের আরএনবি ক্যাম্প (রেলওয়ের নিরাপত্তায় নিয়োজিত বিশেষ বাহিনী) থাকলেও ২০০৫ সালের দিকে তা তুলে নেওয়া হয়। জেলায় কোটচাঁদপুর ও মোবারকগঞ্জসহ ৫টি স্টেশন রয়েছে। এই স্টেশন গুলোর উপর দিয়ে খুলনা-রাজশাহী-ঢাকা রুটে প্রতিদিন ১৮টি ট্রেন যাতায়াত করে। এগুলোর মধ্যে দিনে আপ এন্ড ডাউন মিলে ৯টি এবং রাতে ৩ টি ট্রেনের স্টপেজ আছে। দিনের বেলায় ট্রেনের যাত্রী থাকলেও রাতে একেবারেই যাত্রীশূন্য হয়ে পড়ে স্টেশনে। এ অবস্থায় স্টেশনগুলোতে নিরাপত্তা বাহিনী কিংবা জিআরপি পুলিশের টহলের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন যাত্রী ও স্থানীয়রা। তারা জানান, আরামদায়ক ও ভালো লাগে বলেই ট্রেনে যাতায়াত করি। আগে রাতে সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেন দাড়াতো, কিন্তু নিরাপত্তা জনিত কারনে এখন আর দাড়ায় না। কাজেই সরকারের কাছে এই এলাকার মানুষের দাবি স্টেশন গুলোতে যেন দ্রুতই জিআরপি পুলিশ মোতায়েন করা হয়। নিরাপত্তার শঙ্কার কথা স্বীকার করে কোটচাঁদপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার গোলাম মোস্তফা এই প্রতিবেদককে জানান, শুধুমাত্র নিরাপত্তা জনিত কারনে এখানে সীমান্ত এক্সপ্রেসের স্টপেজ দিতে বিলম্ব হচ্ছে। আমরা কর্তৃপক্ষকে বার বার জানাচ্ছি যাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে যেন দ্রুতই জিআরপি পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন করা হয়। এর আগেও অনেকবার স্টেশনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানোর ব্যাপারে রেলের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।